সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার কোরবানির হাটে সাড়া ফেলতে প্রস্তুত ৩৫ মণ ওজনের বিশালাকৃতির একটি গরু। প্রায় তিন বছর ধরে সন্তানের মতো করে লালন-পালন করা এ গরুর বিক্রির অর্থেই মালিক আব্দুল মতিনের স্বপ্ন—পবিত্র হজে যাওয়া।
দৌলতপুর ইউনিয়নের বওড়া নতুনপাড়া এলাকার কসমেটিকস ও ফুল ব্যবসায়ী আব্দুল মতিন ফ্রিজিয়ান জাতের গরুটি পালন শুরু করেন হজে যাওয়ার উদ্দেশ্যে। গরুটির নাম রেখেছেন ‘বান্টি’। শান্ত স্বভাবের হওয়ায় এ নামটি রাখার পেছনে রয়েছে পারিবারিক ভালোবাসা ও মমতার ছোঁয়া।
গরুটির দৈর্ঘ্য ১১ ফুট, উচ্চতা ৬ ফুট এবং ওজন প্রায় ৩৫ মণ। আব্দুল মতিন জানান, প্রতিদিন ৯০০ থেকে ১ হাজার টাকার প্রাকৃতিক খাবার খাওয়ানো হয় বান্টিকে। খাদ্য তালিকায় রয়েছে গম, ছোলা, খেসারি ও ভুট্টার ছাতু, কলা, চিড়া, শাকসবজি, ঘাস, গুড়সহ নানা উপাদান। কোনো ধরনের কৃত্রিম মোটাতাজাকরণ পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়নি বলেও দাবি তাঁর।
বান্টির দাম চাওয়া হচ্ছে ৯ লাখ ৫০ হাজার টাকা। ক্রেতার জন্য উপহার হিসেবে থাকছে ৩৫ কেজি ওজনের একটি খাসিও।
পরিচর্যাকারী আব্দুল খালেক সরকার বলেন, “আমি বান্টিকে নিজের সন্তানের মতোই লালন করেছি। নিয়ম করে খাওয়ানো, গোসল করানো এবং পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা রক্ষা করেছি প্রতিদিন।”
স্থানীয় বাসিন্দা জেলহক মোল্লা জানান, “বেলকুচি উপজেলায় যত বড় গরু দেখা গেছে, তার মধ্যে বান্টিই সবচেয়ে বড়। গরুটি সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়ে লালন-পালন করা হয়েছে।”
এ বিষয়ে বেলকুচি উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. নাজমুল হক বলেন, “বান্টির খাদ্য ও পরিচর্যা নিয়ে নিয়মিত আমাদের পরামর্শ নিয়েছেন মালিক। গরুটি সম্পূর্ণ প্রাকৃতিক উপায়ে পালন করা হয়েছে এবং কোরবানির জন্য উপযুক্ত। আশা করা যায়, এটি কোরবানির হাটে ব্যাপক সাড়া ফেলবে।”
হজের তীব্র আকাঙ্ক্ষা আর গরুটির সঙ্গে গভীর সখ্যতার গল্প মিলিয়ে আব্দুল মতিনের এই আয়োজন শুধু একটি বড় গরু বিক্রির প্রচেষ্টা নয়, বরং তা হয়ে উঠেছে এক ব্যক্তিগত ত্যাগ ও বিশ্বাসের প্রতীক।


