মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি : ২ কোটি টাকা চাঁদাবাজির মামলা আদালতে বিচারাধীন থাকা অবস্থায় আবারো মানিকগঞ্জের সিংগাইর উপজেলার বিন্নাডাঙ্গী মজাকাত হারুন প্রকল্পে তিন কোটি টাকা চাঁদার দাবিতে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাটের অভিযোগ পাওয়া গেছে।
শুক্রবার (২৩ আগষ্ট) রাতে ওই প্রকল্পের ম্যানেজার মো: খোরশেদ আলম বাদী হয়ে ঘটনার সাথে জড়িত সানোয়ার হোসেন সহ অজ্ঞাত ২০-২৫ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযুক্ত সানোয়ার হোসেন সিংগাইর উপজেলার জামির্ত্তা ইউনিয়নের বিন্নাডাঙ্গী গ্রামের তোফাজ্জল ফকিরের পুত্র। তিনি নিজেকে উপজেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক পরিচয় দিয়ে বেড়াচ্ছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তার এমন কর্মকান্ড নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়েছে।
থানায় করা অভিযোগ ও স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত ২১ আগস্ট রাত আনুমানিক ৮ টার দিকে সানোয়ার হোসেনের নেতৃত্বে অজ্ঞাত ২০-২৫ জন বিন্নাডাঙ্গী মাজাকাত হারুন প্রকল্পে হামলা চালিয়ে ৪৫ লাখ টাকার মালামাল লুট করে। সেই সঙ্গে কোম্পানির সেমি পাকা ঘর ভাঙচুর করে ৫ লাখ টাকা ক্ষতি সাধন করে।
অভিযোগের বাদী প্রকল্প ম্যানেজার মোঃ খোর শেদ আলম বলেন, সানোয়ারের বিরুদ্ধে ২০২৩ সালে ১৭ জুলাই দায়ের করা দুই কোটি টাকার অভিযোগের দায়ের করা মামলা আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। ক্ষমতার পট পরিবর্তনের সুযোগ নিয়ে সে আবার তিন কোটি টাকা চাঁদা দাবি করে। তার দাবি করা চাদার টাকা না দিলে কোম্পানিকে ব্যবসা করতে দেয়া হবে না বলে লিখিত অভিযোগে উল্লেখ করেন ভুক্তভোগী ম্যানেজার।
স্থানীয় বাসিন্দা মোঃ মজিবুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ভিন্নাডাঙ্গী মসজিদে জুম্মার নামাজে আগত মুসল্লিদের সামনে দাঁড়িয়ে আমাকে মারার জন্য সানোয়ার ১০ লাখ টাকা বাজেট করেছেন বলে ঘোষণা দেয়। এ ছাড়া জামির্ত্তা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আবুল হোসেন মোল্লাকে তার কার্যালয়ে যেতে লোকজন নিয়ে বাধা দিচ্ছে সানোয়ার। এতে নাগরিক সেবা নিতে আসা অনেকে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে।
চাপরাইল গ্রামের বাসিন্দা ইঞ্জিনিয়ার আবু সায়েম বলেন, বিএনপি’র দলীয় প্যাডে নিজেকে সাংগঠনিক সম্পাদক পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে হুমকি দিচ্ছেন সানোয়ার হোসেন। আমি গণমাধ্যম কর্মী হিসেবে তথ্য নিতে গেলে আমাকেও সে মোবাইল ফোনে হুমকি প্রদান করে। পরে আমি বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেই।
অভিযুক্ত মো: সানোয়ার হােসেন বলেন, আমার বিরুদ্ধে করা সকল অভিযোগ মিথ্যা। পরিকল্পিতভাবে আমাকে হয়রানির উদ্দেশ্যেই এ অভিযোগ করা হয়েছে। যোগাযোগ করে দেখেন, আমার এলাকায় আমার বিরুদ্ধে যদি কেউ এধরনের অভিযোগ করতে পারে তাহলে যে বিচার হবে আমি মেনে নিবো।
সিংগাইর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক দেওয়ান মাহাবুবুর রহমান মিঠু বলেন, দলীয় প্যাড ব্যবহার করার ক্ষমতা শুধু সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের রয়েছে। আমি শুনেছি পাওয়ার প্ল্যান্টে গিয়ে প্যাড ব্যবহারে করে এমন করেছে। বর্তমানে সানোয়ার হোসেন দলের কোন দায়ত্বশীল পদে নেই বলেও জানান তিনি।
এ ব্যাপারে সিংগাইর থানার ওসি মো: জিয়ারুল ইসলাম বলেন, লিখিত অভিযোগের বিষয়ে আইনীভাবে তদন্ত চলছে।