স্পোর্টস ডেস্ক : বর্তমান সময়টা ভালো যাচ্ছে না বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের। ভারত সিরিজ হারার পর ঘরের মাঠে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষেও প্রথম ম্যাচে হেরেছে টাইগাররা। দলের মধ্যে আত্মবিশ্বাস এবং টিম স্পিরিটও খুব একটা লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। এমন করুণ অবস্থায় টাইগারদের নেতৃত্ব দিতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন নাজমুল হোসেন শান্ত। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে চলমান সিরিজ শেষে অধিনায়কত্ব ছাড়তে চাইছেন তিনি।
গত ওয়ানডে বিশ্বকাপের পর অধিনায়কত্ব থেকে সরে দাঁড়ান সাকিব আল হাসান। এরপর চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে নাজমুল হোসেন শান্তকে তিন ফরম্যাটের অধিনায়ক করে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। কিন্তু তার নেতৃত্বে ভালো কিছু করতে পারেনি টাইগাররা। সেই সঙ্গে হারিয়ে গেছে শান্ত ব্যক্তিগত পারফরম্যান্স। তাই অধিনায়কত্ব থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন এই বাঁহাতি ব্যাটার।
শনিবার (২৬ অক্টোবর) বিসিবির এক কর্মকর্তার বরাত দিয়ে এই তথ্য নিশ্চিত করেছে ক্রিকেটভিত্তিক ভারতীয় ওয়েবসাইট ক্রিকবাজ।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে থেকেই রান নেই শান্তর ব্যাটে। ভালো শুরু করলেও বড় ইনিংস খেলতে বার বার ব্যর্থ হচ্ছেন তিনি। তাই তাই নিজের পারফরম্যান্সে উন্নতি করতে নিজের ওপর থেকে নেতৃত্বের চাপ সরাতে চান তিনি।
চলমান দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজের পর অধিনায়কত্ব থেকে সরে দাঁড়ানো সিদ্ধান্ত নিয়েছেন শান্ত। যা ইতোমধ্যেই বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকে (বিসিবি) জানিয়েছেন তিনি। মূলত, নিজের পারফরম্যান্সে মনোযোগ বাড়াতেই এমন সিদ্ধান্ত নিচ্ছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।
ক্রিকবাজ বলছে, বিসিবির বেশ কয়েকজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা শান্তকে অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিলেও সেটাতে রাজী হননি তিনি। এমনকি গত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পরই এই ফরম্যাটের নেতৃত্ব ছাড়তে চেয়েছিলেন তিনি। এবার সরে দাঁড়াচ্ছেন তিন ফরম্যাট থেকেই। তবে এখন পর্যন্ত শান্তর অধিনায়কত্ব ছাড়ার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি বোর্ড।
এর আগে চলতি বছরের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর টি-টোয়েন্টি ফরম্যাটের নেতৃত্ব ছাড়তে চেয়েছিলেন শান্ত। তবে এখন সেই সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসে তিন ফরম্যাটেরই অধিনায়কত্ব ছাড়তে চাইছেন তিনি।
বিসিবির আরেক পরিচালক ক্রিকবাজকে জানিয়েছেন, যদি শান্তকে কোনোভাবে অধিনায়কত্ব করার জন্য রাজি করানো সম্ভব না হয়, তবে দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজের পর ওয়ানডে এবং টেস্টের অধিনায়কত্ব পেতে পারেন মেহেদী হাসান মিরাজ। টি-টোয়েন্টির নেতৃত্বের দায়িত্ব পেতে পারেন তরুণ তাওহীদ হৃদয়।
জানা গেছে, ওমরাহ পালন করে সভাপতি ফারুক আহমেদ দেশে আসলে এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে বিসিবি। শান্তর নেতৃত্ব ছাড়া প্রসঙ্গে বিসিবির এক কর্মকর্তা ক্রিকবাজকে বলেছেন, সে আমাদের জানিয়েছে, দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ শেষে সে আর দলকে নেতৃত্ব দিতে চায় না।
উল্লেখ্য, আগামী ২৯ অক্টোবর সিরিজের দ্বিতীয় ম্যাচে মাঠে বাংলাদেশ ও দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হবে চট্টগ্রামে।
নাজমুল শান্ত ৯ টেস্টে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং তিনটি জয় ও ছয়টি পরাজয় নিয়ে মাঠ ছেড়েছেন। তার নেতৃত্বে সবচেয়ে বড় অর্জন পাকিস্তানের মাটিতে তাদের বিরুদ্ধে প্রথম টেস্ট সিরিজ জয়। এছাড়াও ৯টি ওয়ানডেতে নেতৃত্ব দিয়ে ৬ হারের বিপরীতে জয় ৩টিতে। ২৪ টি-টোয়েন্টিতে নেতৃত্ব দিয়ে জয় পেয়েছেন ১০টিতে।