কর্পোরেট সংবাদ ডেস্ক: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন স্থগিত করে হাইকোর্টের দেয়া আদেশ স্থগিত করেছেন চেম্বার আদালত। এ আদেশের ফলে নির্বাচন হতে বাধা নেই বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।
সোমবার (১ সেপ্টেম্বর) বিকেলে চেম্বার আদালত এ আদেশ দেন। বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনজীবী শিশির মনির।
তিনি বলেন, ডাকসু নির্বাচনে হাইকোর্টের দেয়া স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে চেম্বার আদালতে আবেদন করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। পরে এক আদেশে হাইকোর্টের রায় স্থগিত করেন চেম্বার আদালত। ফলে ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠানে কোনো বাধা রইল না।
শিশির মনির আরো বলেন, মঙ্গলবার (২ সেপ্টেম্বর) আমরা সিএমপি দায়ের করবো। আশা করি গুরুত্বের বিচারে আগামীকালই এ ব্যাপারে বাকি শুনানি হবে। তবে এই সময়ের মধ্যে হাইকোর্ট ডিভিশনের আদেশের কার্যকারিতা স্থগিত থাকবে। অর্থাৎ, ডাকসু নির্বাচন আয়োজন, পরিচালনা, ক্যাম্পেইন, ছাত্রদের উৎসব-উৎসাহ এসব বিষয়ে কোনো স্থগিতাদেশ থাকলো না।
এর আগে বিচারপতি হাবিবুল গণি ও বিচারপতি শেখ তাহসিন আলীর হাইকোর্ট বেঞ্চ ডাকসু নির্বাচন আগামী ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত স্থগিত করেন।ডাকসু নির্বাচনে ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট মনোনীত প্যানেলের জিএস প্রার্থী এস এম ফরহাদের প্রার্থিতা চ্যালেঞ্জ করে করা রিটের শুনানি নিয়ে উচ্চ আদালত এ আদেশ দেন।
আদেশে রিটকারী ও ডাকসু নির্বাচনে মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন বিষয়ক সম্পাদক প্রার্থী বি এম ফাহমিদা আলমকে জিএস প্রার্থী এস এম ফরহাদের বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ আগামী ১৫ দিনের মধ্যে ডাকসুর নির্বাচনী ট্রাইব্যুনালে দাখিল করতে বলা হয়।
রোববার (৩১ আগস্ট) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট মনোনীত এবং ছাত্র শিবির সমর্থিত প্যানেলের জিএস প্রার্থী এস এম ফরহাদের প্রার্থিতার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট দায়ের করেন বামজোট মনোনীত প্যানেলের মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন বিষয়ক সম্পাদক প্রার্থী বিএম ফাহমিদা আলম।
ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, আগামী ৯ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। ইতোমধ্যে নির্বাচন ঘিরে ক্যাম্পাসে জমজমাট প্রচারণাও করেছেন বিভিন্ন প্যানেলের প্রার্থীরা।
চূড়ান্ত তালিকা অনুযায়ী, সহ-সভাপতি (ভিপি) পদে ৪৫ জন, সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে ১৯ জন এবং সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে ২৫ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কথা ছিল। এছাড়া মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন সম্পাদক পদে ১৭ জন, কমনরুম, রিডিংরুম ও ক্যাফেটেরিয়া সম্পাদক পদে ১১ জন, আন্তর্জাতিক সম্পাদক পদে ১৪ জন, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক পদে ১৯ জন এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক পদে রয়েছেন ১২ জন।
তাছাড়া গবেষণা ও প্রকাশনা সম্পাদক পদে ৯ জন, ক্রীড়া সম্পাদক পদে ১৩ জন, ছাত্র পরিবহন সম্পাদক পদে ১২ জন, সমাজসেবা সম্পাদক পদে ১৭ জন, স্বাস্থ্য ও পরিবেশ সম্পাদক পদে ১৫ জন, মানবাধিকার ও আইন বিষয়ক সম্পাদক পদে ১১ জন এবং ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট সম্পাদক পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ছিলেন ১৫ জন প্রার্থী।
সবচেয়ে বেশি প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে সদস্য পদে। এবার মোট ২১৭ জন প্রার্থী সদস্য পদে লড়বেন। সবমিলিয়ে ২৮টি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কথা ছিল ৪৭১ জন প্রার্থীর।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে এখন পর্যন্ত ডাকসু নির্বাচন হয়েছে ৩৭ বার। আর স্বাধীনতার পর মাত্র সাতবার হয় ডাকসু নির্বাচন। যারমধ্যে সবশেষ ভোটগ্রহণ হয় ২০১৯ সালে।


