আহসান আলম, চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি : পৌঁষের হাড় কাঁপানো শীতে কাপছে চুয়াডাঙ্গা। আজ শনিবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায় ৮.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল শুক্রবারও দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় এ জেলায়। মৃদু শৈত্য প্রবাহে বেড়েছে শীতের তীব্রতা।
ভোর থেকে বৃষ্টির মতো ঝরছে ঘন কুয়াশা। ঘন কুয়াশা ও হিমেল হাওয়ায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে এখানকার জনজীবন। শীতে কষ্টে আছেন খেটে খাওয়া ছিন্নমূল মানুষ। সময় মতো কাজে যেতে পারছেন না তারা। খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারন করতে দেখা গেছে এসব মানুষগুলোকে। তীব্র ঠাণ্ডায় দেখা দিচ্ছে শীতজনিত নানা রোগ। হাসপাতালে বাড়ছে শিশু ও বয়স্ক রোগীর সংখ্যা। শীতে নষ্ট হচ্ছে মাঠের ফসল। ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে ধানের বীজতলা।
চুয়াডাঙ্গা আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রকিবুল হাসান বলেন, আজ শনিবার দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায় ৮.৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এটি চলতি মৌসুমে এ জেলারও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। এ নিয়ে চলতি মাসে দুদিন দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় চুয়াডাঙ্গায়। গতকাল শুক্রবারও এ জেলার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয় এ জেলায়। গত ডিসেম্বর মাসে চারদিন দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বিরাজ করে চুয়াডাঙ্গায়। এছাড়া বাতাসের আদ্রতার পরিমান বেশি। এ মৌসুমে তাপমাত্রা আরও কমে গিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ও পরে তীব্র শৈত্য প্রবাহে রূপ নিতে পারে।
চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার ইজিবাইক চালক ইকরামুল বলেন, বাতাসের কারণে ইজিবাইক চালাতে খুব কষ্ট হচ্ছে। যাত্রী খুবই কম। প্রচণ্ড ঠান্ডার কারণে লোকজনের দেখা মিলছেনা। সূর্যটাও উঠছেনা যে রোদ তাপাবো।
শহরের শহীদ হাসান চত্বরে কাজের সন্ধানে অপেক্ষায় থাকা দিনমজুরেরা বলেন, কনকনে শীতের সাথে বাতাসে শীতের তিব্রতা আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে। তারপরও থেমে নেই কাজ। বাধ্য হয়েই কাজের সন্ধানে বের হয়েছি।
চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার তালতলা গ্রামের কৃষক বজলুর রহমান বলেন, ভোরে কৃষি কাজের জন্য মাঠে এসেছি। ঠান্ডায় হাত চলছেনা। রোদ হলে কাজ করতে কোন অসুবিধা হতো না।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের শিশু কনসালটেন্ট মাহবুবুর রহমান মিলন বলেন, তীব্র শীতে রোটাভাইরাসের কারণে ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়া রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। তাদের মধ্যে বেশিরভাগই শিশু রোগী। শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়াসহ শীতজনিত বিভিন্ন রোগে হাসপাতালের আউটডোরে প্রতিদিন ৩ থেকে ৪ শতাধিক বয়োবৃদ্ধরা চিকিৎসা নিচ্ছেন। এছাড়া প্রতিদিন প্রায় ৪শ শিশু আউটডোরে চিকিৎসা নিয়েছে। শীতজনিত কারণে নিউমোনিয়া রোগীর সংখ্যা বাড়ছে।
চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খান জানান, প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ভান্ডার থেকে পাওয়া ২০ হাজার ১০০ কম্বল শীতার্ত মানুষের মধ্যে বিতরণ করা হয়ে গেছে। আমাদের পক্ষ থেকে আরো ৩০ হাজার কম্বলের চাহিদা পাঠানো হয়েছে। খুব শিগগিরই ওগুলো পাওয়া গেলে বিতরণ করা হবে। তাছাড়া বেসরকারি পর্যায়ে শীতবস্ত্র বিতরণের জন্য চিঠি পাঠানো। সেখান থেকেও সাড়া মিলবে আশা করি।
আরও পড়ুন: