December 15, 2025 - 8:55 am
তথ‌্য অ‌ধিদপ্ত‌রের নিবন্ধন নম্বরঃ ৭৭
Homeকর্পোরেট ভয়েস২০১৯ সাল থেকে বড় প্রভাব ফেলবে অর্থনৈতিক অঞ্চল: পবন চৌধুরী, চেয়ারম্যান, বেজা

২০১৯ সাল থেকে বড় প্রভাব ফেলবে অর্থনৈতিক অঞ্চল: পবন চৌধুরী, চেয়ারম্যান, বেজা

spot_img

২০৩০ সাল নাগাদ দেশে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল (ইজেড) প্রতিষ্ঠায় কাজ করছে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)। সংস্থাটির নির্বাহী চেয়ারম্যান পবন চৌধুরীর সময়ই সেগুলো বাস্তব রূপ পেতে শুরু করেছে। অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলো এখন কী অবস্থায় আছে, কবে সেখানে বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ শুরু করতে পারবেন—এসব নিয়ে  কথা বলেছেন তিনি।

প্রশ্ন: সরকার ৭৬টি অর্থনৈতিক অঞ্চলের স্থান নির্বাচন করেছে। এর মধ্যে কয়েকটির উন্নয়নকাজ এগিয়ে নিচ্ছে বেজা। যেসব অর্থনৈতিক অঞ্চল প্রথমে বিনিয়োগ উপযোগী হবে, সেগুলোর এখনকার অবস্থা কী?

পবন চৌধুরী: বাগেরহাটের মোংলা অর্থনৈতিক অঞ্চলটি পুরোপুরি প্রস্তুত। সেখানে আমরা ২০ কিলোমিটার দূর থেকে পানির পাইপলাইন এনেছি। বিদ্যুতের সাবস্টেশন ইতিমধ্যে কার্যকর হয়েছে, সেখান থেকে প্রায় ৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ মিলবে। একটি সেতু, প্রশাসনিক ভবন তৈরি হয়েছে। সীমানাদেয়াল তৈরি শেষ। তবে এটি যারা উন্নয়ন করেছে তারাই কারখানা করবে, বাইরের বিনিয়োগকারী নিতে আগ্রহী নয়। ইতিমধ্যে তিনটি শিল্পকারখানার প্রস্তাব তারা দিয়েছে। সিলেটের শ্রীহট্ট অর্থনৈতিক অঞ্চলের জমি বরাদ্দের প্রসপেক্টাস (বিবরণপত্র) প্রকাশ করা হয়েছে। সেখানে জমি ইজারা নিতে আমরা বেশ ভালো সাড়া পাচ্ছি।

মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলের মিরসরাই-১-এর ৫৫০ একর জমি উন্নয়ন ও পরিচালনায় একটি কনসোর্টিয়াম কাজ পেয়েছে। ৩১ মার্চের মধ্যে তারা উন্নয়নকাজ শেষ করবে। এ ছাড়া চলতি মাসে আরও ১ হাজার ৩০০ একর জমি বরাদ্দ দেওয়া হবে। সেখানে ২৮ মার্চ বাংলাদেশ রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল কর্তৃপক্ষকে (বেপজা) ১ হাজার ১৫০ একর জমি দেওয়া হবে। এর বাইরেও ইস্পাত কারখানা করার জন্য চাহিদা আছে, তাদের অনুন্নত জমি দেওয়া হবে। সব মিলিয়ে মিরসরাইতে আগামী বছর চারটি ব্লক বিনিয়োগের জন্য প্রস্তুত হবে। ৪৩৬ একর জমিতে জামালপুর অর্থনৈতিক অঞ্চলও আগামী বছর প্রস্তুত হবে। এ ছাড়া সাবরাং ও নাফ ট্যুরিজম পার্কও প্রস্তুত হয়ে যাবে।

প্রশ্ন: এ অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলো দেশের অর্থনীতিতে বড় প্রভাব ফেলতে শুরু করবে কবে থেকে? আমরা কি ২০২১ সাল থেকে সে আশা করতে পারি?

