অর্থ-বাণিজ্য ডেস্ক : দেশের রপ্তানি খাতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় ২০২১ সালের জন্য দেশের ১৮০ ব্যবসায়ীকে বাণিজ্যিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (সিআইপি) হিসেবে সম্মাননা দিয়েছে সরকার।
রোববার (২৫ জুন) রাজধানীর হোটেল সোনারগাঁওয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) আয়োজিত সিআইপি (রপ্তানি ও ট্রেড) ২০২১ কার্ড প্রদান অনুষ্ঠানে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি ব্যবসায়ী নেতাদের হাতে এ সম্মাননা স্মারক তুলে দেন।
সিআইপি (রপ্তানি) নীতিমালা-২০১৩ অনুযায়ী, ২২টি রপ্তানি পণ্য খাতের মধ্যে ১৯টি পণ্য ও সেবা খাতে বিশেষ অবদান রাখায় ২০২১ সালে মোট ১৪০ জনকে সিআইপি (রপ্তানি) এবং ৪০ জন ব্যবসায়ী নেতৃবৃন্দকে পদাধিকার বলে সিআইপি (ট্রেড) সম্মানে ভূষিত করা হয়।
এর মধ্যে কাঁচা পাট শ্রেণিতে ৪ জন, পাটজাত পণ্যে ৪ জন, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যে ৫ জন, হিমায়িত খাদ্যে ৮ জন, ওভেন পোশাকে (একক) ১৭ জন, ওভেন পোশাক (গ্রুপ) শ্রেণিতে ৪ জন, কৃষি প্রক্রিয়াজাত পণ্যে ৩ জন, কৃষিপণ্যে ৮ জন, হালকা প্রকৌশল পণ্যে ৩ জন, ফার্মাসিউটিক্যালস শ্রেণিতে ৪ জন এবং হস্তশিল্প শ্রেণিতে ৩ জন পুরস্কারটি পেয়েছেন।
আর হোম টেক্সটাইলে ৩ জন, নিট পোশাকে (একক) ২৫ জন, নিট পোশাকে (গ্রুপ) ৭ জন, সিরামিক পণ্যে ২ জন, প্লাস্টিক পণ্যে ১ জন, বস্ত্রখাতে ৭ জন এবং কম্পিউটার সফটওয়্যার, কম্পিউটার সেবা ও ডেটা প্রসেসিং ইত্যাদি পণ্য ও সেবা শ্রেণিতে ৪ জন, বিবিধ পণ্য শ্রেণিতে ২৩ জন এবং ইপিজেডভুক্ত ৫ প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি সিআইপি সম্মানানা পেয়েছেন। এছাড়া ব্যবসায়ী সংগঠনের প্রতিনিধিদের থেকে ৪০ জনকে এ পুরস্কার দেয়া হয়েছে।
সিআইপি (রপ্তানি) নীতিমালা অনুযায়ী এই ব্যক্তিরা বাংলাদেশ সচিবালয়ে প্রবেশের জন্য পাস ও গাড়ি স্টিকার পাবেন। এছাড়া জাতীয় অনুষ্ঠান ও নাগরিক সংবর্ধনায় দাওয়াত, ব্যবসা সংক্রান্ত কাজে ভ্রমণের সময় বিমান, রেলপথ, সড়ক ও জলপথে সরকারি যানবাহনে আসন সংরক্ষণে অগ্রাধিকার ও বিমানবন্দরে ভিআইপি লাউঞ্জ ব্যবহারের সুবিধা পাবেন।
এ ছাড়া সিআইপিরা তাদের স্ত্রী, সন্তান ও নিজের চিকিৎসার জন্য সরকারি হাসপাতালে বিশেষ সুবিধা পাবেন। বিদেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রেও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় তাদের জন্য ‘লেটার অব ইন্ট্রোডাকশন’ দেবে।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার ২০৩০ সালের মধ্যে ১০০ বিলিয়ন ডলারের রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। আমি বিশ্বাস করি দেশের সকল ব্যবসায়ী সমাজ যদি ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে তাহলে এই লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব হবে।
টিপু মুনশি বলেন, করোনা মহাসংকটের পর ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে বিশ্বব্যাপী আমদানি-রপ্তানিতে ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। এর মধ্যেও আমাদের দেশের ব্যবসায়ীরা নানা প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে দেশের অর্থনৈতিক কর্মকা- সচল রেখেছেন। দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা বিবেচনায় আমদানির পাশাপাশি রপ্তানি অব্যাহত রেখেছেন। শুধু তাই নয়, অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখার পাশাপাশি কর্মসংস্থান সৃষ্টিতেও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখে চলেছেন যা সত্যিই প্রশংসনীয়।
তিনি আরও বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এদেশের মানুষের স্বাধীনতা ও অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য সারা জীবন লড়াই-সংগ্রাম করেছেন। বাঙালিকে এনে দিয়েছেন লাল সবুজ পতাকা। যে পাকিস্তান আমাদের দেশের মানুষকে শোষণ করেছে, অর্থনৈতিকভাবে পঙ্গু করে দিয়েছিল সেই পাকিস্তান আজকে অর্থনীতির সকল সূচকে বাংলাদেশ থেকে পিছিয়ে পড়েছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ইপিবি ভাইস চেয়ারম্যান এ এইচ এম আহসান।
উল্লেখ্য, দেশের রপ্তানিকারক, শিল্পপতি ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে জাতীয় পর্যায়ে উৎসাহ, উদ্দীপনা ও পারস্পরিক সুষ্ঠু প্রতিযোগিতার আবহ সৃষ্টি করাই সিআইপি (রপ্তানি) কার্ড প্রদানের উদ্দেশ্য।