অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত শেষ পর্যন্ত নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন দুই বছর পিছিয়ে দিয়েছেন। দাবি পূরণ হওয়ায় যথারীতি খুশি ব্যবসায়ীরা। তাঁরা মনে করেন, ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করে এনবিআরকে ভ্যাট আইনটি সংশোধন করতে হবে। অন্যথায় দুই বছর পর ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন করতে গেলে আবারও আপত্তি উঠবে। ভ্যাট আইন বিষয়ে কথা বলেন, বাংলাদেশ প্লাস্টিক দ্রব্য প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির সভাপতি (বিপিজিএমইএ) মো. জসিম উদ্দিন।
প্রশ্ন: ভ্যাট আইন পিছিয়ে দেওয়ায় প্লাস্টিক খাতের ব্যবসায়ীদের প্রতিক্রিয়া কী?
জসিম উদ্দিন: নিত্যপ্রয়োজনীয় প্লাস্টিকের তৈরি তৈজসপত্র, রিসাইক্লিং বা পুনরুৎপাদন খাত, প্লাস্টিক ও রাবারের তৈরি চপ্পল ও পাদুকা এবং প্লাস্টিকের খেলনার ওপর থেকে ভ্যাট অব্যাহতি দাবি করেছিলাম আমরা। কারণ এসব পণ্যে ভ্যাট আরোপ হলে নিত্যপ্রয়োজনীয় অনেক প্লাস্টিকসামগ্রীর দাম বেড়ে যেত। তবে শেষ পর্যন্ত নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন দুই বছরের জন্য পিছিয়ে দেওয়ায় ব্যবসায়ীরা খুশি হয়েছেন। স্বস্তির নিশ্বাস ফেলেছেন।
প্রশ্ন: ভবিষ্যতে আইনটি বাস্তবায়নে কী করতে হবে?
জসিম উদ্দিন: আইনটি পাস হওয়ার পর থেকেই অনেক কথাবার্তা হয়েছে। যেহেতু সরকার আইনটি বাস্তবায়ন পিছিয়ে দিয়েছে, তাই জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের উচিত হবে, আলাপ-আলোচনা করে আইনটিকে যৌক্তিক পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া। না হলে বর্তমানে যেসব কারণে বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না, ২০১৯ সালেও একই সমস্যা থাকবে। অবশ্য জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) যদি এফবিসিসিআইয়ের সাত দফা দাবি মেনে নেয়, তাহলেই অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যায়।
প্রশ্ন: ভ্যাটের হার নিয়ে কি আপনাদের আপত্তি আছে?
জসিম উদ্দিন: ভ্যাটের হার নিয়ে কোনো সমস্যা নেই। যারা ১৫ শতাংশ ভ্যাট দিতে পারছে, তারা কিন্তু দিয়ে যাচ্ছে। তবে যাদের এত দিন ভ্যাট ছিল না তাদের ওপর তো একবারে ১৫ শতাংশ হারে ভ্যাট আরোপ করা উচিত না। আমার মনে হয়, এখানে ভ্যাটের একটি হার না দিয়ে একাধিক হার করা দরকার। কমপক্ষে ২-৩টি হার হলে ভালো হয়।
প্রশ্ন: ব্যবসায়ীদের দাবির মুখে ভ্যাট আইন পিছিয়ে দিতে বাধ্য হলো সরকার। এ জন্য রাজস্ব কমতে পারে। সেটি কীভাবে পুষিয়ে নেবে সরকার?
জসিম উদ্দিন: সরকারের তেমন ক্ষতি হবে না। নতুন অর্থবছরের ভ্যাট আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ৯১ হাজার কোটি টাকা। চলতি অর্থবছর প্রায় ৬৮ হাজার কোটি টাকা ভ্যাট আদায় করবে এনবিআর। প্রতিবছরই ভ্যাট আদায়ে ২২-২৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি থাকে। তার মানে নতুন অর্থবছরে ১৪-১৮ হাজার কোটি টাকা ভ্যাট আদায় বাড়বে। তার মানে ভ্যাট আদায় ৪-৫ হাজার কোটি টাকা কম হবে। এটি বড় কোনো সমস্যা না।
দৈনিক প্রথম আলোর সৌজন্যে