নিজস্ব প্রতিবেদক : আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, আমেরিকা বলে গেছে, বাংলাদেশে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন হবে সংবিধান অনুযায়ী। তিনি বলেন, ‘আমেরিকা বলে গেছে যে তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে তাদের কোনো মাথাব্যথা নেই। তারা বলেছে, বাংলাদেশে নির্বাচন হবে সে দেশের সংবিধান মেনেই।’
বুধবার (১৯ জুলাই) বিকেলে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ আয়োজিত শান্তি ও উন্নয়ন শোভাযাত্রা পূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে এ কথা বলেন ওবায়দুল কাদের। তেজগাঁওয়ের সাতরাস্তায় এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বিএনপির নেতারা আশার মালা গেঁথে বসেছিল কখন আসবে ইইউ, আমেরিকা। কিন্তু তাদের কথা শুনে বিএনপি নেতাদের আনন্দ ম্লান হয়ে গেছে। বিএনপি নেতারা অকথ্য ভাষায় কথা বলছে। তাদের আশা পূরণ হয়নি। শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন করতে হবে, এটাই তাদের জ্বালা।’
বিএনপি নেতাদের উদ্দেশ্যে ওবায়দুল কাদের বলেন, মানসম্মান থাকতে আন্দোলন ছেড়ে নির্বাচনে আসুন। অন্যথায় মানসম্মান থাকবে না। বিএনপিকে পরিস্কার বলতে চাই নির্বাচনে আসুন। নির্বাচনে না আসলে সেটা আপনাদের বিষয়। কিন্তু নির্বাচনে বাঁধা দিতে আসলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আমরা প্রতিহত করব।
বিএনপির ৫৪ দল, ৩৬ দল, ২৭ দফা, এক দফা, বিএনপি জোট ভুয়া উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণ বিএনপির ভুয়া রাজনীতি চায় না। বিএনপির অন্তরজ্বলা বেড়ে যাচ্ছে। এক দিনে শত সেতুর উদ্বোধন, আগামী মাসে আরো শত সেতুর উদ্বোধন। পদ্মাসেতু, মেট্রোরেল। চট্টগ্রামে নদীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু টানেল – এত উন্নয়ন কিভাবে ঠেকাবে? বিএনপির ঘুম নেই।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি উন্নয়ন বলতে কিছু করেনি। আওয়ামী লীগ সরকারের এত উন্নয়ন দেখে বিএনপি বুঝে গেছে নির্বাচনে কী হবে। নির্বাচনে হেরে যাবে জেনে তাদের মন খারাপ। এজন্য পদযাত্রা করতে গিয়ে খাগড়াছড়িতে, বগুড়ায় স্কুল ছাত্রীদের ওপর হামলা করেছে। ককটেল মারে বিএনপি।
দলীয় নেতাকর্মীদের ধৈর্য ধরার আহ্বান জানিয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, মাথা গরম করবেন না। বিএনপি পায়ে পাড়া দিয়ে ঝগড়া করতে চাইবে। দেশে শান্তি যত থাকবে আওয়ামী লীগের ভোট তত বাড়বে। একদিকে জনগণের শক্তি, অন্যদিকে সন্ত্রাস আর তান্ডব।
ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমানের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক এসএম মান্নান কচির সঞ্চলনায় শান্তি ও উন্নয়ন শোভাযাত্রাপূর্ব সমাবেশে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ ও আফম বাহাউদ্দীন নাছিম, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আফজাল হোসেন, দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, যুবলীগের সধারণ সম্পাদক মাইনুল হাসান খান নিখিল প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
বিএনপি নেতাদের উদ্দেশ্যে আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, পরিস্কারভাবে বলতে চাই, আওয়ামী লীগ জাতির পিতার হাতে গড়া দল। গুলির মুখে লড়াই-সংগ্রাম করে আওয়ামী লীগ দেশ স্বাধীন করেছে। এই লাঠি দিয়ে ভয় দেখাতে যাবেন না, উল্টো বিপদে পড়বেন। আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা ক্ষেপে গেলে পালানোর সুযোগ পাবেন না। অতীতে যেভাবে শায়েস্তা করেছে ভবিষ্যতেও আপনাদের শায়েস্তা করবে।
তিনি বলেন, বিএনপি আসলে নির্বাচনে বিশ্বাস করে না। নির্বাচন বানচাল করার জন্য এ ধরণের আন্দোলন করছে। তাদের লক্ষ্য মারামারি, সন্ত্রাসী কার্যক্রম ও নাশকতা। তারা আগুন সন্ত্রাস করে দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ তৈরি করতে চায়। বিএনপিকে বলবো আপনারা রাজনৈতিক দল। নির্বাচনে আসুন। নির্বাচনে এসে প্রমাণ করুন জনগণ আপনাদের পাশে আছে কিনা? বিদেশিদের ক্রীড়ানক হওয়ার চেষ্টা করবেন না।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম বলেন, দেশ বিরোধী অপশক্তি ও স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে বিএনপি এ দেশের উন্নয়ন ও অগ্রযাত্রা ব্যাহত করতে মাঠে নেমেছে। তারা নির্বাচন বানচাল করতে চায়। গণতান্ত্রিক পরিবেশ নষ্ট করতে চায়।
দলীয় নেতাকর্মীদের কারও উসকানিতে পা না দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, বিএনপি নির্বাচন ছাড়াই ক্ষমতায় আসতে চায়। এজন্য তারা রাস্তায় নেমেছে। বাংলাদেশ আর অন্ধকারে যাবে না। ২০০১ সালে আমরা অন্ধকারের বাংলাদেশ দেখেছি। সে সময় কিছু সন্ত্রাসীর অভয়ারণ্যে পরিণত হতে দেখেছি। সেই অন্ধকার থেকে আলোর পথে নিয়ে এসেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।