নিজস্ব প্রতিবেদক: লন্ডন থেকে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে ধরে এনে সাজা কার্যকর করার ঘোষণা দিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘লন্ডনে বসে জুয়া খেলে আর লাম্পট্য করে দলের নেতাদের দেশে আগুন সন্ত্রাসের হুকুম দিচ্ছে। আগামীতে সুযোগ পেলে তাকে ধরে সাজা কার্যকর করা হবে।’
শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া সরকারি শেখ মুজিবুর রহমান কলেজ মাঠে স্থানীয় আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় এসব কথা বলেন শেখ হাসিনা।
শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপির আন্দোলন হচ্ছে দেশে সন্ত্রাস করা। বিএনপি নেতাদের মধ্যে দেশপ্রেম নেই। তারা দেশের শত্রু। দেশকে কিছু দেবার যোগ্যতাই তাদের নেই। বিএনপি হচ্ছে খুনিদের পার্টি আর জামায়াত হচ্ছে যুদ্ধাপরাধীদের পার্টি।
তিনি বলেন, নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্রে আন্তর্জাতিকভাবে অনেকে জড়িত। নির্বাচনে জয়ী হলে লন্ডনে বসে বাসে আগুন দেয়ার হুকুমদাতাকে ধরে এনে বিচার করা হবে।
বিএনপির মধ্যে কোনো মনুষ্যত্ব নেই মন্তব্য করে তিনি বলেন, মানুষ খুন করাই তাদের রাজনীতি। টাকা লুটপাট করে বিদেশে বসে মানুষ খুন করার নির্দেশ দিচ্ছে। বিএনপি দেশের উন্নয়ন করতে জানে না তারা শুধু মানুষ পোড়াতে জানে, ওদের কোনো মনুষ্যত্ব নেই।
আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা জনসভায় আগতদের উদ্দেশে বলেছেন, আপনাদের এই ভালোবাসা, আপনাদের এই সমর্থন আমার একমাত্র শক্তি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখানে অনেক ঘাত-প্রতিঘাতের মধ্যে চলতে হয়েছে, তারপরও আপনারা আমাকে আগলে রেখেছেন। সেজন্য আমি আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। এই বাংলাদেশেকে নিয়ে যে স্বপ্ন ছিল আমার বাবার, আমি প্রাণপণ চেষ্টা করে গেছি, আমি নিজের দিকে তাকাইনি
তিনি আরো বলেন, নির্বাচন বানচালে দেশীয় ও আন্তর্জাতিকভাবে ষড়যন্ত্র চলছে। ষড়যন্ত্রকারীরা দেশে তৃতীয় একটি পক্ষকে ক্ষমতায় আনতে চায়।
দেশবাসীর উদ্দেশে প্রশ্ন রেখে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তৃতীয় শক্তি ক্ষমতায় এলে দেশের কী করতে পারবে? আগে একবার তারা এসেছিল না? কী করতে পেরেছে? চক্রান্ত চলছে। বাংলাদেশে এ দুর্বৃত্তায়ন চলবে না। আসন্ন নির্বাচন বানচালের চক্রান্তের সমুচিত জবাব দিতে হবে।’
আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে এ জনসভার আয়োজন করা হয়। টুঙ্গিপাড়া প্রধানমন্ত্রীর নিজ নির্বাচনি এলাকা। জনসভায় নিজের জন্য নৌকা মার্কায় ভোট চান প্রধানমন্ত্রী। এ সময় দেশের উন্নয়নে আওয়ামী লীগ সরকারের নানামুখী উন্নয়ন কাজের বিবরণ দিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা দেশে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করছি। মানুষকে ঘর তৈরি করে দিয়েছি। আমরা মানুষের পাশে দাঁড়াতে চেয়েছি। একইসঙ্গে স্কুল-কলেজ, মসজিদ-মাদরাসা নির্মাণ করেছি।’
টুঙ্গিপাড়া ও কোটালীপাড়া উপজেলা নিয়ে গঠিত গোপালগঞ্জ-৩ আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। টুঙ্গিপাড়ায় ২০০১ সালের পর আজ নির্বাচনী জনসভা করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বেলা সাড়ে ১১টার দিকে বোন শেখ রেহানাকে নিয়ে মঞ্চে উঠেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসময় হাতে জাতীয় পতাকা নেড়ে সবাইকে শুভেচ্ছা জানান।
জনসভামঞ্চে প্রধানমন্ত্রীর ছোট বোন শেখ রেহানাও উপস্থিত ছিলেন। সমাবেশে আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিমসহ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ও জেলা পর্যায়ের নেতারা বক্তব্য দেন।