সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে সিরাজগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলার গ্রামাঞ্চলে গরু চুরির ঘটনা আশঙ্কাজনক হারে বেড়েছে। গত পাঁচ দিনে রায়গঞ্জ, তাড়াশ ও চৌহালী উপজেলায় অন্তত ২১টি গরু ও দুটি মহিষ চুরির অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রায় প্রতি রাতেই কোথাও না কোথাও খামারি কিংবা কৃষকের গোয়ালঘরে হানা দিচ্ছে সংঘবদ্ধ চোর চক্র।
চোরের আতঙ্কে অনেকেই গরু পাহারায় গোয়ালঘরেই কাটাচ্ছেন রাত। স্থানীয়রা বলছেন, এভাবে চলতে থাকলে ঈদে কোরবানির পশুর সংকট দেখা দিতে পারে। পুলিশের নিষ্ক্রিয় ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তারা।
চলতি সপ্তাহের সবচেয়ে মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে চৌহালী উপজেলার ঘোড়জান ইউনিয়নের মুরাদপুর কাউলিয়া চরে। মঙ্গলবার (২০ মে) রাতে কৃষক তারা মিয়া (৬৫)–কে শ্বাসরোধে হত্যা করে গোয়ালঘর থেকে তিনটি গরু লুটে নেয় দুর্বৃত্তরা। ঘটনাটি এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। তবে এখনও কেউ গ্রেফতার হয়নি।
রায়গঞ্জ উপজেলার ব্রহ্মগাছা ইউনিয়নের কয়ড়া গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল জলিল জানান, শনিবার দিবাগত রাতে তার প্রায় দুই লাখ টাকা দামের লাল রঙের একটি ষাঁড় চুরি হয়। পরিবারের লোকজন মিলে রোববার (২৫ মে) সারাদিন বিভিন্ন স্থানে খোঁজ করেও গরুটির কোনো হদিস পাননি।
একই রাতে তাড়াশ উপজেলার দেশীগ্রাম ইউনিয়নের উত্তর শ্যামপুর গ্রামে কৃষক সাইফুল ইসলামের গোয়ালঘরের জানালা ও মাটির দেওয়াল ভেঙে সাতটি গরু চুরি হয়। ঘটনার পর থেকে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছে পরিবারটি।
রোববার রাতেই রায়গঞ্জ উপজেলার ডুমরাই গ্রামে কাদের মির্জার বাড়ি থেকে পাঁচটি গরু ও দুটি মহিষ এবং পাশের তালেব মির্জার গোয়ালঘর থেকে আরও তিনটি গরু চুরি হয়।
স্থানীয় কৃষকরা অভিযোগ করেন, প্রতিদিনই চুরির ঘটনা ঘটলেও পুলিশের তৎপরতা চোখে পড়ছে না।
এ বিষয়ে চৌহালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাখাওয়াত হোসেন বলেন, “তারা মিয়া হত্যাকাণ্ড ও গরু চুরির ঘটনায় অজ্ঞাতপরিচয় ১০–১২ জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।”
রায়গঞ্জ থানার ওসি কেএম মাসুদ রানা বলেন, “চুরির ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।”
তাড়াশ থানার ওসি জিয়াউর রহমান জানান, “উত্তর শ্যামপুরে গরু চুরির ঘটনায় লুৎফর ও চঞ্চল নামে দুজনকে রাতে গ্রেফতার করা হয়েছে।”
ঈদের আগমুহূর্তে এমন চুরি প্রবণতা রোধে জেলাজুড়ে টহল জোরদার ও কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণে প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপ কামনা করেছেন স্থানীয়রা।


