সম্প্রতি বিভিন্ন গণমাধ্যমে যশোরের কোতোয়ালি থানায় ঘুষ না দেয়ায় এক যুবককে ঝুলিয়ে নির্যাতনের খবর ছবিসহ প্রকাশিত হয়েছে। এ নিয়ে সামাজিক মাধ্যমগুলোতে শুরু হয় তোলপাড় । যদিও ঘটনাটির সত্যতা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। পুলিশ কর্মকর্তা আর ঐ যুবক উভয়েই নির্যাতনের বিষয়টিকে অস্বীকার করছে। ফলে প্রশ্ন উঠেছে গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের বস্তুনিষ্ঠতা নিয়ে।
প্রকাশিত সংবাদের তথ্যানুযায়ী যুবকটির নাম আবু সাঈদ। তিনি যশোর সদর উপজেলার নওয়াপাড়া ইউনিয়নের তালবাড়িয়া গ্রামের নুরুল হকের ছেলে। খবরে বলা হয়, বুধবার রাতে যশোরের কোতোয়ালি থানার এসআই নাজমুল আবু সাঈদকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। থানায় নেয়ার পর এএসআই হাদিবুর রহমান দুই লাখ টাকা দাবি করেন। সাঈদ টাকা না দেওয়ায় তাকে হাতকড়া পরিয়ে থানার মধ্যে দুই টেবিলের মাঝে ঝুলিয়ে পেটানো হয়। পরে পরিবারের সদস্যরা ৫০ হাজার টাকা দিয়ে তাকে ছাড়িয়ে নেন। এ খবরে অনেকেই সামাজিক মাধ্যমগুলোতে ক্ষোভ আর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তবে পুলিশ এবং আবু সাঈদ উভয়েই নির্যাতনের বিষয়টিকে অস্বীকার করেছে। যশোর প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে বলেছেন, পুলিশ তাকে ধরলেও মারধর করেনি। পুরো ঘটনাটিকে নিয়ে এখন এক ধরনের সংশয় সৃষ্টি হয়েছে। ঘটনার সত্যতা নিশ্চত করতে সুষ্ঠ তদন্ত হওয়া দরকার বলে মনে করেন অভিজ্ঞ মহল।
পুলিশ বাহিনীর কিছু সদস্যের বিরুদ্ধে মাঝে মাঝে অনৈতিকতার অভিযোগ পাওয়া যায়। আর মুষ্ঠিমেয় কয়েকজন সদস্যের কারণে গোটা পুলিশ বাহিনীর উপর জনআস্থা হ্রাস পায়। জানা গেছে তথাকথিত আবু সাঈদের নামে মাদকের একটি মামলা রয়েছে। তবে তিনি এ মামলায় জামিনেও রয়েছেন। তাহলে তাকে কি কারণে আটক করা হয়েছে এবং সে যদি অপরাধ করে থাকে আদালতে না পাঠিয়ে তাকে কেন ছেড়ে দেয়া হয়েছে এ রকম প্রশ্নটি কিন্তু এখানে এসে যায়। যদিও এর কোন যথার্থ উত্তর পুলিশ দেয়নি। সাঈদের দাবি, গণমাধ্যম ও ফেসবুকে প্রকাশিত ছবি তার নয়। এদিকে, সাঈদের প্রতিবেশীরা বলছে শুক্রবার সকালে পুলিশ সাঈদের বাড়িতে গিয়েছিল।
সবকিছু মিলিয়ে ঘটনাটি বেশ রহস্যজনক। বিষয়টি নিয়ে নিরপেক্ষ তদন্ত হলে প্রকৃত সত্য বেড়িয়ে আসবে বলে মনে করেন অভিজ্ঞমহল। আর এর সত্যতা প্রমাণের জন্য সরকারের পক্ষ থেকেই পদক্ষেপ নিতে হবে, বেড়িয়ে আসবে প্রকৃত সত্য-সেটাই সচেতন মহলের প্রত্যাশা।