জুলাই ৯, ২০২৪ - ৩:৩০ পূর্বাহ্ণ
Homeকর্পোরেট-অর্থ ও বাণিজ্যঅর্থ-বাণিজ্যজাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট পাস

জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট পাস

spot_img

অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক : বড় কোনো পরিবর্তন ছাড়াই জাতীয় সংসদে সর্বসম্মতিক্রমে পাশ হয়েছে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট। যা আগামীকাল ১ জুলাই (সোমবার) থেকে কার্যকর হবে। এদিন থেকে শুরু হবে নতুন অর্থবছর।

‘সুখী, সমৃদ্ধ, উন্নত ও স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে অঙ্গীকার’ স্লোগানে পাস হওয়া নতুন অর্থবছরের জাতীয় বাজেটের আকার ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা। এটি স্বাধীন বাংলাদেশের ৫৩তম বাজেট ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের টানা চতুর্থ মেয়াদের প্রথম বাজেট।

রোববার (৩০ জুন) জাতীয় সংসদে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সংসদ অধিবেশনে কণ্ঠভোটে সর্বসম্মতিক্রমে এ বাজেট পাস হয়।

গত ৬ জুন জাতীয় সংসদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট উপস্থাপন করেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে সংসদে আলোচনা শেষে শনিবার (২৯ জুন) সংসদে অর্থ বিলের অনুমোদন দেয়া হয়। যা সর্বসম্মতিক্রমে রোববার পাশ হলো।

ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার পরও এবারের বাজেটে সুযোগ রাখা হয়েছে ১৫ শতাংশ কর দিয়ে কালো টাকা সাদা করার। পাশাপাশি করদাতাদের সর্বোচ্চ করহার ২৫ শতাংশই থাকলো।

রোববার স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জাতীয় সংসদ অধিবেশনে বাজেট পাসের প্রক্রিয়ায় মন্ত্রীরা সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের ব্যয় নির্বাহের যৌক্তিকতা তুলে ধরে মোট ৫৯টি মঞ্জুরি দাবি উত্থাপন করেন। পরে এসব মঞ্জুরি দাবিগুলো সংসদে কণ্ঠভোটে অনুমোদিত হয়।

এর আগে শনিবার (২৯ জুন) জাতীয় সংসদে কয়েকটি সংশোধনীসহ অর্থবিল-২০২৪ পাস হয়েছে। বিলটি পাসের আগে বিলের ওপর সংশোধনী প্রস্তাব গ্রহণের মাধ্যমে সংসদ সদস্যদের শুল্কমুক্ত গাড়ি আমদানির সুযোগ বহাল রাখা হয়। এছাড়া ১৫ শতাংশ কর দিয়ে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া হয়েছে।

২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট চলতি অর্থবছরের বাজেটের চেয়ে প্রায় ৩৬ হাজার কোটি টাকা বেশি। এতে প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৬ দশমিক ৭৫ ভাগ এবং মূল্যস্ফীতি ৬ দশমিক ৫ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে।

বিলের উপর জনমত বাছাইয়ের প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয় সংসদে। সংসদ সদস্যদের বক্তব্যের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, দ্রব্যমূল্যের দাম কমাতে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, ব্যাংকসুদের হার বাজারভিত্তিক ও নীতি সুদহার প্রবর্তন করা হয়েছে। ডলারের দাম স্বাভাবিক রাখতে ক্রলিংপেগ পদ্ধতি অনুসরণ করা হচ্ছে। নতুন অর্থবছরে মূল্যস্ফীতি ৬ দশমিক ৫ শতাংশের মধ্যে নিয়ে আসা হবে।

তিনি বলেন, এলডিসি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সব সক্ষমতা অর্জন করেছে বাংলাদেশ। আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে ঘোষিত ১১টি পদক্ষেপ পূরণে বাজেটে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। কর্মসংস্থান সৃষ্টি, জলবায়ু পরিবর্তনজনিত ঝুঁকি মোকাবিলা ও খাদ্য নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। তিনি আরও বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণ হলে ২০৪১ সালের মধ্যে মাথাপিছু আয় হবে ১২ হাজার ৫০০ ডলার। দারিদ্র্য শূন্যের কোঠায় নেমে আসবে। খাদ্য নিরাপত্তায় টিসিবির মাধ্যমে কোটি পরিবারকে খাদ্য সহায়তা, ওএমস কার্যক্রম চালু রাখা ও সামাজিক সুরক্ষার আওতায় খাদ্য সহায়তা দেওয়া হবে।

সংসদে পাস হওয়া বিলে ২০২৪ সালের ১ জুলাই থেকে শুরু অর্থ বছরের জন্য আর্থিক বিধান, বিদ্যমান আইন সংশোধনীসহ কর প্রস্তাবসমূহ অনুমোদন করা হয়েছে। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অনেক সংসদ সদস্য (এমপি) নতুন নির্বাচিত হয়ে এসেছেন। তাদের বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে এমপিদের গাড়ি আমদানিতে ২৫ শতাংশ শুল্ক আরোপের প্রস্তাব প্রত্যাহার করা হয়েছে। এছাড়া সম্পদশালীদের কোম্পানির কাজে ব্যবহৃত গাড়ির পরিবেশ সারচার্জ মওকুফ করা হয়েছে।

এবারের বাজেটে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের বিনিয়োগে কর অব্যাহতির সুবিধা বহাল থাকছে। একইসঙ্গে ব্যক্তি শ্রেণির সর্বোচ্চ আয়কর ৩০ শতাংশের বদলে ২৫ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়েছে। এর বাইরে, বড় কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি। এছাড়া সমালোচনার মধ্যে ১৫ শতাংশ কর দিয়ে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ নিয়ে সবচেয়ে বেশি আলোচনা হলেও পরিবর্তন আসছে না চূড়ান্ত বাজেটে।

অন্যদিকে সামগ্রিক বাজেটে ঘাটতি দুই লাখ ৫৬ হাজার কোটি টাকার যোগান দেয়া হবে অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক ঋণে। এরমধ্যে বিদেশি উৎস থেকে নেয়া হবে ৯০ হাজার ৭০০ কোটি টাকা এবং অভ্যন্তরীণ উৎস ব্যাংক ও সঞ্চয়পত্র থেকে এক লাখ ৬০ হাজার ৯০০ কোটি টাকা সংগ্রহের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে সরকার। এরমধ্যে ব্যাংক থেকে এক লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ কোটি টাকা, অন্য আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ২৩ হাজার ৪০০ কোটি টাকা ও সঞ্চয়পত্র থেকে নেয়া হবে ১৫ হাজার ৪০০ কোটি টাকা।

এবারের বিশাল এই বাজেটের ৭ লাখ ৯৭ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হবে ১৫টি খাতে। নতুন বাজেটে মূল্যস্ফীতি ৬ দশমিক ৫ শতাংশে নামিয়ে আনার লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে সরকার।

অন্যান্য সংবাদ

সর্বশেষ সংবাদ