ময়মনসিংহ ব্যুরো: ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. নজরুল ইসলাম ঘুষ নেয়ার পর বেকায়দায়পরে টাকা ফেরত দেওয়ার ঘটনায় সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
সোমবার (২৪ মার্চ) দুপুরে ময়মনসিংহের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গৌরীপুর সার্কেল) দেবাশীষ কর্মকার এই বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, শনিবার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে। তদন্তে ঘুষ লেনদেনের সত্যতা পাওয়া গেছে। সে অনুযায়ী বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন জেলা পুলিশ সুপার।
ময়মনসিংহের পুলিশ সুপার কাজী আখতার উল আলম বলেন, নজরুল ইসলামকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। তিনি এখন পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত রয়েছেন।
জানা যায়, গত বছরের ১ অক্টোবর ঈশ্বরগঞ্জ উপজেলার জাটিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে নৈশপ্রহরী আরমান হোসেনকে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় তার মা শামসুন্নাহার ঝর্ণা বাদী হয়ে ছয়জনের নাম উল্লেখ করে মামলা করেন। সেই মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন এসআই নজরুল ইসলাম।
চলতি বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি রাতে নজরুল ইসলাম এলাকায় অভিযান চালিয়ে আরিফ বিল্লাহ বাচ্চু, রিফাতুল ইসলাম শাহীন, বাবুল মিয়া ও রোমান মিয়া নামের চার জনকে থানায় আটক করে নিয়ে যান। জিজ্ঞাসাবাদের নামে তাদের মারধর করা হয়। একপর্যায়ে আটকদের ছেড়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে ৫ লাখ টাকা দাবি করেন। অন্যথায় আরমান হত্যা মামলায় তাদের ফাঁসিয়ে দেওয়ার ভয় দেখান। এমতাবস্থায় বাবুলের বাবা মোনায়েম মিয়া এসআই নজরুলের সঙ্গে ৬০ হাজার টাকায় বিষয়টি রফাদফা করেন।
পরে আটক সবাইকে পরদিন রাতে মুক্তি দেওয়া হয়।তবে ছাড়ার আগে ঘুষের টাকায় নিজের পকেটে ভরেন পুলিশের এই কর্মকর্তা। পরে ওই চারজন এলাকায় এসে সবাইকে ঘুষ লেনদেনের ঘটনাটি জানালে সমালোচনা শুরু হয়। বেকায়দায়পরে ১২ মার্চ দুপুরে উপজেলার পৌর বাজারে মোনায়েম মিয়ার কাছে ঘুষের ৫৯ হাজার টাকা ফেরত দেন নজরুল ইসলাম। এদিনই পুলিশ সুপার কাজী আখতার উল আলমের নির্দেশে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (গৌরীপুর সার্কেল) দেবাশীষ কর্মকার তদন্ত শুরু করেন।
নিয়ম অনুযায়ী বরখাস্ত হওয়া এসআই মো. নজরুল ইসলাম শাস্তিকালীন সময়ে শুধু বেতন স্কেল অনুযায়ী অর্ধেক পারিশ্রমিক পাবেন। অন্য কোনো সুবিধা পাবেন না।