মুসলমানদের সবচেয়ে বড় দুই উৎসবের একটি হলো ঈদুল আজহা। কারো কাছে এটি কোরবানির ঈদ, কারো কাছে আবার বকরি ঈদ। যে নামেই হোক, এই ঈদের মূল উদ্দেশ্য হলো ত্যাগ। ত্যাগের মহিমায় চির ভাস্বর হয়ে আছে চার হাজার বছর ধরে। আদি পিতা হজরত ইব্রাহিম আ. স্বপ্নে তাঁর সবচেয়ে প্রিয় বস্তু কোরবানি করার জন্য আদেশ প্রাপ্ত হন। মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টির উদ্দেশ্যে হযরত ইব্রাহিম আ. তাঁর প্রিয় পুত্র হজরত ইসমাইল আ. কে কোরবানি করার উদ্যোগ নিয়েছিলেন। কিন্তু পরম করুণাময়ের অপার কুদরতে হজরত ইসমাইল আ. এর পরিবর্তে একটি দুম্বা কোরবানি হয়ে যায়। সেই থেকে জিলহজ মাসের ১০ তারিখে সমগ্র মুসলিম উম্মাহ কোরবানি দিয়ে আসছেন। তবে ১১ ও ১২ জিলহজ তারিখেও কোরবানি দেয়ার বিধান রয়েছে।
প্রতি বছরের ন্যায় এবারও আমাদের দেশে ১০ জিলহজ শনিবার ঈদুল আজহা উৎযাপিত হবে উৎসাহ উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে। ইতোমধ্যে রাজধানী থেকে নাড়ির টানে বাড়ি গেছেন ৬৫ লাখ মানুষ। বাসা বাড়িতে তালা লাগিয়ে গেলেও এ সময়টাতে নিরাপত্তার একটা অভাব থেকেই যায়। এ সময়টাতে বাসা বাড়িতে চোর ডাকাতের উপদ্রব বেড়ে যায় লক্ষনীয় ভাবে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বিভিন্ন পদক্ষেপ নিলেও দায়িত্ব প্রাপ্তদের আরো বেশি সজাগ থাকতে হবে এই সময়টাতে।
কোরবানির পর ঢাকা শহর পরিস্কার পরিচ্ছন্ন রাখা একটা বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দেয়। ঢাকা সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে বর্জ অপসারণের জন্য নানা রকম জনসচেতনতামূলক প্রচার ও ব্যবস্থা গ্রহণ করলেও, বাস্তবে তার ফল খুব একটা পাওয়া যায় না। যত নিয়ম আর আইন করা হোক না কেন, এক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় প্রয়োজন হলো নিজেদের সচেতনতা। নিজেরা যদি নিজেদের কোরবানির বর্জ দায়িত্ব নিয়ে যথা সময়ে পরিস্কার করা হয় তাহলে আর আবর্জনার স্তুপ জমবেনা। দূষিত হবেনা পরিবেশ।
কিছুদিন আগে দেশের উত্তরাঞ্চল ভয়াবহ বন্যার কবলে পড়েছিল। মানুষের দুর্ভোগ এখনো কমেনি। বিত্তবানদের প্রতি আহ্বান থাকবে, ত্যাগের আদর্শ অনুসরণ করে খেটে খাওয়া বানভাসি এ সকল মানুষ যেন ঈদের আনন্দ পেতে পারে সে ব্যাপারে উদারতার পরিচয় দিবেন।
ঈদ মানে খুশি, ঈদ মানে আনন্দ। সকল ভেদাভেদ ভুলে ঈদের এই খুশি আর আনন্দ ছড়িয়ে পড়ুক সবার মনে, সংর্কীণতা ভুলে ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে মিলিত হোক সবাই আর এমনি আনন্দ অমলিন থাকুক প্রতিটি মূহুর্তে-এই প্রত্যাশা রইল।
কর্পোরেট সংবাদের সকল পাঠক, বিজ্ঞাপন দাতা, শুভানুধ্যায়ীসহ সবার প্রতি রইল ঈদের শুভেচ্ছা। ঈদ মোবারক।