পবন চৌধুরী: আমার মনে হয় ২০২১ সাল একটু বেশি দূরে হয়ে যায়। তার আগেই বড় বড় স্থাপনা অর্থনৈতিক অঞ্চলে হয়ে যাবে। ইতিমধ্যে বেসরকারি খাতের অর্থনৈতিক অঞ্চলে সিমেন্ট, কাগজ, রাসায়নিকের কারখানা হচ্ছে। সরকারি বড় অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলো চলে আসছে। আমি মনে করি, ২০১৯ সাল নাগাদ বড় ধরনের প্রভাব ফেলা শুরু করবে অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলো।

প্রশ্ন: পর্যটন উন্নয়নের জন্য কক্সবাজারে নাফ ট্যুরিজম পার্ক ও সাবরাং ট্যুরিজম পার্ক করা সরকারের অগ্রাধিকারে ছিল না। আপনাদের পরিকল্পনায় এটি কীভাবে এল?
পবন চৌধুরী: এটা কখনো কেউ চিন্তা করেনি। সবাই সনাতন অর্থনৈতিক অঞ্চল নিয়ে চিন্তা করেছে। আমরা বলেছি, আমাদের কাজ হবে বৈচিত্র্যপূর্ণ। পর্যটন অনেক বড় শিল্প। এখানে বাংলাদেশের অবস্থান অনেক নিচে। এ দেশেরই ৭০ লাখ লোক আছে, যাঁদের মাথাপিছু আয় আমেরিকানদের সমান। তাঁরা প্রচুর অর্থ বিদেশে গিয়ে ব্যয় করেন। তাঁদের যাওয়া কমাতে হবে, পাশাপাশি বিদেশ থেকে পর্যটক নিয়ে আসতে হবে।

প্রশ্ন: আমরা যত দূর জানি ইতিমধ্যে বিদেশি ও দেশি বিনিয়োগকারীরা অর্থনৈতিক অঞ্চলে জমি পেতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। সাড়া আসলে কেমন?
পবন চৌধুরী: এখনকার পর্যায়ে বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগ নিয়ে খুব উদ্বিগ্ন অথবা খুব আশাবাদী হওয়ার কোনো কারণ আমি দেখি না। বাংলাদেশে বিদেশি বিনিয়োগ গত বছর মাত্র ২০০ কোটি ডলার ছাড়িয়েছে। এ দেশে দেশি বিনিয়োগ ও সরকারি বিনিয়োগই অর্থনীতিতে বেশি ভূমিকা রেখেছে। তবে বিদেশি বিনিয়োগ দরকার পণ্যে বৈচিত্র্য আনা ও প্রযুক্তির জন্য। আগামী দুই থেকে পাঁচ বছরে এ ক্ষেত্রে বড় ধরনের একটি পরিবর্তন আসবে।

প্রশ্ন: চীন, ভারত ও জাপানকে যে অর্থনৈতিক অঞ্চল দেওয়া হয়েছে বা হবে, সেগুলোর কী অবস্থা?

পবন চৌধুরী: বাস্তবে কার্যক্রম এগিয়ে চলছে চীনকে দেওয়া অর্থনৈতিক অঞ্চলে। ভারত তিনটি জায়গা নির্বাচন করেছে। জাপানও জায়গা নির্বাচন করেছে। তবে এ ক্ষেত্রে সময় দিতে হবে। বড় কাজের জন্য একটু বেশি সময় দিতে হয়। এসব দেশের সঙ্গে কথা শুরু হয়েছে মাত্র ২০১৪ সাল থেকে। ভারতের ক্ষেত্রে তা আরও পরে। আমি আশা করছি, এ বছর ডিসেম্বর নাগাদ বাস্তব অগ্রগতি হবে।

প্রশ্ন: অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে পণ্য বাছাই করা হবে কি না, নাকি সব খাতেই বিনিয়োগ দেওয়া হবে।

পবন চৌধুরী: এটা উন্মুক্ত রাখা ভালো। বিনিয়োগকারীকেই ঠিক করতে দেওয়া উচিত তিনি কোন পণ্য তৈরি করবেন। তবে আমাদের অগ্রাধিকার হবে কর্মসংস্থান।

প্রশ্ন: সম্প্রতি আপনি এক অনুষ্ঠানে অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবি করেছেন। এর প্রেক্ষাপট কী?

