নিজস্ব প্রতিবেদক : ভারতের বিশেষ অনুরোধে দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে বলে জানিয়েছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।
রোববার (২২ সেপ্টেম্বর) সচিবালয়ে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে এক সভায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ কথা জানান।
উপদেষ্টা বলেন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয় স্বাধীনভাবে ইলিশ রপ্তানির অনুমোদন দিয়েছেন। তারা একটা অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে এ অনুমোদন দিয়েছেন। দুর্গাপূজা উপলক্ষ্যে ভারতের বিশেষ অনুরোধ ছিল। সে অনুযায়ী তারা করেছেন। এর সঙ্গে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের কোনো সম্পর্ক নেই। আমাদের সেই কমিটমেন্টটা এখনো আগের মতোই আছে, আমরা বাংলাদেশের মানুষের জন্য ইলিশের প্রাপ্যতা যেন নিশ্চিত করতে পারি।
রপ্তানি করলেই ইলিশের দাম বেড়ে যাবে না উল্লেখ করে মৎস্য উপদেষ্টা বলেন, দাম বেড়ে যাবে, এটাও ঠিক না। অনেক ইলিশ আছে দেশে। গতবারও তারা কম ইলিশ নিয়েছে। রপ্তানির খবরে দাম বাড়লে ব্যবস্থা নেব। দামের বিষয়টি আমরা প্রতিনিয়তই মনিটরিং করছি, মজুদ হয় কিনা দেখা হচ্ছে। সরকার যেকোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতেই পারে। আমরা আমাদের কাজে যদি অবহেলা করে থাকি, তাতে দেশের ক্ষতি, জনগণের ক্ষতি হলে সেই দায় আমরা নেব।
বাংলাদেশের ইলিশ রপ্তানি করবেন কিনা বা বন্ধের কোনো ব্যবস্থা নেবেন কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, রপ্তানি বন্ধের দায়িত্ব তো আমার না। আমি আহ্বান জানাতে পারি কিন্তু বন্ধ করতে পারি না। আমিতো আহ্বান আগেই জানিয়েছি। এখন তারা বলছে দুর্গাপূজা উপলক্ষে বিশেষ অনুরোধে এ অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। সেক্ষেত্রে আমিতো জোর করে কিছু করতে পারি না।
মাছ তো আপনার সে বিষয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কীভাবে সিদ্ধান্ত নেয়- জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আপনারা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে গিয়ে বলুন। মাছ আমার ঠিক আছে। আরো অন্যান্য পণ্যও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় রপ্তানি করে। সেগুলো কী বাণিজ্য মন্ত্রণালয় উৎপাদন করে। কিন্তু রপ্তানি বা আমদানির সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের আছে। ধর্মীয়ভাবে ইলিশের সঙ্গে পূজার কোনো সম্পর্ক নেই। উৎসবে আমরা ভালো খাবার খাই তার অংশ হিসেবে তারা নিতে চাচ্ছে।
দুর্গাপূজা উপলক্ষে বেশ কয়েক বছর ধরেই বাংলাদেশ থেকে ভারতে রপ্তানি করা হয় ইলিশ মাছ। তবে এবার তা নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছিল। গত ১১ আগস্ট দেশের মানুষের চাহিদা মিটিয়ে তারপর ইলিশ মাছ বিদেশে রপ্তানি করা হবে বলে জানিয়েছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার।
ইলিশ রপ্তানি বন্ধ করা হবে কি না, প্রশ্ন করলে ওইদিন তিনি বলেন, দেশের মানুষ যাতে ইলিশ মাছ পায় এবং দাম কমে, সেই উদ্যোগ নেওয়া হবে। দেশের মানুষ ইলিশ পাবে না, আর রপ্তানি হবে সেটা হতে পারে না।
এ নিয়ে আলোচনার মধ্যেই গতকাল শনিবার বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের জারি করা এক আদেশে ভারতে ৩ হাজার টন ইলিশ মাছ রপ্তানির অনুমোদন দেওয়া হয়।
এদিকে, প্রজনন মৌসুম হওয়ায় আগামী ১৩ই অক্টোবর থেকে ৩রা নভেম্বর পর্যন্ত ইলিশ ধরায় নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়। ইলিশের নিরাপদ প্রজননের লক্ষ্যে সারাদেশে ২২ দিন ইলিশ আহরণ, পরিবহন, কেনাবেচা, মজুত ও বিনিময় নিষিদ্ধের কথা জানান মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা।