September 21, 2024 - 12:34 am
তথ‌্য অ‌ধিদপ্ত‌রের নিবন্ধন নম্বরঃ ৭৭
Homeসারাদেশ ও রাজনীতিসারাদেশচুয়াডাঙ্গা জেলা ক্রীড়া অফিসারের পদত্যাগের দাবিতে ক্রীড়া সংগঠকদের মানবন্ধন

চুয়াডাঙ্গা জেলা ক্রীড়া অফিসারের পদত্যাগের দাবিতে ক্রীড়া সংগঠকদের মানবন্ধন

spot_img

আহসান আলম, চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি: চুয়াডাঙ্গা জেলা ক্রীড়া অফিসার আমানউল্লাহ আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেছে জেলার বর্তমান এবং সাবেক ক্রীড়াবিদ ও ক্রীড়া সংগঠক।

আজ রবিবার বেলা ১১টার দিকে চুয়াডাঙ্গা জেলা ক্রীড়া অফিসের সামনে এ কর্মসূচি পালন করা হয়। মানববন্ধন শেষে বিক্ষোভ মিছিল করে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যান তারা। পরে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক বরাবর স্বারকলিপি পেশ করেন জেলার বর্তমান এবং সাবেক ক্রীড়াবিদ ও ক্রীড়া সংগঠকরা।

মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন চুয়াডাঙ্গা জেলার ক্রীড়া সংগঠক রাফিতুল্লাহ মহলদার, ফুটবল দলের সাবেক খেলোয়ার আব্দুস সালাম, সাবেক অধিনায়ক বিপুল হাসান হ্যাজি, ক্রিকেট টিমের সহ অধিনায়ক আশিকুল হক।

ক্রীড়া সংগঠক সেলিমুল হাবিব সেলিমের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময়ে নতুন এক বাংলাদেশ পেয়েছি আমরা। বাংলার মাটিতে এখনো আওয়ামী দোসর চুয়াডাঙ্গা জেলা ক্রীড়া অফিসার মো. আমানউল্লাহ আহমেদ বিভিন্ন ষড়যন্ত্রে লিপ্ত এবং দুর্নীতিবাজদের আশ্রয় দিতে ব্যস্ত। সাবেক জনপ্রশাসন মন্ত্রী মো. ফরহাদ হোসেনের ভাগ্নে আমানউল্লাহ আহমেদ ২০১৯ সাল থেকে চুয়াডাঙ্গা জেলা ক্রীড়া অফিসারের দায়িত্বে আছেন। দীর্ঘদিন এখানে দায়িত্বে থেকে ও মন্ত্রীর ক্ষমতার প্রভাব দেখিয়ে দূর্নীতি করে চলেছেন।

বক্তারা বলেন, চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক ও জেলাবাসী অবগত আছেন তার স্ত্রী মাসুদা বেগম চুয়াডাঙ্গা পৌর ডিগ্রী কলেজের প্রভাষক। ইতিপূর্বে উক্ত ক্রীড়া অফিসার দলীয় প্রভাবখাটিয়ে ক্ষমতার অপব্যবহার করে পৌর কলেজের প্রিন্সিপ্যাল স্যারকে এক মাসের অধিক সময় কারাবদ্ধ করেছিলেন। নিয়মিত অফিস না করেই মাস গেলে বেতন তোলেন এই ক্রীড়া অফিসার। জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ কর্তৃক যে কর্মসূচী ঘোষণা করা হয়, তা বাস্তবায়নের কোন কার্যক্রম করেন না ক্রীড়া অফিসার আমানউল্লাহ আহমেদ। বরাদ্দকৃত ক্রীড়া সামগ্রী সুষ্ঠুভাবে বণ্টন না করায় একাধিকবার তাকে নিয়ে ক্রীড়া অঙ্গনে নানা সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। যা বিভিন্ন মাধ্যমে জেলা প্রশাসন অবগত। স্থানীয় একাধিক পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে অনুর্ধ্ব ১৭ বালিকা টিম গঠনে ব্যপক অনিয়মের চিত্র উঠে আসে ক্রীড়া অফিসারের বিরুদ্ধে। সংবাদ প্রকাশের পর বিষয়টি নজরে আসলে সেই টিমকে বাতিল করে। নতুন টিম পাঠানো হয়েছিলো। যা জেলা প্রশাসক ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক অবগত। পার্শ্ববর্তী মেহেরপুর ও কুষ্টিয়া জেলার ক্রীড়া অফিসার কর্তৃক ক্রীড়া কার্যক্রম উন্নয়নে দৃশ্যমান তবে চুয়াডাঙ্গা জেলার ক্রীড়াঙ্গন সর্বক্ষেত্রে একজন ক্রীড়া অফিসার ক্রীড়া দপ্তরকে কুক্ষিগত করে রেখেছেন। তিনি ক্রীড়া অঙ্গনে বরাদ্দকৃ অর্থ অব্যবহার ও তছরুপ করেছেন।

