নিজস্ব প্রতিবেদক : দুবাই ভিত্তিক বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান অ্যাডসাম ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট এলএলসি বেক্সিমকো গ্রুপের চারটি কোম্পানি কিনতে চায়। কোম্পানি চারটি হচ্ছে- বেক্সিমকো লিমিটেড, বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড, তিস্তা সোলার লিমিটেড ও বেক্সিমকো কমিউনিকেশনস লিমিটেড।
প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে বাংলাদেশের অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা সালেহউদ্দিন আহমেদের কাছে বেক্সিমকোর প্রতিষ্ঠানগুলো কেনার আগ্রহের কথা জানিয়ে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছে। চিঠিতে বলা হয়েছে, দুবাইভিত্তিক বিনিয়োগকারীদের একটি কনসোর্টিয়াম কোম্পানি চারটি কিনতে আগ্রহী। এ বিষয়ে সরকারের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে চিঠিতে।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা চিঠিটি “পর্যালোচনা ও পরীক্ষা করার” জন্য বাণিজ্য সচিবের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছেন। অর্থমন্ত্রণালয়ের বরাত দিয়ে ইংরেজী দৈনিক টিবিএস এ বিষয়ে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছে।
সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপদেষ্টা সালমান এফ রহমানের নিয়ন্ত্রণাধীন বেক্সিমকো গ্রুপের প্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রশাসক বসানোর জন্য গত ৫ সেপ্টেম্বর আদালত একটি নির্দেশনা জারি করেছেন। বেক্সিমকোর পক্ষ থেকে এ নির্দেশনা স্থগিত চেয়ে আপিল করা হয়েছে। অন্যদিকে সালমান এফ রহমান বর্তমানে জেলে আছেন। তার বিরুদ্ধে একাধিক হত্যা মামলা হয়েছে।
অ্যাডসামের চিঠিতে বলা হয়েছে, সরকার যদি বেক্সিমকোর কোম্পানিগুলো বিক্রি অথবা পুনর্গঠন করতে চায়, তাহলে সেগুলো কিনে নিতে তারা আগ্রহী।
তবে বিদ্যমান আইনে এভাবে কোনো কোম্পানি বিক্রি করার সুযোগ নেই। যদি কোনো কোম্পানি ঋণ খেলাপি হয়ে পড়ে এবং ঋণদাতা প্রতিষ্ঠান অর্থ ঋণ আদালতে মামলা করেন সে ক্ষেত্রেই কেবল এমন সুযোগ তৈরি হতে পারে। আদালত কোম্পানির সম্পদ বিক্রি করে ঋণ সমন্বয়ের আদেশ দিলে নিলামে তা বিক্রি করা সম্ভব। বেক্সিমকোর কোম্পানিগুলোর ক্ষেত্রে এখনো এমন অবস্থা তৈরি হয়নি।
বেক্সিমকো গ্রুপের কর্ণধার ও সহ-সভাপতি সালমান এফ রহমানের ছেলে আহমেদ শায়ান ফজলুর রহমান সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, “আমরা বেক্সিমকোতে এমন কোনো প্রস্তাব পাইনি।”
অ্যাডামস চিঠিতে আরও উল্লেখ করেছে, “অধিগ্রহণের আগ্রহ প্রকাশ অবশ্যই স্বাভাবিক এবং যথাযথ পদ্ধতি ও মূল্যায়ন প্রক্রিয়ার উপরে নির্ভরশীল। এতে সতর্কতা হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে, যে কোম্পানিগুলোকে চলমান সত্তা হিসেবে বিক্রি করতে হবে এবং বিক্রির সময় প্রশাসক নিয়োগ অবস্থায় থাকতে পারবে না। আমাদের প্রস্তাবটি বাধ্যতামূলক নয় এবং আরও পর্যাবেক্ষণ সাপেক্ষ। আপনি বুঝতে পারবেন, যে কোনো প্রস্তাব দেওয়া হলে তার বিভিন্ন উপাদান নিয়ে বিবেচনা করা উচিত এবং নিয়ন্ত্রক ও আইনি আনুষ্ঠানিকতাগুলো সঠিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পূরণ করা আবশ্যক।”
এস আলম এবং বেক্সিমকোগ্রুপ বিভিন্ন ব্যাংক থেকে নামে বেনামে ঋণের আড়ালে হাজার হাজার কোটি টাকা বের করে নিয়ে গেছে। এ অবস্থায় বিভিন্ন ব্যাংকে থাকা এস আলম গ্রুপের শেয়ার সরকারের জিম্মায় চলে গেছে। গ্রুপটি তাদের নেওয়া ঋণের অর্থ ফেরত না দিলে ওই শেয়ার বিক্রি করে তা সমন্বয় করা হবে বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। পাশাপাশি এস আলম গ্রুপের কোনো সম্পদ না কেনার জন্য সবাইকে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে আদালত বেক্সিমকোর সম্পদ কোম্পানিগুলোতে যুক্ত করে সেগুলোতে প্রশাসক বসানোর আদেশ দিয়েছেন।