ইমা এলিস, নিউ ইয়র্ক: নোবেলজয়ী ১৬ মার্কিন অর্থনীতিবিদ এক বিবৃতিতে বলেছেন, ডোনাল্ড ট্রাম্প আবার প্রেসিডেন্ট হলে যুক্তরাষ্ট্র ও বিশ্ব অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। তারা বলেন, ট্রাম্পের চেয়ে বাইডেনের অর্থনৈতিক কর্মসূচি অনেক ভালো। মার্কিন গণমাধ্যম অ্যাক্সিওস প্রথম বিবৃতি নিয়ে খবর প্রকাশ করেছে।
অর্থনীতিবিদেরা বলছেন, ট্রাম্প চীনা পণ্য আমদানির ওপর অনেক শুল্ক আরোপ করতে চান। এর ফলে মার্কিন ক্রেতারা কেনেন এমন অনেক পণ্যের দাম বেড়ে যাবে। বিবৃতিতে তারা বলেন, অর্থনৈতিক বিভিন্ন নীতি নিয়ে আমাদের মধ্যে মতের ভিন্নতা থাকলেও একটা বিষয়ে আমরা একমত যে, জো বাইডেনের অর্থনৈতিক এজেন্ডা ডোনাল্ড ট্রাম্পের চেয়ে অনেক ভালো। নোবেলজয়ীরা বলেন, ‘আমরা মনে করি, ট্রাম্প দ্বিতীয় বারের জন্য আসলে বিশ্ব অর্থনীতিতে যুক্তরাষ্ট্রের অবস্থানের ওপর একটা নেতিবাচক প্রভাব পড়বে এবং যুক্তরাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ অর্থনীতিতে অস্থিতিশীলতা তৈরি হবে।’ বিবৃতিতে সই করা অর্থনীতিবিদদের মধ্যে আছেন ২০০১ সালের নোবেলজয়ী জোসেফ স্টিগলিজ ও ২০১৫ সালের বিজয়ী স্যার অ্যাঙ্গাস ডিটন। আগামী ৫ নভেম্বর মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
সমীক্ষায় দেখা গেছে, গত দুই বছরে মূল্যস্ফীতি অনেকটা কমে এলেও এখনো অনেক মার্কিন ক্রেতা বেশি দামে পণ্য কিনতে হচ্ছে বলে খুশি নন। ট্রাম্প বিদেশি পণ্য আমদানির ওপর শুল্ক বসানোর অঙ্গীকার করেছেন। চীনা পণ্যের ওপর সর্বোচ্চ ৬০ শতাংশ শুল্ক বসানো হতে পারে। বিবৃতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলা হয়েছে, ‘অনেক মার্কিনি মূল্যস্ফীতি নিয়ে উদ্বিগ্ন। মূল্যস্ফীতি অনেক কমে এসেছে। তবে ট্রাম্পের কারণে এটি আবার বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।’
যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার রাত ৯টায় (বাংলাদেশ সময় শুক্রবার সকাল) বাইডেন ও ট্রাম্পের মধ্যে প্রথম বিতর্ক অনুষ্ঠিত হবে আটলান্টায়। নির্বাচনের পাঁচ মাসেরও কম সময় আগে বিতর্ক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। ৯০ মিনিটের ঐ বিতর্কে ট্রাম্প তার ৮১ বছর বয়সী প্রতিদ্বন্দ্বীর মানসিক সক্ষমতা নিয়ে আক্রমণের সুযোগ নেবেন বলেই ধারণা করা হচ্ছে। ট্রাম্পের বয়সও ৭৮ বছর। তাই বয়স নিয়ে বাইডেনও ট্রাম্পকে খোঁচা দিতে ছাড়েন না। বিতর্কে বাইডেন ফৌজদারি মামলা নিয়ে ট্রাম্পকে আক্রমণ করবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। বাইডেন আগেই ট্রাম্পকে প্রেসিডেন্ট হওয়ার যোগ্য নন বলে মন্তব্য করেছিলেন। এছাড়া এ বিতর্কে নারীদের গর্ভপাতের অধিকার, মূল্যস্ফীতি এবং সীমান্তে নিরাপত্তা ও অভিবাসনের মতো বিষয়গুলো উঠে আসবে বলেও ধারণা করা হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ৬০তম নির্বাচনের আগে শুক্রবারের ট্রাম্প-বাইডেনের প্রথম বিতর্কের আয়োজন করেছে সিএনএন। আর দ্বিতীয় বিতর্কের তারিখ নির্ধারিত হয়েছে আগামী ১০ সেপ্টেম্বর। এবিসি ঐ বিতর্কের আয়োজন করেছে। এদিকে সাবেক প্রেসিডেন্ট হিলারি ক্লিনটন গত মঙ্গলবার নিউ ইয়র্ক টাইমসে একটি নিবন্ধ লিখেছেন। নিবন্ধে ট্রাম্পের সঙ্গে বিতর্কের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছেন হিলারি এবং আটলান্টার সিএনএন স্টুডিওতে অনুষ্ঠেয় বাইডেন-ট্রাম্প বিতর্কের প্রথম রাউন্ডের জন্য বাইডেনকে পরামর্শও দিয়েছেন।
হিলারি ঐ কলামে লিখেন, বিতর্কের সময় ট্রাম্প বাধা দেন ও অপ্রাসঙ্গিক কথা বলেন। তিনি যুক্তিতে না পারলে প্রতিপক্ষকে ধাওয়া দেন। ট্রাম্প নিজেকে প্রভাবশালী দেখাতে ও প্রতিপক্ষের যুক্তির ধারাবাহিকতা নষ্ট করার চেষ্টা করেন। ট্রাম্পের অবস্থান খণ্ডন করার চেষ্টা মানে ‘সময়ের অপচয়’।