বক্তারা আরও বলেন, আমানুউল্লাহ আহমেদের কর্মকা- সম্পর্কে চুয়াডাঙ্গাবাসী জানেন। তবে তিনি মন্ত্রীর প্রভাব খাটিয়ে সমাধান করে ফেলতেন। তার বিরুদ্ধে ক্রীড়াবিদদের কথা বলতে দেয়া হয়নি। দলীয় মদদপুষ্ট হয়ে তিনি একের পর এক দুর্নীতি অনিয়ম করেই গেছেন। এই কর্মকর্তা একজন ধূর্ত প্রকৃতির লোক। বাংলাদেশ সরকার পতনের পর বর্তমানে চুয়াডাঙ্গা জেলায় ক্রীড়াঙ্গনে গ্রুপিং সৃষ্টি করে তার ভীত শক্ত করার চেষ্টা করছেন। রং বদলে নতুন বেশ ধারণ করে এখনি আবারও দুর্নীতির ছক কষছেন তিনি।

মূলত, চুয়াডাঙ্গা জেলার ক্রীড়াবিদরা মনে করেন এই ক্রীড়া অফিসার জেলার ক্রীড়াঙ্গনকে ক্ষমতার দাপটে কলুষিত করেছেন। বিভিন্ন সমসয় সাবেক ও বর্তমান খেলোয়াড়দের সাথে বাজে আচরণ তার নিত্যদিনের কাজ ছিলো। দুর্নীতি, অনিয়ম, অর্থ তছরুপ এবং ছদ্দবেশ এই কর্মকর্তার স্বভাবে নিমজ্জিত। এই কর্মকর্তা থাকলে চুয়াডাঙ্গা জেলার ক্রীড়াঙ্গনের উন্নয়ন সম্ভব নয়। শেকড় গেড়ে বসার চেষ্টায় আছেন তিনি।

চুয়াডাঙ্গা জেলার সাবেক ও বর্তমান খেলোয়াড় এবং ক্রীড়া সংগঠকদের দাবি আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ক্রীড়া অফিসার আমানউল্লাহ আহমেদকে পদত্যাগ/বদলী করতে হবে। তা না হলে জেলার সাবেক ও বর্তমান ক্রীড়াবিদ ও ক্রীড়া সংগঠকদের নিয়ে দুর্বার ও বৃহত্তর আন্দোলনে মাঠে নামতে বাধ্য হবো আমরা।

স্বারকলিপি প্রদাণকালে চুয়াডাঙ্গার জেলা প্রশাসক ড. কিসিঞ্জার চাকমা বলেন, আপনাদের দাবি সম্মলিত স্বারকলিপি আমি যথাযথ স্থানে আজকেই পাঠাবো এবং প্রয়োজনীয় কথা বলবো। আপনারা সকলে মিলে চুয়াডাঙ্ড়ার ক্রীড়াঙ্গনকে গতিশীল করুন।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

সর্বশেষ সংবাদ