বিনোদন ডেস্ক : সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে অবশেষে নিজ প্যানেলের সভাপতি পদপ্রার্থী খুঁজে পেলেন আলোচিত চিত্রনায়িকা ও আসন্ন শিল্পী সমিতির নির্বাচনের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী নিপুণ আক্তার। এবার তিনি মাহমুদ কলিকে নিয়ে নির্বাচনে লড়বেন মিশা-ডিপজল’র বিপক্ষে।
রবিবার (১৭ মার্চ) সন্ধ্যায় এফডিসিতে ইফতারের পর আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে আনুষ্ঠানিকভাবে সভাপতি প্রার্থীর নাম ঘোষণা করেন নিপুণ। এ সময় তার পাশে বসে থাকতে দেখা গেছে অভিনেতা মাহমুদ কলিকে। সভাপতি পদের জন্য সবার কাছে সমর্থন ও দোয়া চেয়েছেন তিনি।
এর আগে মাহমুদ কলি শিল্পী সমিতির দুই দফা করে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। দীর্ঘদিন পর আবারও সমিতির নির্বাচনে দেখা যাবে তাকে।
এদিকে, বরেণ্য অভিনেতা ইলিয়াস কাঞ্চনের নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ার সিদ্ধান্তে বিপাকে পড়েন নিপুণ। হন্যে হয়ে সভাপতি খুঁজে বেড়ান তিনি। সেই তালিকায় ছিলেন শাকিব খান, ফেরদৗস আহমেদ, অনন্ত জলিল ও আহমেদ শরীফ। তারা সবাই নিপুণকে ফিরিয়ে দেন। এমন অবস্থায় নিপুণের পাশে এসে দাঁড়ালেন মাহমুদ কলি।
আগামী এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে (২৭ এপ্রিল) বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির দ্বি-বার্ষিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এ নির্বাচনে মিশা সওদাগর ও মনোয়ার হোসেন ডিপজল প্যানেল নির্বাচন করবেন।
চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সাধারণ সম্পাদক ও সভাপতি হিসেবে একাধিকবার শিল্পীদের নেতৃত্ব দিয়েছেন মাহমুদ কলি। ব্যক্তিগত ব্যস্ততার কারণে নব্বই দশকের মাঝামাঝিতে অভিনয় থেকে নিজেকে গুটিয়ে ব্যবসার জগতে পা রাখেন এই নায়ক। এর কিছুদিন পর চলচ্চিত্রের মানুষেরা তাকে আবার ডেকে আনেন নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য। তখন শিল্পী সমিতির হাল ধরেন তিনি। পরে অবশ্য নেতৃত্ব থেকেও সরে দাঁড়ান তিনি।
অভিনয় থেকে বিদায় নেওয়ার পর একসময় দলীয় রাজনীতি করতেন মাহমুদ কলি। যদিও এখন ওই প্রসঙ্গে কথা বলতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন না। ব্যক্তিগত জীবন নিয়েও তেমন খোলামেলা নন। একটু ঢেকে রাখতেই পছন্দ করেন তিনি।
মাহমুদ কলি বলেন, বর্তমানে ব্যবসা নিয়েই দিন কাটে তার। পারিবারিকভাবেই ব্যবসা ছিল তাদের। সেই ব্যবসার সঙ্গে নিজস্ব ব্যবসা যোগ করে এখন পুরোদস্তুর ব্যবসায়ী তিনি। তবে মাঝে মধ্যে ভক্তদের সঙ্গে দেখা যে সম্মান তিনি পান তাতে ভীষণ ভালো আনন্দিত হন তিনি।
তিনি বলেন, এটা পৃথিবীর নিয়ম যে আমরা আসব, কিছুদিন থাকব, একদিন চলে যাব। এ জন্য একে অপরকে জায়গা দিতে হয়। আমি চলচ্চিত্রে ছিলাম। হয়তো আমি একটু আগেই চলে এসেছি। আমি যত দিন ছিলাম, সুখী ছিলাম। যতটুকু করার ছিল, করেছি। চলচ্চিত্র শিল্পের মানুষের উপকার করার, দর্শকদের আনন্দ দেওয়ার চেষ্টা করেছি। আমি সন্তুষ্ট। পৃথিবীতে যে কটা দিন থাকা যায়, মানুষের উপকার করে, নিজের পরিবার, আশপাশের সবার জন্য যদি কাজ করা যায়, তবে ভালো। আমার জীবনে চাহিদা ছিল অল্প। যতটুক পেয়েছি, তাতে আমি সুখী।
মাহমুদ কলির গ্রামের বাড়ি ফেনীতে। অভিনেতার জন্ম, বেড়ে ওঠা সব ঢাকায়। বর্তমানে তার একমাত্র মেয়ে বিদেশে পড়াশোনা করছেন।
প্রসঙ্গত, মাহমুদ কলি ছিলেন আশি ও নব্বই দশকের নায়ক। তার পারিবারিক নাম মাহমুদুর রহমান উসমানী। তিনি বাংলাদেশের স্বনামধন্য চিত্রনির্মাতা আজিজুর রহমান বুলি’র ছোট ভাই। মূলত ভাইয়ের হাত ধরেই তিনি চলচ্চিত্রে আসেন। এরপর দেখিয়েছেন অভিনয়ের মুন্সিয়ানা।
মাহমুদ কলি’র প্রথম চলচ্চিত্র ‘মাস্তান’। তিনি এই চলচ্চিত্রে সহ-অভিনেতার ভূমিকায় ছিলেন। এরপর ১৯৭৮ সালে অশোক ঘোষ নির্মিত ‘তুফান’ চলচ্চিত্রে মূল নায়কের ভুমিকায় অভিনয় করেন। মাহমুদ কলি ৬১টি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন।
মাহমুদ কলি অভিনীত উল্লেখযোগ্য সিনেমাগুলো হলো- ‘মতিমহল’, ‘তুফান’, ‘বাদল’, ‘নওজোয়ান’, ‘নবাবজাদী’, ‘টক্কর’, ‘হিম্মতওয়ালী’, ‘গোলমাল’, ‘নাগমহল’, ‘নিশানা’, ‘ধনীগরীব’, ‘লাভ ইন সিঙ্গাপুর’, ‘দেশ বিদেশ’, ‘নেপালি মেয়ে’ প্রভৃতি।
আরও পড়ুন:
অবশেষে স্বামীর সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বিচ্ছেদ মাহির