সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জ শ্রম কল্যাণ কেন্দ্র যেন ধুঁকে ধুঁকে চলা এক পরিত্যক্ত দপ্তর। দিনের পর দিন কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দেখা নেই, নেই কোনো কার্যক্রম-তবুও সরকারি বেতনভাতা তুলছেন সবাই নিয়মিত। আর স্বাস্থ্যসেবা ও প্রশিক্ষণ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন শ্রমজীবী মানুষ।
সরেজমিনে রোববার (২৫ মে, ২০২৫) সকাল সাড়ে ৯টায় অফিস পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, পরিচ্ছন্নতাকর্মী ছাড়া আর কেউ নেই। আগেও একাধিকবার এমন চিত্র পাওয়া গেছে, অভিযোগ সূত্রে জানা যায়।
শ্রমিকদের প্রশিক্ষণ, স্বাস্থ্যসেবা ও সুরক্ষায় স্থাপিত এই কেন্দ্রের বিরুদ্ধে রয়েছে ভয়াবহ অনিয়মের অভিযোগ-অবৈধভাবে ভবন দখল, কর্মে অনুপস্থিতি, ভুয়া তালিকা প্রণয়ন, আয়-ব্যয়ে গরমিল, এমনকি ইচ্ছেমতো অফিস পরিচালনা। এসব অভিযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন শ্রম কল্যাণ সংগঠক এখলাছুর রহমান ও তার সহযোগীরা।
রাজশাহী বিভাগীয় শ্রম দপ্তরের অধীন সংযুক্ত কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফার এক তদন্ত প্রতিবেদনে এখলাছুর রহমানকে অনিয়ম-দুর্নীতির মূল হোতা উল্লেখ করে তাকে বদলির সুপারিশ করা হয়েছে। ডিসপেনসারি এটেনডেন্ট আনোয়ার হোসেনকে নিয়মিতকরণের দাবিও জানানো হয়েছে।
এই কেন্দ্রের চিকিৎসা সেবাও বন্ধ। ২০২০ সালে মেডিক্যাল অফিসার বদলি হওয়ার পর থেকে পদটি শূন্য। ফার্মাসিস্ট রবিউল ইসলাম দিনভর বসে থাকলেও চিকিৎসক ও ওষুধের অভাবে কোনো কার্যক্রম নেই। ফলে প্রান্তিক শ্রমিকেরা বছরের পর বছর স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।
এর আগে ১৪ মে দৈনিক শ্যামল বাংলা, দৈনিক একুশে সংবাদসহ বিভিন্ন অনলাইন মাধ্যমে স্বচিত্র প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। তবুও প্রশাসনিকভাবে দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
এদিকে জেলার বিশিষ্টজন ও শ্রমিক নেতৃবৃন্দ শ্রম কল্যাণ কেন্দ্রটি সচল করার দাবি জানিয়েছেন। তারা বলেন, ‘‘যাদের শ্রমে দেশের অর্থনীতি টিকে আছে, সেই শ্রমিকরাই যদি ন্যূনতম সেবা না পান-তবে সরকারের সদিচ্ছা কোথায়?’’
উল্লেখ্য, এই কেন্দ্রের মোট ১১টি পদ থাকলেও বেশ কয়েকটি শূন্য। অর্গানোগ্রামে রয়েছে মেডিক্যাল অফিসার, পরিবার কল্যাণ কর্মকর্তা, ফার্মাসিস্ট, ডিসপেনসারি এটেনডেন্ট, শ্রম কল্যাণ সংগঠক, অফিস সহায়কসহ আরও কিছু পদ। তবে বাস্তবে সেবার কোনো ছোঁয়া নেই।


