অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক : দেশের ব্যাংক খাতে এখন বড় সমস্যা খেলাপি ঋণ। ডিসেম্বর শেষে বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ছিল ৫৬ হাজার ৪৩৮ কোটি টাকা। জুন শেষে এসব ব্যাংকের খেলাপি ঋণ দাঁড়িয়েছে ৭৩ হাজার ৬৩৫ কোটি টাকা। অর্থাৎ চলতি বছরের প্রথম ৬ মাসে বেসরকারি ব্যাংকের খেলাপি ঋণ বেড়েছে ১৭ হাজার ১৯৭ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের প্রথম তিন মাসে (জানুয়ারি-মার্চ) বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ বেড়েছিল ৯ হাজার ৪৫১ কোটি টাকা। এর পরের তিন মাসে বেড়েছে ৭ হাজার ৭৪৬ কোটি টাকা। এর ফলে জুন শেষে খেলাপি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৭৩ হাজার ৬৩৫ কোটি টাকায়।
অর্থনীতিবিদরা বলছেন, রাষ্ট্রয়াত্ত ও বেসরকারি খাতের ব্যাংকগুলোতে খেলাপি ঋণের পরিমাণ পাল্লা দিয়ে বাড়ছে। খেলাপি এখন একধরনের সংস্কৃতিতে পরিণত হয়েছে। ঋণ নেওয়ার সময়েই অনেকের ইচ্ছে থাকে পরিশোধ না করার। ব্যাংক খাত থেকে ঋণ নিয়ে অনেকেই খুব সহজে পার পেয়ে যাচ্ছে। অনিয়মের মাধ্যমে অনেক ঋণ বের হয়। এধরনের ব্যাংকে জবাবদিহিতার কোনো যায়গা নেই।
তথ্য অনুযায়ী, জুন শেষে ব্যাংক খাতের মোট খেলাপি দাঁড়িয়েছে ১ লাখ ৫৬ হাজার ৪০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ৭৪ হাজার ৭৫৪ কোটি টাকা খেলাপি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকে। আর বেসরকারি ব্যাংকে রয়েছে ৭৩ হাজার ৬৩৫ কোটি টাকা। এছাড়া বিদেশি ব্যাংকগুলোতে ৩ হাজার ১৯৭ কোটি টাকা এবং বিশেষায়িত ব্যাংকে ৪ হাজার ৪৫৩ কোটি টাকা খেলাপি রয়েছে।
খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনতে বাংলাদেশ ব্যাংক ইতিমধ্যে বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে। খেলাপির সমস্যায় থাকা ব্যাংকগুলোর সাথে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর করেছে আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা। এছাড়া সংকট মোকাবেলায় তারা বাংলাদেশ ব্যাংকের অভ্যন্তরীণ পরিদর্শন জোরদার করে নিয়মনীতিকে আরও শক্তিশালী করেছে বলেও এক প্রতিবেদনে জানানো হয়।
এছাড়া, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রম্পট কারেকশন অ্যাকশন (পিসিএ) সংক্রান্ত নির্দেশিকাও জারি করা বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এই নির্দেশিকার জারি হলে, বাংলাদেশ ব্যাংক দুর্বল ব্যাংকগুলোকে ঘিরে দ্রুত সংশোধনমূলক ব্যবস্থা নিতে পারবে।