তিমির বনিক, স্টাফ রিপোর্টার: সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে প্রেমিককে গাছে বেঁধে প্রেমিকাকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় ১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-৯।
মঙ্গলবার (১২ মার্চ) রাত ১০টার দিকে সুনামগঞ্জের ছাতক থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত মো. আব্দুল করিম (৩২) সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার কামারগাঁওয়ের ইদ্রিছ আলীর ছেলে। তিনি পেশায় একজন সিএনজি অটোরিকশাচালক।
জানা গেছে, গত শুক্রবার (৮ মার্চ) রাতে দোয়ারাবাজারের মান্নারগাঁও ইউনিয়নের জালালপুর গ্রামে প্রেমিক গাছে বেঁধে তার কিশোরী প্রেমিকাকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করা হয়। এ ঘটনায় অভিযুক্তদের চার জনের একজন স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা। ঘটনার পরদিন রাত সাড়ে ৯টার দিকে দোয়ারাবাজার থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়।
ভুক্তভোগী কিশোরীর পরিবার জানায়, রাজমিস্ত্রি নুরুজ্জামানের (২৩) সঙ্গে ১৬ বছরের ওই কিশোরীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিলো। বিয়ের জন্য শুক্রবার নুরুজ্জামানের সঙ্গে হবিগঞ্জের মাধবপুরের বাড়ি থেকে বের হয় তরুণী। এরপর সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারের কামারগাঁওয়ে নুরুজ্জামানের বন্ধু আফাজ উদ্দিনের বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা দেয় তারা। সন্ধ্যায় দোয়ারাবাজারের আজমপুর খেয়াঘাটে একই গ্রামের অটোরিকশাচালক আব্দুল করিমের সঙ্গে তাদের কথা হয়। আব্দুল করিম তাদেরকে আফাজ উদ্দিনের বাড়ি পৌঁছে দেবেন বলে জানান। কথামতো রাতে সেখান থেকে অটোরিকশায় তারা রওনা দেন।
মাঝ পথে গ্যাস নেই জানিয়ে অটোরিকশা থামিয়ে মান্নারগাঁও ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আফছর উদ্দিনকে (৩৫) ডেকে আনেন চালক। আফছর উদ্দিন প্রেমিক-প্রেমিকাকে চড়-থাপ্পড় দিয়ে অসামাজিক কাজের অভিযোগ তুলে পুলিশে সোপর্দ করার ভয় দেখান। এরপর পরিত্যক্ত একটি বাড়িতে নিয়ে প্রেমিককে গাছের সঙ্গে বেঁধে আফছর উদ্দিন, ফয়জুল বারী (৪৫), আব্দুল করিম (৩৫) ও জালালপুরের হায়াত আলীর ছেলে ছয়ফুল ইসলাম (৩০) ওই কিশোরীকে ধর্ষণ করেন।
এ ঘটনার পর একই অটোরিকশায় তুলে প্রেমিক ও প্রেমিকাকে কিছু দূর নিয়ে ফেলে দেয় অভিযুক্তরা। সেখানে একজনের বাড়িতে আশ্রয় নেন ভুক্তভোগীরা। পরদিন সকালে পুলিশের সহযোগিতা চান তারা।
এদিকে, ঘটনার পর ছায়াতদন্ত শুরু করে র্যাব-৯। ঘটনার ৪ দিন পর অটোরিকশা চালক আব্দুল করিম গ্রেপ্তার হলেও আওয়ামী লীগ নেতাসহ বাকি আসামিরা এখনো ধরাছোয়ার বাইরে। তবে তাদেরকেও ধরতে তৎপরতা জোরদার রেখেছে বলে জানিয়েছে র্যাব-৯।
আসামি আব্দুল করিমকে গ্রেপ্তারের পর সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।