আন্তর্জাতিক ডেস্ক : আফ্রিকার দেশ বুরকিনা ফাসোতে বন্দুকধারীদের হাতে অপহৃত হয়েছেন ৫০ নারী। ১২ ও ১৩ জানুয়ারি দেশটির উত্তরাঞ্চলীয় প্রদেশ সাউম থেকে তাদের অপহরণ করা হয়। সোমবার (১৬ জানুয়ারি) এক বিবৃতিতে দেশটির সরকার এসব তথ্য জানায়।
ওই বিবৃতিতে বলা হয়, বুরকিনা ফাসোর অরিবিন্দা শহর থেকে প্রায় ১৫ কিলোমিটার (৯.৩২ মাইল) দূরে ও শহরটির পশ্চিমে অন্য একটি জেলার লিকি নামক গ্রামে বন্য ফল সংগ্রহের সময় কতিপয় অস্ত্রধারী ব্যক্তি ওই নারীদের ধরে নিয়ে যান।
সাহেলের আঞ্চলিক গভর্নর লেফটেন্যান্ট কর্নেল রোডলফ সোরঘো বলেন, অপহরণের সংবাদ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ওই নারীদের উদ্ধারে জোর তৎপরতা শুরু করেছে স্থানীয় প্রশাসন। অপহৃতদের নিরাপদে ও সুস্থ অবস্থায় উদ্ধারের আশা ব্যক্ত করেছেন তিনি।
দেশটির নিরাপত্তা রক্ষায় নিয়োজিত কর্তৃপক্ষ বার্তাসংস্থা এএফপিকে জানায়, ওই নারীদের অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করতে সব প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। এরই মধ্যে দেশব্যাপী ব্যাপক অভিযান শুরু হয়েছে।
যেকোনো সন্দেহজনক গতিবিধি শনাক্ত করতে সেনাবাহিনীর একাধিক বিমান ওই এলাকার ওপর নজরদারি রাখছে। তবে স্থানীয় কর্মকর্তাদের দাবি, সেনাবাহিনী ও এর বেসামরিক সহযোগীরা প্রদেশটিতে ব্যর্থ অভিযান চালিয়েছে।
এদিকে, সোমবার এক বিবৃতিতে ওই নারীদের মুক্তির আহ্বান জানিয়েছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রধান ভলকার তুর্ক। তিনি বলেন, অবিলম্বে বুরকিনা ফাসোতে অপহরণের শিকার নারীদের নিঃশর্ত মুক্তির আহ্বান জানাচ্ছি।
‘তাদের উদ্ধারে জাতীয় কর্তৃপক্ষকে আরও কার্যকর, নিরপেক্ষ ও স্বাধীন তদন্ত পরিচালনা করতে হবে। তাছাড়া অবিলম্বে এ ঘটনায় জড়িতদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনার আহ্বান জানাচ্ছি।’
অন্যদিকে, এ ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র নেড প্রাইস এক বিবৃতিতে বলেন, অবিলম্বে অপহৃতদের নিঃশর্তভাবে মুক্তি দিয়ে নিরাপদে প্রিয়জনের কাছে ফিরিয়ে দিতে হবে। পাশাপাশি দুর্বৃত্তদের পূর্ণ আইনের আওতায় আনতে হবে।
বুরকিনা ফাসো বিশ্বের দরিদ্রতম দেশগুলোর মধ্যে একটি। দেশটি দীর্ঘদিন ধরেই সশস্ত্র সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোকে নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খাচ্ছে। ২০১৫ সালে মালিতে ছড়িয়ে পড়া আল-কায়েদা ও ইসলামিক স্টেটের (আইএস) মতো জঙ্গিগোষ্ঠীগুলো দেশটিতে একের পর এক সহিংস কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে।
জানা যায়, সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলোর সহিংসতায় দেশটির কয়েক হাজার বেসামরিক নাগরিক ও নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্য নিহত হয়েছেন। তাছাড়া প্রায় ২০ লাখ মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে অস্থায়ী শিবিরে বসবাস করছেন। সূত্র: আল-জাজিরা