কর্পোরেট ডেস্ক: ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড সেক্রেটারীজ অব বাংলাদেশ (আইসিএসবি)-এর কোয়ালিফাইড চার্টার্ড সেক্রেটারিগণের ৯ম সমাবর্তন বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) ঢাকার বনানীস্থ শেরাটন ঢাকা হোটেলের গ্র্যান্ড বলরুমে অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবর্তন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন প্রধান উপদেষ্টার আন্তর্জাতিক বিষয়ক বিশেষ দূত (উপদেষ্টা পদমর্যাদা) লুৎফে সিদ্দিকী। এছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর এবং বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব (রুটিন দায়িত্ব) মোঃ আব্দুর রহিম খান। কনভোকেশন স্পিকার হিসেবে সমাবর্তনে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন আইসিএসবি-এর ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট এম নুরুল আলম এফসিএস।

প্রধান অতিথি লুৎফে সিদ্দিকী তার বক্তব্যে আইসিএসবি-এর কোয়ালিফাইড চার্টার্ড সেক্রেটারিদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন যে, চার্টার্ড সেক্রেটারীদের জন্য কর্পোরেট সেক্টরে এবং সরকারী পর্যায়ে কাজ করার অমিত সম্ভাবনা রয়েছে, যা দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। তিনি বলেন, চার্টার্ড সেক্রেটারিগণ কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানসমূহ যথাযথ ও নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে পরিচালনায় অন্যতম প্রধান নিয়ামক। তিনি আরও বলেন, চার্টার্ড সেক্রেটারিগণ পেশাগত ক্ষেত্রে সুশাসনের সংস্কৃতির ধারক বাহক। তিনি সকল অভিভাবক ও পরিবারের সদস্যদের শুভেচ্ছা জানান এবং তাদের অবদানের কথা উল্লেখ করেন।
পরিশেষে, তিনি সুশাসন প্রতিষ্ঠায় আইসিএসবি-এর নিরন্তর প্রচেষ্টার জন্য ধন্যবাদ জানান।
বিশেষ অতিথি ড. আহসান এইচ মনসুর তার বক্তব্যে সমাবর্তন দিবসকে স্নাতকদের জীবনের একটি স্মরণীয় মুহূর্ত বলে অভিহিত করেন। তিনি বলেন, অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের মতোই বাংলাদেশেও কর্পোরেট সুশাসনের জন্য এখনও আদর্শ পরিবেশ গড়ে উঠেনি; যার অন্যতম প্রধান কারন কর্মক্ষেত্রে সুশাসনের অভাব। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে নবীন চার্টার্ড সেক্রেটারিগণ দেশে কর্পোরেট সুশাসন নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন। তিনি আসন্ন কর্পোরেট আইন, বিধি ও প্রবিধান এর মাধ্যমে চার্টার্ড সেক্রেটারিগণ কর্পোরেট সংস্কৃতি উন্নয়নে ইতিবাচক ভূমিকা পালন করবেন বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।
অপর বিশেষ অতিথি মোঃ আব্দুর রহিম খান আইসিএসবি-কে তাদের ৯ম সমাবর্তন আয়োজনের জন্য বিশেষ ধন্যবাদ জানান। তিনি বলেন, পেশাগত পরিসরে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় চার্টার্ড সেক্রেটারিগণের বিকল্প নেই যেহেতু তারা পরিচালনা পর্ষদ ও শেয়ারহোল্ডারগণের মধ্যে সেতুবন্ধন হিসেবে কাজ করেন। তিনি আইসিএসবি-এর স্নাতকদের সাফল্যের জন্য আন্তরিক অভিনন্দন জানান এবং তাদের পেশাগত জীবনের জন্য শুভকামনা জানান।
কনভোকেশন স্পিকার অধ্যাপক ড. নিয়াজ আহমেদ খান কর্পোরেট সুশাসনকে একটি বড় ধরনের সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করেন, যা দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে ব্যাহত করছে। তিনি বলেন আমাদের জাতীয় পর্যায় সহ সার্বিক ক্ষেত্রেই সুশাসনের গুরুত্ব রয়েছে। তিনি নবীন চার্টার্ড সেক্রেটারিদের জীবনে সফলতার জন্য ‘ওয়ার্ক-লাইফ ব্যালেন্স’ রেখে কাজের পরামর্শ দেন এবং জীবনের প্রতিটি সুযোগ ইতিবাচকভাবে গ্রহন ও কর্মক্ষেত্রে ব্যবহারের আহবান জানান। তিনি সকল স্নাতককে অভিনন্দন জানান এবং পেশাগত সুশাসন প্রতিষ্ঠায় আইসিএসবি-এর নিরলস প্রচেষ্টার ভূয়সী প্রশংসা করেন।
অনুষ্ঠানের সভাপতি এম. নুরুল আলম এফসিএস সমাবর্তনকে জীবনের একটি বিশেষ দিন হিসেবে উল্লেখ করেন ও সকল কোয়ালিফাইড চার্টার্ড সেক্রেটারীগণকে অভিনন্দন জানান। একইসঙ্গে, তিনি শিক্ষকমণ্ডলী, পৃষ্ঠপোষক, অভিভাবক এবং পরিবারের সদস্যদের অবদানের জন্য বিশেষ ধন্যবাদ জানান এবং সমাবর্তন অনুষ্ঠানটিকে প্রাণবন্ত করে তোলার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, পেশাগত শিক্ষার কোন সমাপ্তি নেই; সমাবর্তনের মধ্য দিয়ে তাদের এক নতুন জীবনের সূচনা হয়েছে। এই নতুন অধ্যায়ের জন্য আন্তরিক শুভেচ্ছা প্রদানের মাধ্যমে তার বক্তব্য শেষ হয়।
সমাবর্তনে চার্টার্ড সেক্রেটারী কোর্স সম্পন্নকারী উল্লেখযোগ্য সংখ্যক কোয়ালিফাইড চার্টার্ড সেক্রেটারি অংশগ্রহণ করেন। আইসিএসবি-এর শিক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান আবুল ফজল মোহাম্মদ রুবাইয়াত এফসিএস অনুষ্ঠানে ‘সমাবর্তন প্রোফাইল’ উন্মোচন করেন। আইসিএসবি-এর পরীক্ষা কমিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম ভূঁইয়া এফসিএস কোয়ালিফাইড চার্টার্ড সেক্রেটারিদের পরিচয় করিয়ে দেন এবং প্রধান অতিথি তাদের সনদ প্রদান করেন। পরিশেষে, আইসিএসবি-এর ট্রেজারার মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন এফসিএস এর আনুষ্ঠানিক ধন্যবাদ প্রদানের মাধ্যমে সমাবর্তন অনুস্থানটি সমাপ্ত হয়।


