স্পোর্টস ডেস্ক : রাওয়ালপিন্ডিতে পাকিস্তানের বিপক্ষে ১০ উইকেটের ঐতিহাসিক টেস্ট জয়ে ম্যাচ সেরা হয়েছেন বাংলাদেশের অভিজ্ঞ ব্যাটার মুশফিকুর রহিম। তার ‘ম্যান অব দ্য ম্যাচ’-এর পুরস্কারের অর্থ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের দান করার ঘোষনা দিয়েছেন মুশফিক।
সিরিজের প্রথম টেস্টের প্রথম ইনিংসে ১৯১ রানের নান্দনিক ইনিংস খেলেন মুশফিক। তার দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে পাকিস্তানের বিপক্ষে ১৪তম টেস্ট ম্যাচে প্রথম জয়ের স্বাদ পায় বাংলাদেশ। নিজেদের টেস্ট ইতিহাসে এই প্রথম ১০ উইকেটেও ম্যাচ জিতলো টাইগাররা।
ম্যাচ শেষে পুরস্কার বিতরনী অনুষ্ঠানে মুশফিক বলেন, ‘বাংলাদেশে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ মানুষদের জন্য আমার ম্যাচ সেরা পুরস্কারের অর্থ দান করতে চাই। দেশের সকলকে বন্যার্তদের সহায়তার এগিয়ে আসতে অনুরোধ করছি।’
প্রথম ইনিংসে খুবই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে বেশ কয়েকটি জুটি গড়েছেন মুশফিক। ফলে প্রথম ইনিংসে ৫৬৫ রানের বিশাল স্কোর গড়ে টাইগাররা। যা পাকিস্তানের বিপক্ষে সর্বোচ্চ দলীয় রান বাংলাদেশের। তার নান্দনিক ইনিংসটি বিদেশের মাঠে পাকিস্তানের বিপক্ষে ঐতিহাসিক জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
১৯১ রানের ইনিংসটি ক্যারিয়ারের সেরা ইনিংসগুলোর একটি বলে জানান মুশফিক। তিনি বলেন, ‘এটি এখন পর্যন্ত আমার সেরা পারফরমেন্সের একটি। বিদেশের মাটিতে আমরা সত্যিই ভালো করিনি। তাই দল হিসাবে আমাদের লক্ষ্য ছিলো যাতে ভালো পারফরমেন্স করতে পারি, তাহলে সবাই দেখবে আমরা বিদেশের মাটিতেও ব্যাটিংয়ে উন্নতি করেছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি মনে করি, সিরিজের আগে পাকিস্তানে এবং দেশের মাটিতে সকল খেলোয়াড় যেভাবে নিজেদের প্রস্তুতি নিয়েছে সেজন্য এই জয়ের কৃতিত্ব সবাইকে দিতে হবে। আমি সত্যিই খুশি, তাদের কাছ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা পেয়েছি।’
টেস্টেও আগে যে ধরণের অনুশীলন সেশন হয়েছিলো, সেটি টেস্ট ক্রিকেটে সাফল্যের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ছিল বলে মনে করেন মুশফিক। কারন টেস্ট ফরম্যাটে দুর্বল বলে মনে করা হয় বাংলাদেশকে।
মুশফিক বলেন, ‘টেস্ট সিরিজের আগে ঘটে যাওয়া কিছু কথা শেয়ার করতে চাই। এই সিরিজের আগে দুই বা প্রায় আড়াই মাসের বিরতি ছিলো। আমরা বাংলা টাইগার্সের হয়ে ঘরের মাঠে বিশেষ ক্যাম্প করেছি। সেখানে স্থানীয় সাপোর্ট স্টাফদের সহায়তা ছিলো। এটি টেস্টের প্রস্তুতি সকলের জন্য সত্যিই উপকারী ছিল।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিশেষ করে টেস্ট খেলোয়াড়দের জন্য এই ধরনের সেশন খুব কাজে এসেছে। কারণ অন্য খেলোয়াড়রা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলেছিল। তাই এটি সত্যিই অনেক উপকারী ছিলো। দেশের মত একইরকম আবহাওয়া ছিল। ঐ অভিজ্ঞতা কাজে লেগেছে এবং ক্যাম্পে থাকা সকল সাপোর্ট স্টাফকে ধন্যবাদ দিতে চাই।’
নিজেকে সবচেয়ে বেশি বয়সী খেলোয়াড় ভাবতে নারাজ মুশফিক। যতদিন সম্ভব খেলার প্রতি মনোযোগী থাকতে চান তিনি। মুশফিক বলেন, ‘আমি কখনই মনে করি না যে আমি সবচেয়ে বয়সী বা আমি সবচেয়ে অভিজ্ঞ। কারণ দলের সবাইকে দেখলে মনে হয় আমি সৌভাগ্যবান দেশের হয়ে আরেকটি টেস্ট খেলতে পারছি। আমি শুধু আমার শতভাগ মাঠে দেওয়ার চেষ্টা করি। যাতে দলের জন্য অবদান রাখতে পারি এবং অন্যরা অনুপ্রাণিত হয়। এজন্যই আমি এখানে আছি এবং এমন আবেগেই প্রতিদিন এগিয়ে যাচ্ছি।’