স্পোর্টস ডেস্ক : শ্রীলংকার বিপক্ষে সিরিজের দ্বিতীয় ও শেষ টেস্টের তৃতীয় দিন শেষে ইনিংস ও ৭৮ রানের ব্যবধানে হেরেছে সফরকারী বাংলাদেশ। এতে ১-০ ব্যবধানে সিরিজ ঘরে তুলেছে স্বাগতিকরা। এর আগে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে গল টেস্টে দুর্দান্ত পারফরম করে ড্র করেছিল বাংলাদেশ।
আজ চতুর্থ দিনে ২১১ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয়বার ব্যাটিং করতে নেমে বাংলাদেশ অলআউট ১৩৩ রানে। গতকাল ৬ উইকেটে ১১৫ রান তোলার পর আজ সকালে বাংলাদেশের ইনিংস ৬ ওভারও টেকেনি। আর মাত্র ১৮ রান যোগ করতে শেষ ৪ উইকেট হারিয়েছে টাইগাররা। এতে ৭৮ রান এবং ইনিংস ব্যবধানের জয় পেয়েছে স্বাগতিকরা। সেই সঙ্গে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজে ১-০ ব্যবধানে সিরিজ ঘরে তুলেছে শ্রীলঙ্কা।
এদিন ব্যক্তিগত ১ রান যোগ করতেই জয়সুরিয়ার বলে ক্যাচ আউট হন লিটন কুমার দাস। ৪৩ বলে ১৪ রান করেন তিনি। ৮ বলে ৫ রান করে তাকে সঙ্গ দেন নাঈম হাসান। এরপর তাইজুল ইসলাম (৬) এবং এবাদত হোসেন ৬ রানে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়ে হার নিশ্চিত হয় বাংলাদেশের।
এই ইনিংসে ৫ উইকেট শিকার করে লঙ্কানদের জয়ের নায়ক প্রবাথ জয়াসুরিয়া।
এর আগে গতকাল প্রথম ইনিংসে ২১১ রানে পিছিয়ে থেকে নিজেদের দ্বিতীয় ইনিংসে দিন শেষে ৬ উইকেটে ১১৫ রান করেছে বাংলাদেশ। প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের ২৪৭ রানে জবাবে ৪৫৮ রান করে শ্রীলংকা। ফলে প্রথম ইনিংস থেকে ২১১ রানের বড় লিড পায় লংকানরা।
কলম্বোর সিংহলিজ স্পোর্টস ক্লাব (এসএসসি) মাঠে প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশের ২৪৭ রানের জবাবে দ্বিতীয় দিন শেষে ২ উইকেটে ২৯০ রান করেছিল শ্রীলংকা। ৮ উইকেট হাতে নিয়ে ৪৩ রানে এগিয়ে ছিল লংকানরা। নিশাঙ্কা ১৪৬ রানে ও প্রবাথ জয়সুরিয়া ৫ রানে অপরাজিত ছিলেন।
তৃতীয় দিন ব্যক্তিগত দেড়শ রান তুলে বাংলাদেশ স্পিনার তাইজুল ইসলামের শিকার হন নিশাঙ্কা। শর্ট কাভারে এনামুল হককে ক্যাচ দিয়ে আউট হওয়ার আগে ১৯ চারে ২৫৪ বলে ১৫৮ রান করেন নিশাঙ্কা।
নিশাঙ্কার পর শ্রীলংকার অধিনায়ক ধনাঞ্জয়া ডি সিলভাকে ৭ রানে লেগ বিফোর আউট করেন তাইজুল।
তাইজুলের জোড়া আঘাতের পর সিরিজে প্রথম উইকেটের দেখা পান পেসার নাহিদ রানা। নাইটওয়াচম্যান জয়সুরিয়াকে ১০ রানে বিদায় দেন তিনি।
৩৩৫ রানে পঞ্চম উইকেট পতনের পর জুটি বেঁধে শ্রীলংকাকে বড় সংগ্রহ এনে দেন কামিন্দু মেন্ডিস ও কুশল মেন্ডিস। তবে দুজনই শিকার হন স্পিনার নাইম হাসানের। আর্মবল ডেলিভারিতে কামিন্দুর স্টাম্প ভাঙ্গেন নাইম। ৪১ বলে ৩৩ রান করেন কামিন্দু।
এরপর নিয়মিত বিরতিতে উইকেট পড়লেও এক প্রান্তে রানের চাকা সচল রাখেন কুশল। তার ৮ চার ও ২ ছক্কা সাজানো ৮৭ বলে ৮৪ রানের সুবাদে ৪৫৮ রানের সংগ্রহ পায় শ্রীলংকা। এতে ২১১ রানের লিড পায় লংকানরা।
বাংলাদেশের হয়ে বল হাতে সফল বোলার তাইজুল। টেস্ট ক্যারিয়ারে ১৭তম বারের মত ইনিংসে পাঁচ বা ততোধিক উইকেট নিয়েছেন তিনি। এছাড়াও নাইম ৩ ও রানা ১ উইকেট নেন।
দ্বিতীয় ইনিংসে খেলতে নেমে ভালো শুরুর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন বাংলাদেশের দুই ওপেনার সাদমান ইসলাম ও বিজয়। ৬ ওভারে ৩০ রান তুলে ফেলেন তারা। কিন্তু আসিথা ফার্নান্দোর করা সপ্তম ওভারের পঞ্চম বলে পুল করতে গিয়ে শর্ট লেগে ক্যাচ দেন ২টি চার ও ১টি ছক্কায় ১৯ রান করা বিজয়।
বড় ইনিংস খেলতে পারেননি আরেক ওপেনার সাদমানও। ১২ রান করে প্রবাথ জয়সুরিয়ার বলে ক্যাচ আউট হন তিনি।
৩১ রানের মধ্যে দুই ওপেনার ফেরার পর জুটি বাঁধেন মোমিনুল হক ও অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত। কিন্তু মোমিনুল ও শান্তকে বড় ইনিংস খেলতে দেননি শ্রীলংকার অধিনায়ক ধনাঞ্জয়া ডি সিলভা। মোমিনুল ১৫ ও শান্ত ১৯ রানে ডি সিলভার বলে আউট হন।
৭০ রানে ৪ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে বাংলাদেশ। সেখান থেকে দলের রান ১শতে নেন অভিজ্ঞ মুশফিকুর রহিম ও লিটন দাস। দলীয় তিন অংকের ঘরে পৌঁছেই সজঘরে ফিরেন মুশফিক। জয়সুরিয়ার বলে বোল্ড হন ২৬ রান করা মুশফিক।
দিনের শেষটা ভালোভাবে শেষ করার দায়িত্ব ছিল লিটন ও মেহেদি হাসান মিরাজের। কিন্তু থারিন্দু রত্নায়েকের বলে লেগ বিফোর আউট হন ১১ রান করা মিরাজ। তার আউটের পর দিনের খেলা শেষ হয়। ১৩ রানে অপরাজিত ছিলেন লিটন।