পবন চৌধুরী: নিরাপত্তার কথা আমি আগেও বলেছি। যেদিন থেকে কাজ করছি, সেদিন থেকেই বলছি অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোতে উন্নত আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি থাকতে হবে এবং শান্তি বজায় রাখতে হবে। সরকার যেমন শিল্পাঞ্চলে নিরাপত্তার জন্য শিল্প পুলিশ গঠন করেছে, আমি চাইছি আরও মানসম্মত সেবা। যাতে কোনো ধরনের হস্তক্ষেপ না হয়। অর্থনৈতিক অঞ্চলে আদর্শ অবস্থা থাকতে হবে; সেটা গ্যাস-বিদ্যুৎ সেবার দিক দিয়ে হোক, আর নিরাপত্তার দিক দিয়ে হোক। একেবারে আন্তর্জাতিক মানের মতো।

সৌজন্যে: প্রথম আলো।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন

সর্বশেষ সংবাদ

ওসমান হাদির অবস্থা অপরিবর্তিত : মেডিকেল বোর্ড

কর্পোরেট সংবাদ ডেস্ক: সন্ত্রাসীদের গুলিতে গুরুতর আহত হয়ে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের সম্ভাব্য স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ মো. ওসমান...

এমবিবিএস ভর্তির পরীক্ষার ফল প্রকাশ, পাসের হার ৬৬.৫৭

কর্পোরেট সংবাদ ডেস্ক: ২০২৫-২৬ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস ও বিডিএস কোর্সের ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। এবার পাসের হার ৬৬ দশমিক ৫৭ শতাংশ। রোববার...

হাদির ওপর হামলাকারী মূল আসামি দেশেই আছে: ডিএমপি

নিজস্ব প্রতিবেদক : ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী শরিফ ওসমান বিন হাদির ওপর হামলাকারী মূল আসামি দেশেই আছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা...

ডেঙ্গুতে আরও ৫ জনের মৃত্যু

কর্পোরেট সংবাদ ডেস্ক : ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে আরও পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। একই সময়ে ৩৮৭ জন ডেঙ্গু রোগী দেশের বিভিন্ন হাসপাতালে...

নির্বাচন সামনে রেখে রাজনৈতিক দলগুলোকে নিরাপত্তা প্রটোকল দেবে পুলিশ

কর্পোরেট সংবাদ ডেস্ক : আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটকে সামনে রেখে পুলিশের পক্ষ থেকে রাজনৈতিক দলগুলোকে নিরাপত্তা প্রটোকল দেওয়া হবে। এই প্রটোকলে রাজনৈতিক...

সূচকের পতনে লেনদেন শেষ

পুঁজিবাজার ডেস্ক: সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার (১৪ ডিসেম্বর) ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচকের পতনে লেনদেন শেষ হয়েছে। এদিন সূচকের সাথে কমেছে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ার...

এন্টারপ্রাইজ কানেক্টিভিটি ও ডিজিটাল সল্যুশনে পিটিসি-এক্সেনটেকের কৌশলগত অংশীদারিত্ব চুক্তি

কর্পোরেট ডেস্ক: পেট্রোলিয়াম ট্রান্সমিশন কোম্পানি পিএলসি (পিটিসি)-এর সাথে একটি কৌশলগত অংশীদারিত্ব চুক্তি স্বাক্ষর করেছে এক্সেনটেক পিএলসি। করপোরেট সার্ভিস, সিম-ভিত্তিক এন্টারপ্রাইজ সল্যুশন এবং ডিজিটাল সক্ষমতা...

গ্রাহক সন্তুষ্টির প্রত্যয় নিয়ে দেশের ১৬ অঞ্চলে ইউসিবির টাউনহল

কর্পোরেট ডেস্ক: একই দিনে, একই সময়—দেশের ১৬টি অঞ্চলে একসাথে টাউনহল। কোথাও ব্যাংকের চেয়ারম্যান, কোথাও ব্যবস্থাপনা পরিচালক, কোথাও এএমডি, ডিমডি কিংবা সিনিয়র কর্মকর্তারা। পুরো দেশের...