স্পোর্টস ডেস্ক : বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) প্রধান কোচের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া হলো হাথুরুসিংহকে। মঙ্গলবার (১৫ অক্টোবর) মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে এক সংবাদ সম্মেলনে বিসিবি সভাপতি ফারুক আহমেদ হাথুরুকে বরখাস্তের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে ফারুক বলেন, বরখাস্ত করার আগে আমরা তাঁকে নিয়ম মেনে শোকজ নোটিশ করেছি। ৪৮ ঘণ্টার জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছে তাঁকে। এরপর আমরা বরখাস্ত করব। চ্যাম্পিয়নস ট্রফি পর্যন্ত কোচ ফিল সিমন্স। মূলত অসাদাচরণের জন্যই হাথুরুসিংহেকে বরখাস্ত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বিসিবি সভাপতি।
তিনি আরো বলেন, ‘বর্তমান কোচের ব্যাপারে আমরা চেষ্টা করছিলাম মানিয়ে নিতে। দুই-তিনটা ঘটনা ঘটেছে। ইচ্ছেমতো ছুটি কাটানো, জাতীয় দলের খেলোয়াড়ে গায়ে হাত তোলার মতো ঘটনা কোনোভাবেই দলের জন্য ভালো উদাহরণ ছিল না। তাই তাকে ৪৮ ঘণ্টার শোকজ ও সাসপেনশন দেওয়া হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই এটা স্থায়ী হয়ে যাবে।’
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সিরিজ শুরু হওয়ার মাত্র পাঁচ দিন আগে জাতীয় দলের প্রধান কোচের দায়িত্ব থেকে এই শ্রীলঙ্কানকে অব্যাহতি দিলো বিসিবি।
পাকিস্তানের বিপক্ষে দলের দারুণ পারর্ফমের পর এক প্রকার টিকে গিয়েছিলেন হাথুরু। তবে ভারতের বিপক্ষে লজ্জার হোয়াইটওয়াশের পর সমালোচনার তির আবার ঘুরে আসে তার দিকে। শেষ পর্যন্ত আজ বাংলাদেশ ক্রিকেটে অধ্যায় শেষ হলো হাথুরুসিংহের।
বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের কোচ হিসেবে এটা ছিল হাথুরুসিংহের দ্বিতীয় অধ্যায়। প্রথমবার বাংলাদেশের কোচের দায়িত্বে ছিলেন ২০১৪ সালের মে থেকে ২০১৭ সালের অক্টোবর পর্যন্ত। সেবার হাথুরুসিংহে নিজেই কোচের দায়িত্ব ছেড়ে দিয়েছিলেন। বাংলাদেশ দলের দক্ষিণ আফ্রিকা সফরের মাঝপথে তিনি ই-মেইলের মাধ্যমে পদত্যাগপত্র পাঠিয়ে দেন। সেবার তার সঙ্গে চুক্তি ছিল ২০১৯ বিশ্বকাপ পর্যন্ত। বাংলাদেশের দায়িত্ব ছেড়ে দেওয়ার মাসখানেক পরই শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট দলের কোচ হিসেবে যোগ দিয়েছিলেন হাথুরুসিংহে।
দ্বিতীয় মেয়াদে ২০২৩ সালে বাংলাদেশের কোচ হয়ে আসেন শ্রীলঙ্কার কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। ৩৫ হাজার ডলারে তার সঙ্গে চুক্তি করা হয়েছিল বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের পক্ষ থেকে। যে চুক্তির মেয়াদ ছিল ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। তবে চুক্তি অনুযায়ী মেয়াদ পূরণ না করে এবারও বরখাস্ত করা হলো হাথুরুসিংহেকে।
দ্বিতীয় মেয়াদে হাথুরুর অধীনে ১০টি টেস্ট, ৩৫টি ওয়ানডে ও ৩৫টি টি-টোয়েন্টি খেলেছে বাংলাদেশ। টেস্টে হারজিত সমানে সমান- ৫টি জয় ও ৫টি হার। তবে ওয়ানডেতে ফল ছিল হতাশাজনক- ৩৫ ম্যাচে ১৩টি জয়, হার ১৯টি, ৩ ম্যাচে ফল হয়নি। টি-টোয়েন্টিতে ৩৫ ম্যাচের ১৯টিতে জিতেছে বাংলাদেশ, হেরেছে ১৫টি, একটিতে ফল হয়নি।