September 20, 2024 - 2:49 pm
তথ‌্য অ‌ধিদপ্ত‌রের নিবন্ধন নম্বরঃ ৭৭
Homeবিশেষ প্রতিবেদনকর্পোরেট ক্রাইমকিশোরীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন: গ্রেপ্তার যুব মহিলা লীগ নেত্রী বহিষ্কার

কিশোরীকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন: গ্রেপ্তার যুব মহিলা লীগ নেত্রী বহিষ্কার

spot_img

কর্পোরেট সংবাদ ডেস্ক : সাভারে এক কিশোরীকে বিবস্ত্র করে ছবি তোলার চেষ্টা, নির্যাতনসহ বিভিন্ন অভিযোগে যুব মহিলা লীগের নেত্রী মেহনাজ মিশুকে (২৪) গ্রেপ্তার করে পুলিশ। শনিবার (১৯ আগস্ট) গ্রেপ্তারের পর তাকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করেছে যুব মহিলা লীগ।

যুব মহিলা লীগের সভাপতি ডেইজি সারোয়ার ও সাধারণ সম্পাদক শারমিন সুলতানা স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সংগঠনের শৃঙ্খলাপরিপন্থী কর্মকাণ্ডে যুক্ত থাকার অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় ঢাকা জেলা উত্তর শাখার মেহনাজ মিশুকে সংগঠন থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হলো।

মেহনাজ মিশু ঢাকা জেলা (উত্তর) যুব মহিলা লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হলেও দীর্ঘদিন ধরে নিজেকে ঢাকা জেলা (উত্তর) যুব মহিলা লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে পরিচয় দিতেন। শনিবার সকাল ১০টার দিকে উপজেলা পরিষদ-সংলগ্ন বাসা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

পুলিশ জানায়, এক কিশোরীকে বিবস্ত্র করে ছবি তোলার চেষ্টাসহ নির্যাতনের নানা বিষয় উল্লেখ করে শনিবার সকালে থানায় লিখিত অভিযোগ দেন ভুক্তভোগী কিশোরীর মা। ওই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে সকালে তাকে আটক করে পুলিশ। পরে ভুক্তভোগীর মায়ের অভিযোগ মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

স্থানীয় সূত্র জানায়, ওই কিশোরীকে আটকে বিবস্ত্র ছবি তুলে রেখে দেন মেহনাজ মিশু। পরে তাকে অনৈতিক কাজে জড়িত হতে বাধ্য করেন। নানা ধরনের নেশাদ্রব্য সেবন করিয়ে রাখা হতো মেয়েটিকে। ২৫ জুলাই মিশু তার বাসার পঞ্চমতলার ছাদ থেকে ওই কিশোরীকে ফেলে দেন।

পুলিশ জানিয়েছে, ওই কিশোরী গুরুতর আহত অবস্থায় সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। স্থানীয়ভাবে বিষয়টি মীমাংসার চেষ্টা করা হয়। তবে এতে সুরাহা না হওয়ায় শনিবার সকালে তার মা সাভার মডেল থানায় মামলা করেন।

এদিকে যুব মহিলা লীগের সভাপতি ডেইজি সারোয়ার বলেন, ‘মেহনাজ মিশুকে আমি ব্যক্তিগতভাবে চিনি না। তবে আমার স্বাক্ষর নকল করে তিনি নিজেকে ঢাকা জেলা (উত্তর) যুব মহিলা লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে পরিচয় দিচ্ছেন, জানার পর স্থানীয় সংসদ সদস্যকে বিষয়টি জানিয়ে তাকে সতর্ক করা হয়। মেহনাজ মিশু আমাদের দলের কেউ নন।’

ঢাকা জেলার (উত্তর) বর্তমান কমিটিতে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে মেহনাজ মিশুর নাম আছে, জানানো হলে ডেইজি সারোয়ার বলেন, ‘আমাদের আগের কমিটি ঢাকা জেলা (উত্তর) যুব মহিলা লীগের কমিটির অনুমোদন দিয়েছিল। সে ক্ষেত্রে আমরা এখন মেহনাজ মিশুর ব্যাপারে খোঁজ নেব। এরপর যাচাই করে তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেব।’

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ঢাকা জেলা যুব মহিলা লীগের পরিচয় দিয়ে নানা অপকর্ম করতেন মেহেনাজ তাবাচ্ছুম মিশু। পূর্বপরিচয় ও প্রতিবেশীর সূত্র ধরে ভুক্তভোগী ওই কিশোরীকে কৌশলে ২৪ মে তার বাসায় নিয়ে যান। গভীর রাতে ছাত্রীকে বাসায় বিবস্ত্র করে ছবি তুলে অনৈতিক কাজে বাধ্য করার চেষ্টা করেন।

এ সময় আতিক নামের একজন ভুক্তভোগীকে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। স্কুলছাত্রীর শরীরে সিগারেটের ছেঁকা দেওয়া এবং নেশা জাতীয় দ্রব্য খাওয়ানো হয়। পরে তাকে পাঁচ তলা থেকে ফেলে দেওয়া হয়। পরে স্থানীয়রা অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া ওই কিশোরীকে গুরুতর অবস্থায় উদ্ধার করে এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে।

হাসপাতালে গিয়ে অভিযুক্ত মিশু ভুক্তভোগীকে ঘটনা কাউকে না জানাতে হুমকি দেন এবং সে (স্কুলছাত্রী) নিজে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছিল বলে সবাইকে জানাতে বলেন। ১৫ দিন চিকিৎসা শেষে কিছুটা সুস্থ হলে ভুক্তভোগীর পরিবার তাকে বাসায় নিয়ে যায়।

সাভার মডেল থানার পুলিশ জানায়, স্কুলছাত্রীর মা বাদী হয়ে সাভার মডেল থানায় অভিযোগ দায়ের করলে মেহনাজ মিশুকে আটক করা হয়। ছাত্রীকে বিবস্ত্র করে ছবি সংরক্ষণ, অনৈতিক কাজে বাধ্য করাসহ নেশা জাতীয় দ্রব্য খাইয়ে পাঁচ তলা থেকে ফেলে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

সর্বশেষ সংবাদ