অনন্যা আক্তার।। হিমেল বাতাস আর কুয়াশায় আচ্ছন্ন চারপাশ, দেশজুড়ে জেঁকে বসেছে তীব্র শীত। প্রবল এই শীতে তাই বাসাবাড়ি বা আসবাবপত্র, বিশেষত অ্যাপ্লায়েন্সের অতিরিক্ত যত্ন নেয়া প্রয়োজন। এই ধরনের তীব্র শীত রেফ্রিজারেটরের মতো হোম অ্যাপ্লায়েন্সের ক্ষতির কারণ হতে পারে; বিশেষ করে পচনশীল দ্রব্যের ক্ষেত্রে সবসময় সতেজভাব ধরে রাখা সম্ভব নাও হতে পারে। তাই, শীতের আগমন ও তাপমাত্রা কমে যাওয়ার সাথে সাথে কেবল ওয়্যারড্রোব ঠিকঠাক করলেই হবে না, রেফ্রিজারেটরেরও সঠিক যত্ন নিতে হবে।
শীতের এই মাস জুড়ে খাবারকে সতেজ ও সজীব রাখতে রেফ্রিজারেটরের ক্ষেত্রে করণীয় নিয়েই আজ আলোচনা করবো আমরা।
শীতের সবজির সঠিক সংরক্ষণ
পুরো শীতকাল জুড়েই দেখা যায় নানান শীতের সবজির সমারোহ। এ সময় আমাদের রান্নাঘরে থাকে ফুলকপি, মটরশুটি, ব্রকলি সহ নানাধরণের শাক। এই ঋতুতে গাজর, আলু বা বিটরুটের মতো কন্দজাতীয় সবজিও থাকে ভরপুর। শীতের এই নানারকম সবজি গরমকালের তুলনায় আলাদাভাবে সংরক্ষণ করা প্রয়োজন। এসময় নষ্ট হওয়ার আশঙ্কা কমিয়ে আনতে রেফ্রিজারেটরের ভেতরের আর্দ্রতা ও শুষ্কতার সঠিক ভারসাম্য নিশ্চিত করা অত্যন্ত জরুরি। আর এখানেই প্রয়োজন স্যামসাংয়ের টুইন টিএমএফ (টপ মাউন্ট ফ্রিজার) প্রযুক্তি। সাধারণ টিএমএফের ৩০ শতাংশের তুলনায় এই প্রযুক্তি সতেজ সবজি সংরক্ষণ করার উপযোগী পরিবেশ তৈরিতে ফ্রিজে ৭০ শতাংশ আর্দ্রতা তৈরি করে। এতে দুইটি আলাদা কুলিং সিস্টেম রয়েছে। ফ্রিজ ও ফ্রিজার কম্পার্টমেন্টে এই দু’টি আলাদা কুলিং সিস্টেম খাবারকে শুকিয়ে যাওয়া থেকে রক্ষা করে দীর্ঘসময় সতেজ রাখে। এটি দুইটি কম্পার্টমেন্টকে আলাদা ইভ্যাপোরেশনের সাহায্যে ঠান্ডা রাখে। ফলে, আলাদাভাবে গন্ধ মিশে যাওয়ার কোনো আশঙ্কা থাকে না।
সুস্বাদু ও গন্ধহীন ফ্রোজেন ফুড
রেফ্রিজারেটরের সর্বোচ্চ ব্যবহারে শীতকালই সবচেয়ে ভালো সময়। এ মরসুমে খুব সহজেই একসাথে অনেকখানি খাবার বানিয়ে ফ্রিজ করে রেখে পরে সময়মতো সকালে বা বিকেলে খাওয়া যায়। একবাটি গরম পায়া বা স্যুপ খেতে মন চাইলে কেবল রেফ্রিজারেটর থেকে বের করুন আর গরম করে নিন। এতে করে একদিকে যেমন সময় বাঁচবে, অন্যদিকে পছন্দের খাবারও যেকোনো সময় খাওয়ার সুযোগ থাকবে। স্টোরেজের ক্ষেত্রে পূর্ণ স্বাচ্ছন্দ্য নিশ্চিত করতে অনেক রেফ্রিজারেটর নির্মাতা প্রতিষ্ঠান নানারকম ‘কনভার্শন মোড’ নিয়ে এসেছে। এতে করে এখন ফ্রিজারকে খুব সহজেই ফ্রিজে রূপান্তর করা যাবে এবং ভিন্ন ভিন্ন ঋতু বা বিশেষ উপলক্ষে প্রয়োজনমতো সতেজ খাবার সংরক্ষণ করা যাবে। আবার এতে বিদ্যুৎসাশ্রয় করতে ‘অফ’ মোডও রয়েছে।
বেশি কেনাকাটা হয়ে গেছে, জায়গা নিয়ে ভাবনা নেই!
গুছিয়ে রাখার মাধ্যমেই রেফ্রিজারেটরে জায়গার সর্বোচ্চ ব্যবহার সম্ভব। মশলা, ডেইরি পণ্য বা সবজি যাই হোক, একইরকম পণ্য একসাথে রাখার চেষ্টা করুন। এতে করে কেবল প্রয়োজনের সময় জিনিস খুঁজে পাওয়াই সহজ হবে না, একইসাথে, রেফ্রিজারেটরের ভেতরের তাপমাত্রাও স্থির রাখা সম্ভব হবে। পাশাপাশি, দীর্ঘদিন কাজ করবে, কম শব্দ করবে ও বিদ্যুৎসাশ্রয় করবে এমন রেফ্রিজারেটর কেনার জন্য সাধারণত পরামর্শ দেয়া হয়। এক্ষেত্রে, ডিজিটাল ইনভার্টার টেকনোলোজি সম্পন্ন রেফ্রিজারেটরগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে কুলিং চাহিদার সাথে তালমিলিয়ে ৭টি লেভেল জুড়ে কম্প্রেসর স্পিড ঠিকঠাক রাখে। এতে করে বিদ্যুৎসাশ্রয় হয়, শব্দ কম হয়; আবার দীর্ঘমেয়াদী পারফরমেন্সে চাহিদাও পুরোপুরি পূরণ হয়।
উদ্ভাবন-নির্ভর প্রযুক্তিতেই তৈরি হয় টেকসই অ্যাপ্লায়েন্স। আর জায়গার সর্বোচ্চ ব্যবহার, স্বাচ্ছন্দ্যদায়ক স্টোরেজ সুবিধা, স্মার্ট ফিচারের ব্যবহার ও কার্যকারিতার ওপর নির্ভর করে রেফ্রিজারেটর যেন হয়ে ওঠে ব্যবহারকারীর পরিবারেরই একজন। তাই এই শীতে নিজের জন্য সঠিক রেফ্রিজারেটরটি পছন্দ করুন আর ঠান্ডায় খাবার সংরক্ষণ করা নিয়ে নিশ্চিন্তে থাকুন।