নিজস্ব প্রতিবেদক : থিম ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ আর ‘উন্নয়ন দৃশ্যমান বাড়বে এবার কর্মসংস্থান’ স্লোগান সামনে রেখে আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দলীয় ইশতেহার ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।
বুধবার (২৭ ডিসেম্বর) বেলা ১১টায় রাজধানীর প্যান প্যাসিফিক হোটেল সোনারগাঁওয়ের গ্র্যান্ড বলরুমে এই ইশতেহার ঘোষণা করেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
দ্রব্যমূল্য সকলের ক্রয়ক্ষমতায় মধ্যে রাখার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখাসহ মোট ১১ বিষয়কে এবারের ইশতেহারে বিশেষ অগ্রাধিকার পেয়েছে।
ইশতেহার অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্যে রাখেন ইশতেহার প্রণয়ন উপ-কমিটির আহ্বায়ক ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আব্দুস রাজ্জাক। এরপর ইশতেহার ঘোষণা শুরু করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
আওয়ামী লীগের ইশতেহারে বলা হয়েছে, ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে ২০২৫, ২০৩১ ও ২০৪১-এর সময়রেখার মধ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে। এতে ডিজিটাল প্রযুক্তির সঙ্গে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা যুক্ত হয়ে তৈরি করবে স্মার্ট বাংলাদেশ। আওয়ামী লীগ দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে যে, আধুনিক প্রযুক্তি প্রয়োগ দেশ ও সমাজের উন্নতি নিশ্চিত করবে, গড়ে তুলবে উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ।
ইশতেহারে আওয়ামী লীগ সরকারের টানা তিন মেয়াদের অর্জন এবং আগামী মেয়াদে ক্ষমতায় এলে দেশের উন্নয়নে তাদের কর্মপরিকল্পননা তুলে ধরা হয়েছে। আওয়ামী লীগ আবারও ক্ষমতায় এলে কর্মসংস্থান সৃষ্টি, দ্রব্যমূল্য সবার ক্রয় ক্ষমতায় আনতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাবে। এ বিষয়গুলোসহ দলটির নির্বাচনী ইশতেহারে মোট ১১টি বিষয়ে বিশেষ অগ্রাধিকার দেওয়ার কথা বলা হয়েছে।
ইশতেহারে যে ১১টি বিষয়ে বিশেষ অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে-
১. দ্রব্যমূল্য সবার ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে রাখার জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়া।
২. কর্মোপযোগী শিক্ষা ও যুবকদের কর্মসংস্থান নিশ্চিত করা।
৩. আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলা।
৪. লাভজনক কৃষির লক্ষ্যে সমন্বিত কৃষি ব্যবস্থা, যান্ত্রিকীকরণ ও প্রক্রিয়াজাতকরণে বিনিয়োগ বৃদ্ধি।
৫. দৃশ্যমান অবকাঠামোর সুবিধা নিয়ে এবং বিনিয়োগ বৃদ্ধি করে শিল্পের প্রসার ঘটানো।
৬. ব্যাংকসহ আর্থিক খাতে দক্ষতা ও সক্ষমতা বৃদ্ধি করা।
৭. নিম্ন আয়ের মানুষদের স্বাস্থ্যসেবা সুলভ করা।
৮. সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থায় সবাইকে যুক্ত করা।
৯. আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কার্যকারিতা ও জবাবদিহি নিশ্চিত করা।
১০. সাম্প্রদায়িকতা এবং সব ধরনের সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ রোধ করা।
১১. সর্বস্তরে গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা সুরক্ষা ও চর্চার প্রসার ঘটানো।
এর আগে ২০১৮ সালে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ‘সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় বাংলাদেশ’ স্লোগানে নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেছিল আওয়ামী লীগ। তাতে ২০৪১ সালে উন্নত ও সমৃদ্ধ বাংলাদেশ এবং ২১০০ সালে নিরাপদ ব-দ্বীপ পরিকল্পনার রূপরেখা দেয়া হয়।
২০০৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে ‘দিন বদলের সনদ’ নিয়ে নির্বাচনী ইশতেহার ঘোষণা করেন শেখ হাসিনা। সেই ইশতেহারের অঙ্গীকারে বলা ছিল- ২০২১ সালের মধ্যেই ডিজিটাল বাংলাদেশ হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গত বছরের ১২ ডিসেম্বর ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়ার ঘোষণা দেন। স্মার্ট বাংলাদেশ হবে সাশ্রয়ী, টেকসই, অন্তর্ভুক্তিমূলক, জ্ঞানভিত্তিক, বুদ্ধিগত এবং উদ্ভাবনী। স্মার্ট বাংলাদেশের রয়েছে চারটি স্তম্ভ—স্মার্ট নাগরিক, স্মার্ট অর্থনীতি, স্মার্ট সরকার ও স্মার্ট সমাজ।