কর্পোরেট সংবাদ ডেস্ক : ঘুষ নেয়ার অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) ২ কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২০ জুলাই) দুদক চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহর স্বাক্ষরিত এক আদেশে এ তথ্য জানা গেছে।
সাময়িক বরখাস্ত হওয়া কর্মকর্তারা হলেন- যশোর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মো. মোস্তাফিজুর রহমান এবং কুড়িগ্রাম সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের উপ-সহকারী পরিচালক সুদীপ কুমার চৌধুরী।
মোস্তাফিজুর রহমানের সাময়িক বরখাস্তের আদেশে বলা হয়েছে, পাবনায় উপসহকারী পরিচালক হিসেবে কর্মরত থাকাকালে তিনি মো. সামছুল হক নামে এক ব্যক্তির কাছে ২০ লাখ টাকা দাবি করেন। পরে ৭৬ হাজার টাকা গ্রহণ করেন। ঘুষ গ্রহণ করে তিনি চাকরি শৃঙ্খলাপরিপন্থী কাজ করেছেন। এর ফলে, দুদকের ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে ক্ষুণ্ন হয়েছে।
অন্যদিকে সুদীপ কুমার চৌধুরী বগুড়ায় উপসহকারী পরিচালক হিসেবে কর্মরত থাকাকালে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের উপপরিদর্শক আলমগীর হোসেনের সম্পদ বিবরণী যাচাই করেন। সে সময় তাকে মামলা থেকে অব্যাহতির আশ্বাস দিয়ে ঘুষ দাবি করেন। এ ছাড়া ঘুষ গ্রহণের কথোপকথনের অডিও রেকর্ড দুদকের ফরেনসিক ল্যাব বিশেষজ্ঞরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তা সুদীপ কুমারের বলে জানিয়েছেন। এর মাধ্যমে সুদীপ কুমার দুদকের নির্দেশনা অমান্য করেছেন বলে প্রমাণিত হয়েছে।
এর আগে, গত ১২ জুলাই এই দুই কর্মকর্তাকে নিজ কর্মস্থল থেকে প্রত্যাহার করে প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়েছিল।
সম্প্রতি দুদকের সমন্বিত পাবনা জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ ওঠে। এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
অভিযোগ ওঠে, একটি বেসরকারি ব্যাংক থেকে ঋণের নামে চার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে এক ব্যবসায়ীসহ ব্যাংক কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে অনুসন্ধানের দায়িত্ব পান তিনি। অভিযোগ থেকে অব্যাহতির আশ্বাস দিয়ে হক টেক্সটাইলসের মালিক ব্যবসায়ী শামসুল হকের কাছে ২০ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন। কয়েক দফায় ৭৬ হাজার টাকা গ্রহণ করেন এই কর্মকর্তা। এ ঘটনার পর মোস্তাফিজুর রহমানকে পাবনা থেকে যশোর সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে বদলি করা হয়েছিল।
অন্যদিকে, এক পুলিশ কর্মকর্তাকে মামলার ভয় দেখিয়ে সাড়ে পাঁচ লাখ টাকা ঘুষ গ্রহণের অভিযোগ ওঠে প্রতিষ্ঠানটির বগুড়া সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে উপসহকারী পরিচালক (ডিএডি) সুদীপ কুমার চৌধুরীর বিরুদ্ধে।
গত ৯ এপ্রিল এক সংবাদ সম্মেলনে ওই পুলিশ কর্মকর্তার বোন রুমাইয়া শিরিন জানান, তার ভাই আলমগীর হোসেন বগুড়া জেলা পুলিশে গোয়েন্দা বিভাগের উপপরিদর্শক (এসআই) হিসেবে কর্মরত ছিলেন। আলমগীরের বিরুদ্ধে এক নোটিশের মাধ্যমে সম্পদ বিবরণী দাখিল করতে বলা হয়। এরপর তিনি সম্পদের বিবরণী দাখিল করেন। আর তা যাচাইয়ের দায়িত্ব পান সুদীপ কুমার চৌধুরী। এরপর তিনি মামলার ভয় দেখিয়ে সাত লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন। ৫ লাখ ৮০ হাজার টাকা ঘুষ দিলেও তাতে সন্তুষ্ট না হয়ে মামলা করেন তিনি।