কর্পোরেট সংবাদ ডেস্ক : টানা চতুর্থবারের মতো বৈশ্বিক ব্র্যান্ড কনসালটেন্সি প্রতিষ্ঠান ইন্টারব্র্যান্ড’এর ‘গ্লোবাল টপ ফাইভ’ ব্র্যান্ডের তালিকায় অবস্থান অর্জন করে নিয়েছে স্যামসাং ইলেকট্রনিক্স।
সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানটি এই স্বীকৃতি অর্জন করে। ৯১.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্র্যান্ড ভ্যালু সম্পন্ন স্যামসাং ইলেকট্রনিক্সের বাৎসরিক প্রবৃদ্ধির হার ৪ শতাংশ। গ্রাহক অভিজ্ঞতা উন্নয়ন কৌশলের কার্যকরী প্রয়োগ এবং সংশ্লিষ্ট খাতে সেরা উদ্ভাবনীর বিকাশে ব্র্যান্ডটির একান্ত প্রচেষ্টার ফলাফল হিসেবে এই স্বীকৃতি অর্জন সম্ভব হয়েছে।
এ বছর আইটি খাতে তুলনামূলক ধীর গতি থাকা সত্ত্বেও স্যামসাং সার্বিকভাবে নিজেদের ব্র্যান্ড ভ্যালু বাড়াতে সক্ষম হয়েছে। বিস্তৃত পরিসরে নিয়ে আসা নানা ধরণের পণ্য ও স্মার্টথিংসের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি গেমিং অভিজ্ঞতা সমৃদ্ধ করেছে ও কানেক্টিভিটি বাড়াতে ভূমিকা রাখছে। তার ওপর সিক্সজি, আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই), অটোমোটিভ, অগমেন্টেড রিয়্যালিটি (এআর) ও ভার্চ্যুয়াল রিয়্যালিটির (ভিআর) মতো ভবিষ্যতমুখী উদ্ভাবনী প্রযুক্তির ক্ষেত্রে তারা নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করেছে। প্রতিষ্ঠানটি সকল পণ্যের ক্ষেত্রে পরিবেশ সচেতন কার্যক্রমের মধ্য দিয়ে ইএসজি (এনভায়রনমেন্টাল, সোশ্যাল অ্যান্ড গভরন্যান্স) প্রসঙ্গে শক্তিশালী নেতৃত্ব প্রতিষ্ঠায়ও ধারাবাহিকভাবে কাজ করে যাচ্ছে। সেরা ব্র্যান্ডের স্বীকৃতি অর্জনে দক্ষিণ কোরিয়া ভিত্তিক শীর্ষ প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানটির জন্য এধরণের উদ্যোগগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
গ্রাহক অভিজ্ঞতা সমৃদ্ধ করতে প্রতিষ্ঠানটির প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে সমন্বিত অনলাইন ও অফলাইন অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে বৈশ্বিক মার্কেটিং অফিসের অধীনে ডিরেক্ট-টু-কাস্টমার (ডিটুসি) প্রতিষ্ঠা করেছে স্যামসাং ইলেকট্রনিক্স। প্রতিষ্ঠানটিতে সিএক্স-এমডিই সেন্টারও রয়েছে যা মাল্টি-ডিভাইস অভিজ্ঞতা সমৃদ্ধ করতে ভূমিকা রাখছে। বিগত বছরগুলোতে স্যামসাংয়ের ব্র্যান্ড ভ্যালু বাড়ানোর ক্ষেত্রে কার্যকরী অংশীদারিত্ব গঠনও বেশ গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রেখেছে। বিভিন্ন থার্ড-পার্টি ডিভাইস কানেক্ট করার ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানটি ওপেন পার্টনারশিপ আরও শক্তিশালী করে যাচ্ছে। একইসাথে তারা আগামীদিনের গ্রাহকদের আরো সক্ষম করে তুলতে শীর্ষ ভবিষ্যতমুখী প্রযুক্তিতে বিনিয়োগ বাড়াচ্ছে।
