ভবন নির্মাণের যথাযথ নিয়ম না মেনেই চলছে ভবন নির্মাণের কাজ। ফলে ঘটছে মারাত্মক দূর্ঘটনা। প্রাণ হারাচ্ছে শ্রমিক। বিশেষজ্ঞরা বলছেন কোন ধরনের নিয়ন্ত্রণ নেই রাজউক কিংবা সিটি করপোরেশনের। এই ব্যাপারে আইন সংস্থাকে তাগিদ দিয়েছেন তারা।
রাজধানীর মোহাম্মাদীয়া হাউসিং সোসাইটি থেকে বের হলেই চোখে পড়বে নিরাপত্তা বেষ্টনী ছাড়াই চলছে একাধিক ভবণ নির্মাণের কাজ। ঠিক একই রকম চিত্র চোখে পড়বে রাজধানীর অন্যান্য এলাকাতেও। কোন কোন জায়গায় নিরাপত্তা বেষ্টনীর নামে ব্যবহার করা হচ্ছে সুতার জাল। এলাকাবাসী জানান, তাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিলো। তারা নেয়নি এটা তাদের ব্যর্থতা।
কিছু দিন আগে মোহাম্মাদপুর হাউসিং লিমিটেডের ৭ নাম্বার রোডের নির্মানাধীন একটি ভবন থেকে গত ১৫ই জুলাই একটি কাঁচা পাকা দেয়াল ভেঙ্গে পড়লে গুরুতরভাবে আহত হয় রাজধানীর একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আসিদুল ইসলাম। দেয়ালটি ভেঙ্গে পড়ে ঠিক তার উপরে। মারাত্মক আহত অবস্থায় প্রথমে তাকে ঢাকা মেডিকেলে এবং পরে স্কয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এখনও তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। ভবনটিতে ছিলো না কোন নিরাপত্তা বেষ্টনী।
এক পরিসংখ্যানে দেখা গেছে ২০১২ সালে চট্টগ্রামে নির্মাণাাধীন ফ্লাইওভারের গার্ডার ভেঙ্গে প্রাণ হারান ১৪ জন। ২০১৩ সালে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়াতে নির্মণাধীন সেতুর গার্ডার ভেঙ্গে নিহত হন এক শ্রমিক। ২০১৭ সালের মার্চে মৌচাক-মগবাজার ফ্লাইওভারের গার্ডার তোলার সময় ক্রেন ছিড়ে নিহত হয় এক শ্রমিক আর মে মাসে মির্জাপুরের নির্মাণাধীন ভবনের পাঁচতলা থেকে পড়ে এক নির্মাণ শ্রমিকের মৃত্যু হয়। জুন মাসে রাজধানীর তেজগাঁও তেজকুনীপাড়ায় ৫ তলা থেকে পড়ে মৃত্যু হয় এক শ্রমিকের।
গার্মেন্টস বা পরিবহন খাতে শ্রমিক সুরক্ষায় আইন থাকলেও নির্মাণকর্মীরা এই ক্ষেত্রে উপেক্ষিত বলে জানান বিশেষজ্ঞরা। পাশাপাশি বিল্ডিং কোড সঠিকভাবে অনুসরণ করা হচ্ছে কিনা তা নজরদারি করতে রাজুক ব্যর্থ বলেও জানানো হয়।
নির্মাণকালীন সময়ে শ্রমিকের এবং প্রতিবেশীর নিরাপত্তা বিষয়ক কঠোর এবং যুগোপযোগী আইন করা প্রয়োজন। তা না হলে দিন দিন এই ধরণের দুর্ঘটনা বাড়তেই থাকবে, আর প্রাণ হারাবে নির্মাণ শ্রমিক ও সাধারণ মানুষ।