কর্পোরেট সংবাদ ডেস্ক : সারা দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রতিদিন গড়ে ১৪ জনের মৃত্যু হচ্ছে। এর মধ্যে বাস, ট্রাক, ব্যক্তিগত গাড়ি (প্রাইভেট কার), মাইক্রোবাস, পিকআপ ভ্যানের চালক ও শ্রমিক মারা যাচ্ছেন গড়ে প্রতিদিন প্রায় দুজন। আর মোটরসাইকেলের চালক বা আরোহী মারা যাচ্ছে দুজনের বেশি।
নিরাপদ সড়ক চাই (নিসচা) সংগঠনের ১১ বছরের (২০১২ থেকে ২০২২) বার্ষিক প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
তথ্যানুযায়ী, ২০১২ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত সারা দেশে মোট ৩৭ হাজার ৮৪৭টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৫৭ হাজার ৭০ জনের মৃত্যু হয়েছে। এ ছাড়া আহত হয়েছেন ৮৭ হাজার ৬৬৭ জন।
এ ছাড়া গত পাঁচ বছরে (২০১৮ থেকে ২০২২) সড়ক দুর্ঘটনায় পরিবহন চালকের মৃত্যুর আলাদা প্রতিবেদন প্রকাশ করছে নিসচা।
এতে দেখা গেছে, ওই সময়ে সারাদেশে সড়ক দুর্ঘটনায় ৭ হাজার ৩৩ জন চালক-শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে মোট মৃত্যুর চার হাজার ৫৯৫ জন মোটরসাইকেল চালক বা আরোহী। এ ছাড়া বাসের চালক ও সহকারী রয়েছে ২১৬ জন, ট্রাকের চালক ও সহকারী ৩৯২ জন এবং কার-মাইক্রোবাস, পিকআপ ভ্যানসহ অন্যান্য যানের এক হাজার ৮২০ জন চালক ও শ্রমিক মারা গেছেন।
নিসচার তথ্য বলছে, পাঁচ বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় মৃত্যু বাড়ছে। ২০১৮ সালে যেখানে মৃত্যুর সংখ্যা ছিল ১৬০, সেখানে ২০২২ সালে এসে সেই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৬১৮। পাঁচ বছরে দুর্ঘটনায় ২১৬ জন বাসের চালক ও শ্রমিক মারা গেছেন। আবার বাসের চেয়ে ট্রাকে চালকের মৃত্যু বেশি। এই সময়ে ৩৯২ জন ট্রাকচালক ও শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে।
এ বিষয়ে যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ে নানান ইউনিটে প্রতিবছর ৩০ থেকে ৩৫ হাজার কোটি টাকার বাজেট বরাদ্দ থাকে। কিন্তু সড়ক দুর্ঘটনা প্রতিরোধে মন্ত্রণালয়ে কোনো গবেষক বা বরাদ্দ নেই। চালকের বেতন ও কর্মঘণ্টা সুনির্দিষ্ট করা দরকার। যান্ত্রিক ও অযান্ত্রিক যানবাহন আলাদা করা জরুরি।
চালকদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা গেলে এবং ই-ট্রাফিকিং সিস্টেম চালু হলে সড়কে দুর্ঘটনা ৮০ শতাংশ কমে আসবে বলে মনে করেন তিনি।
নিসচার চেয়ারম্যান ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার কারণগুলো সহজে বোঝা যায়। কিন্তু পণ্যবাহী ট্রাক তো এমনিতেই ধীরগতিতে চলে। এতে কেন এত মৃত্যু সেটা নিয়ে আলাদা গবেষণা দরকার।
তবে সড়ক দুর্ঘটনায় মৃত্যুর এই এক পরিসংখ্যানই যে চূড়ান্ত, তা কিন্তু নয়। দেশে একাধিক সংগঠন সড়ক দুর্ঘটনা নিয়ে প্রতিবেদন তৈরি করে থাকে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা যায়, বিভিন্ন জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকা থেকে সড়ক দুর্ঘটনার তথ্য সংগ্রহ করে প্রতিবেদন তৈরি করা হয়। আর এক সংগঠনের পরিসংখ্যানের আরেক সংগঠনের পরিসংখ্যানের খুব একটা মিল পাওয়া যায় না।