সাইফুল ইসলাম তানভীর: দীর্ঘ প্রায় ৮ বছর ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের আয়না ঘরে বন্দি থাকায় আমি সুনিশ্চিতভাবে আমার পিতার মৃত্যুর সংবাদটিও জানতে পারিনি।
শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) বেলা ১২ টার দিকে প্রথমবারের মতো মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে চালা বাজার সংলগ্ন মীর কাশেমের প্রতিষ্ঠিত মসজিদের পাশে বাবার কবর জিয়ারত করতে এসে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের প্রতিষ্ঠাতা কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সভাপতি ও বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সাবেক সদস্য প্রয়াত মীর কাসেম আলীর ছেলে মীর আহমেদ বিন কাশেম (ব্যারিস্টার আরমান) এসব কথা বলেন।

এদিন আহমাদিয়া সুলতানিয়া সামসুল উলুম হাফেজিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানা মসজিদে জুমার নামাজ আদায় শেষে আয়না ঘরের ভয়াবহ অভিজ্ঞতা বর্ণনা করে তিনি বলেন, আমার পিতার মামলায় আমি একজন নিয়োজিত আইনজীবী ছিলাম। ওই মামলার একদম শেষ পর্যায়ের শুনানি চলছিল। এদিকে ফাঁসি কার্যকরের ঠিক ২৩ দিন আগে আমাকে বাসা থেকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। ৮ বছর আমাকে চোখ বেঁধে হাতকড়া পরিয়ে একটি অন্ধকার ঘরে আটকে রাখা হয়। ওই আট বছর আমি জানতে পারিনি আমার পিতার কী হয়েছে। আমার পরিবার জানতে পারেনি আমি কি বেঁচে আছি? না মারা গেছি। ছাত্রদের বিপ্লবের পর আমাকে মুক্ত করা হয়।
তিনি আরও বলেন, আমি মুক্ত হয়ে জানতে পারি, আমার বাবাকে মিথ্যা মামলায় ফ্যাসিস্ট হাসিনা ফাঁসি দিয়েছে। আমি আয়না ঘর থেকে বের হওয়ার পর আমি অসুস্থ হয়ে পড়ি। আমার দুই চোখে ছানি পড়ে গিয়েছিল। আমি চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে গিয়েছিলাম। দেশে ফিরে আমি এই প্রথম মানিকগঞ্জে আমার পিতার কবর জিয়ারতের জন্য আসি।
মীর কাশেম আলীর স্বপ্ন নিয়ে তিনি বলেন, “মানিকগঞ্জ জেলা আমার পিতার পৈতৃক নিবাস। অন্তরের জায়গা। এখানে উনার নাড়ি পোতা রয়েছে। এই মানিকগঞ্জ নিয়ে উনার অনেক স্বপ্ন ছিল, ছিল পরিকল্পনা। মানিকগঞ্জকে তিনি একটি আধুনিক নগর হিসাবে তৈরি করার স্বপ্ন দেখতেন। কিন্তু ফ্যাসিস্ট হাসিনা মিথ্যা মামলায় রাজনৈতিক চক্রান্তে তাকে ফাঁসি দিয়েছে। আপনারা আমার বাবার জন্য দোয়া করবেন।
এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ঢাকা উত্তর অঞ্চলের টিম সদস্য ও মানিকগঞ্জ-৩ আসনের সম্ভব্য সংসদ সদস্য প্রার্থী মাওলানা দেলোয়ার হুসাইন, জেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর হাফেজ মাওলানা কামরুল ইসলাম, সেক্রেটারী মাওলানা নূরুল ইসলাম, জেলা ইমাম সমিতির সভাপতি মাওলানা জাকিরুল ইসলাম খান, হরিরামপুর উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমীর মাওলানা লোকমান হোসেন, সেক্রেটারী মো. ফারুক হোসেন, হরিরামপুর উপজেলা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মো. টিপু সুলতানসহ অন্যান্য নেতাকর্মী ও স্থানীয়রা।