কর্পোরেট সংবাদ ডেস্ক : এবারও দুর্ঘটনার শীর্ষে রয়েছে মোটরসাইকেল- এ কথা জানিয়ে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেছেন, ঈদুল আজহার ছুটিতে দেশে ৩ পথে সম্মিলিতভাবে ৩৩৭টি দুর্ঘটনায় ৪৮৮ জন নিহত হযেছেন। আজ বুধবার (২৬ জুন) ঢাকায় বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশন মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান তিনি।
ঈদযাত্রায় সড়ক দুর্ঘটনা পর্যবেক্ষণ-২০২৪ এর তথ্য তুলে ধরে সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেন, ঈদের ছুটিতে সারা দেশে সড়ক দুর্ঘটনায় ৪৫৮ জন নিহত হয়েছেন। আর এক হাজার ৮৪০ জন আহত হয়েছেন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি জানান, পবিত্র ঈদুল আজহায় যাতায়াতে দেশের সড়ক-মহাসড়কে ৩০৯টি দুর্ঘটনায় ৪৫৮ জন নিহত এবং ১৮৪০ জন আহত হন। এসময় রেলপথে ২২টি দুর্ঘটনায় ২০ জন নিহত এবং আহত হন ৪ জন। নৌপথে ৬টি দুর্ঘটনায় ১০ জন নিহত ও ৬ জন আহত এবং ৬ জন নিখোঁজ রয়েছেন। সড়ক, রেল ও নৌপথে সম্মিলিতভাবে ৩৩৭টি দুর্ঘটনায় ৪৮৮ জন নিহত ও ১৮৫০ জন আহত হন। ঈদযাত্রায় দুর্ঘটনা পর্যবেক্ষণে এসব তথ্য উঠে এসেছে।
সংগঠনটি জানিয়েছে, এবারের ঈদে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও পরিবহন ভাড়া অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যাওয়াসহ নানা কারণে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ১৫ থেকে ২০ শতাংশ মানুষের কম যাতায়াত করেছে। বর্তমান সরকারের বিগত ১৫ বছরে ধারাবাহিক উন্নয়নের ফলে দেশের সড়ক-মহাসড়কের অবস্থা আগের তুলনায় অনেক ভালো ছিল। ঈদের আগে ৩ দিন সরকারি ছুটি থাকায় যাত্রী চাপ কিছুটা ভাগ হয়েছে। দেশে ঈদযাত্রায় মোট যাতায়াতের প্রায় ৭ থেকে ৯ শতাংশ মোটরসাইকেলে যাতায়াত হয়েছে। হাইওয়ে পুলিশ, জেলা পুলিশসহ সরকারের বিভিন্ন নিয়ন্ত্রক সংস্থার তৎপরতা ছিল লক্ষ্যণীয়। ছোট ছোট যানবাহন বিশেষ করে ইজিবাইক, মোটরসাইকেল, অটোরিকশা ব্যাপকহারে বেড়েছে। কোনো কোনো সড়কে এসব যানবাহন হঠাৎ করে জাতীয় মহাসড়কে উঠে আসায় মহাসড়কে এসব যানবাহন নিয়ন্ত্রণ করা যায়নি।
এছাড়াও সড়কে চাঁদাবাজি, ফিটনেসবিহীন যানবাহন চলাচল, পণ্যবাহী যানবাহনে যাত্রী বহনসহ নানা কারণে সড়কে দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি বেড়েছে। একই সঙ্গে সড়কে ভাড়া নৈরাজ্যের কারণে নিম্নআয়ের লোকজন ফিটনেসবিহীন যানবাহন ও খোলা ট্রাকে যাতায়াত করেছে।
তারা প্রতিবেদনের আরও তুলে ধরেছে, ঈদযাত্রা শুরুর দিন ১০ জুন থেকে ঈদ শেষে কর্মস্থলে ফেরা ২৪ জুন পর্যন্ত বিগত ১৫ দিনে সংবাদপত্রে প্রকাশিত তথ্যমতে, ৩০৯টি সড়ক দুর্ঘটনায় ৩৩৬ জন নিহত ও ৭৬২ জন আহত হয়েছেন।
ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালের তথ্য অনুযায়ী, ঈদের আগে পরে ১৪ দিনে ১০৭৮ জন সড়ক দুর্ঘটনার রোগী ভর্তি হয়েছে। যার মধ্যে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় আহত হয়ে হাত বা পা ভেঙে ভর্তি রোগীর সংখ্যা ৪৭৮ জন।
বিগত ২০২৩ সালের ঈদুল আজহার যাতায়াতের সঙ্গে তুলনা করলে এবারের ঈদে সড়ক দুর্ঘটনা ১১.৫৫ শতাংশ, মৃত্যু ৫৩.১৭ শতাংশ ও আহত ২৩৮.২৩ শতাংশ বেড়েছে।
এ ছাড়া প্রতিবেদন অনুযায়ী, দুর্ঘটনার শীর্ষে রয়েছে মোটরসাইকেল। পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, ১৩২ মোটরসাইকেল দুঘটনায় ১৩০ জন নিহত ও আহত হয়েছে ৫৯৯ জন । যা মোট দুর্ঘটনার ৪২.৭১ শতাংশ, মোট নিহতের ২৮.৩৮ শতাংশ, মোট আহতের ৩২.৫৫ শতাংশ।