নিজস্ব প্রতিবেদক: শনিবার (১৯ জুলাই) রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জামায়াতের জাতীয় মহাসমাবেশের মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে দুপুর ২টায়। এরই মধ্যে ভোর রাতেই পূর্ণ হয়ে গেছে জামায়াতে মহাসমাবেশস্থল। সমাবেশ ঘিরে শুক্রবার রাত থেকেই সমাবেশস্থলে জড়ো হতে শুরু করেছেন দলটির বিভিন্ন জেলার নেতা-কর্মীরা।
‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ নিশ্চিতকরণ, জুলাই গণহত্যার বিচার এবং মৌলিক সংস্কারের দাবিসহ সাত দফা দাবিতে এই জাতীয় সমাবেশের আয়োজন করেছে জামায়াতে ইসলামী। সমাবেশে অংশ নিতে সারা দেশ থেকে প্রায় ১০ লাখ নেতা-কর্মীর উপস্থিতি আশা করছে দলটি।
শুক্রবার রাতে সমাবেশস্থলে গিয়ে দেখা যায়, উদ্যানে মঞ্চ তৈরির কাজ চলছে পুরোদমে। অনেক নেতা-কর্মী ইতিমধ্যে মঞ্চের সামনে এসে পৌঁছেছেন। তাদের কেউ জামায়াতের লোগোসংবলিত টি-শার্ট পরেছেন, কারও মাথায় বাঁধা দলীয় ফিতা। অনেকে হাতে এনেছেন দলীয় প্রতীক দাঁড়িপাল্লা। মঞ্চের সামনে বিছানো ত্রিপলের ওপর বসে কিংবা শুয়ে সময় কাটাচ্ছেন তারা।
তবে ভোর রাতে সারা দেশ থেকে মানুষের স্রোত নামে রাজধানীতে। বাস থেকে নেমে ফজরের নামাজ আদায় করে সমাবেশস্থলে আসেন তারা। আবার অনেকে মাঠেই নামাজ আদায় করেন।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট তারিকুল ইসলাম গণমাধ্যমকে বলেন, আমার জেলা ঝালকাঠি থেকে হাজার হাজার নেতাকর্মী এসেছেন লঞ্চে। নির্দেশনা অনুযায়ী বাড়ি থেকে খাবার নিয়ে এসেছেন। লঞ্চে কোনো হই-হুল্লোড় ছিল না। খাবার প্যাকেট নিয়ে ছিল না কোনো হট্টগোল।
তিনি বলেন, খোঁজ নিয়ে জানলাম প্রত্যেকে নিজ খরচে তাদের দলের সমাবেশে যোগ দিতে ঢাকায় রওনা হয়েছেন- অর্থাৎ লঞ্চে একত্রে গেলেও প্রত্যেকে লঞ্চভাড়া নিজেরা বহন করছেন। তবে ঘুমানোর জায়গার কমতি ছিল। নিজে জেগে থেকে, বসে থেকে অন্য ভাইকে ঘুমানোর সুযোগ দিয়েছে। ইসলামি দলগুলোর সৌন্দর্য এখানেই।
দলটির কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বলেন, সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে এটাই দলীয় ইতিহাসের প্রথম সমাবেশ। আগে পুরানা পল্টন, বায়তুল মোকাররম, পল্টন ময়দানসহ রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় অসংখ্য রাজনৈতিক কর্মসূচি করেছে জামায়াতে ইসলামী। কিন্তু ১৯ জুলাই রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রথম ‘জাতীয় সমাবেশ’ করতে যাচ্ছি আমরা।
শনিবার (১৯ জুলাই) ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে জামায়াতের জাতীয় মহাসমাবেশের মূল আনুষ্ঠানিকতা দুপুর ২টায় শুরু হওয়ার কথা থাকলেও সকাল ১০টা থেকে মঞ্চ দখলে থাকবে দেশের খ্যাতনামা ইসলামি সংগীতশিল্পীদের।
জামায়াতের জাতীয় মহাসমাবেশে সভাপতিত্ব করবেন দলটির আমির ডা. শফিকুর রহমান।
জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার জানিয়েছেন, ‘সমাবেশে সারা দেশ থেকে নেতাকর্মীদের ঢল নামবে। নিরাপত্তা ও ব্যবস্থাপনার জন্য ২০টি পয়েন্টে প্রায় ৬ হাজার স্বেচ্ছাসেবক দায়িত্ব পালন করবেন। ঢাকা শহরের বাইরের অংশগ্রহণকারীদের জন্য রাখা হয়েছে অন্তত ১৫টি পার্কিং পয়েন্ট।’
তিনি আরও জানান, হামদ-নাত পরিবেশনার পর মূল সমাবেশ শুরু হবে শনিবার দুপুর ২টায়।


