নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীর মিরপুরের শিয়ালবাড়িতে একটি পোশাক কারখানা ও একটি রাসায়নিকের গুদামে আগুনের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৬ জনে দাঁড়িয়েছে। সবগুলো লাশ উদ্ধার হয়েছে পোশাক কারখানা ভবনের দ্বিতীয় ও তৃতীয় তলা থেকে। ডিএনএ পরীক্ষা না করে সেগুলো শনাক্ত করার উপায় নেই। এ ঘটনায় হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
মঙ্গলবার (১৪ অক্টোবর) ফায়ার সার্ভিসের মিডিয়া কর্মকর্তা তালহা বিন জসিম এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, মঙ্গলবার বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে অগ্নিকাণ্ডের খবর পায় ফায়ার সার্ভিস। এরপর ১১টা ৫৬ মিনিটে ফায়ার সার্ভিসের ৫টি ইউনিট আগুন নেভাতে ঘটনাস্থলে পৌঁছে কাজ শুরু করে। এরপর আরও ৭টিসহ মোট ১২টি ইউনিট আগুন নেভাতে কাজ করছে।
তালহা বিন জসিম বলেন, কসমিক ফার্মা কোম্পানির কেমিক্যালের গোডাউন ও আরেকটি গার্মেন্টসে আগুন লেগেছে। ফায়ার সার্ভিসের ১২টি ইউনিট কাজ করে গার্মেন্টসে লাগা আগুন নিয়ন্ত্রণে এনেছে। তবে কেমিক্যাল গোডাউনের আগুন নিয়ন্ত্রণে কাজ করে যাচ্ছেন ফায়ার সদস্যরা।
কেমিক্যাল গোডাউন ও গার্মেন্টসে আগুনের ঘটনায় ধোয়ায় অসুস্থ হয়ে পড়া সুরুজ (৩০) ও মামুন (৩৫) নামে দুইজনকে হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুরে তাদের জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে নিয়ে আসা হয়েছে।
বার্ন ইনস্টিটিউটের আবাসিক সার্জন ডা. শাওন বিন রহমান জানান, সুরুজের শরীরে দুই শতাংশ পুড়ে গেছে। এ ছাড়া দু’জনেরই ধোঁয়ায় শ্বাসনালি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ওই দু’জনকে জরুরি বিভাগে অবজারভেশনে রাখা হয়েছে।
ফায়ার সার্ভিস জানিয়েছে, পোশাক কারখানাটি সাততলা বিশিষ্ট। রাসায়নিকের গুদামে ব্লিচিং পাউডার, প্লাস্টিক ও হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড ছিল।
এদিকে এ ঘটনায় এখনো অনেকের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন স্বজনেরা। অগ্নিকাণ্ডের পর ঘটনাস্থল ও আশপাশের হাসপাতালগুলোতে নিখোঁজ স্বজনদের খুঁজে ফিরছেন অসংখ্য মানুষ। অনেকে প্রিয়জনের ছবি হাতে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়ছেন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, তিনতলা পোশাক কারখানার নিচতলায় ‘ওয়াশ ইউনিট’ রয়েছে। সেখানে প্রথম আগুন লাগে। সেই আগুন পাশের রাসায়নিকের গুদামে ছড়িয়ে পড়লে সেখানে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। এরপর আগুন তিনতলা পোশাক কারখানার সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ে। আগুন লাগার পর কারখানা থেকে শ্রমিকেরা নানাভাবে বের হয়ে আসার চেষ্টা করেন। এর মধ্যেই অনেকে আটকা পড়েন।