এক্ষেত্রে ইএসজি একটি মূখ্য ভূমিকায় অবস্থান করছে, কারণ প্রতিষ্ঠানটির পরিবেশ সচেতনতামূলক কার্যক্রমগুলো বেশ ইতিবাচক প্রভাব তৈরি করছে। স্যামসাং এই প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে রিসাইকেল করা উপকরণের ব্যবহার বাড়িয়েছে। যেমন, স্যামসাংয়ের গ্যালাক্সি এস২৩, গ্যালাক্সি জেডফ্লিপ৫ ও ফোল্ড৫ সিরিজে ব্যবহৃত হয়েছে মাছ ধরার পুরোনো জাল থেকে পাওয়া প্লাস্টিক, কাঁচ ও অ্যালুমিনিয়াম। প্যাকেজিং উপকরণের ক্ষেত্রে পরিবেশ সচেতনতা নিশ্চিতে রিসাইকেল করা ইপিএস ব্যবহার করা হচ্ছে। সমুদ্র থেকে পাওয়া পিইটি বোতলের প্লাস্টিক থেকে হাই-রেজ্যুলেশন মনিটরের পেছনের কাভার তৈরি হচ্ছে।
পাশাপাশি, ২০২৩ এ আসা লাইফস্টাইল টিভিতে ব্যবহৃত হচ্ছে সোলারসেল রিমোট ব্রাকেট; এই সোলার সেল রিমোট টেকনোলোজির ক্ষেত্রে ওপেন লাইসেন্সের সুবিধাও দিচ্ছে স্যামসাং। ওয়াশিং মেশিনে ‘লেস মাইক্রোফাইবার ফিল্টার’-এর জন্য প্যাটাগোনিয়ার সাথে একযোগে কাজ করছে প্রতিষ্ঠানটি, আর স্মার্টথিংস এনার্জির ক্ষেত্রে নিয়ে এসেছে এআই এনার্জি মোড।
বছর জুড়ে মোবাইল, নেটওয়ার্ক, ভিজ্যুয়াল ডিসপ্লে, হোম অ্যাপ্লায়েন্স ও সেমিকন্ডাক্টর-সহ ব্যবসার সকল ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি নিয়ে এসেছে স্যামসাং। প্রতিষ্ঠানটি কার্যকরী ক্যাম্পেইন, সমন্বিত কৌশল ও ধারাবাহিক প্রচেষ্টার মধ্য দিয়ে সকল ক্ষেত্রে নিজের অবস্থান শক্তিশালী করে তুলেছে।
এ বিষয়ে স্যামসাং বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হোয়ানসাং উ বলেন, “ব্যবসায়িক পরিবেশ চ্যালেঞ্জিং হওয়া সত্ত্বেও স্যামসাং ইলেকট্রনিকস তার ব্র্যান্ড ভ্যালু বজায় রাখার ক্ষেত্রে ধারাবাহিক প্রবৃদ্ধির মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। আর এক্ষেত্রে ধন্যবাদ পাবেন আমাদের বিশ্ব জুড়ে সকল গ্রাহকরা। এ ধরণের অর্জন আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখা ও সমৃদ্ধ অভিজ্ঞতা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে সকল সম্ভাবনা কাজে লাগাতে এবং কঠোর পরিশ্রম করতে অনুপ্রেরণা জোগায়”।
ব্র্যান্ড সমূহের ব্র্যান্ড ভ্যালু মূল্যায়ন করে তালিকা তৈরি করে থাকে ইন্টারব্র্যান্ড। এক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানের আর্থিক পারফর্ম্যান্স, গ্রাহকের কেনাকাটার ওপর ব্র্যান্ডের প্রভাব ও ব্র্যান্ড প্রতিযোগিতার বিষয়গুলোকে সূক্ষ্মভাবে বিশ্লেষণ করা হয়। ব্র্যান্ড ভ্যালু মূল্যায়ন করার ক্ষেত্রে তাদের বিশ্বের অন্যতম দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে, এবং বিশ্বাসযোগ্যতার দিক থেকেও তারা ব্যাপকভাবে স্বীকৃত।