সেলিম রেজা, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: বোনের বাড়ি উচ্ছেদ করে গুড়িয়ে দিল আপন সহোদর ভাই। বাড়ি গুড়িয়ে ও তছনছ করার ফলে খোলা আকাশের নিচে তিন মেয়ে নিয়ে বসবাস করছে এক অসহায় এক নারী। গ্রামবাসীর পক্ষ থেকে বাড়ি উচ্ছেদ ও গুড়িয়ে দেওয়ার খবর ৯৯৯ নাম্বারে কল পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে সিরাজগঞ্জ সদর থানা পুলিশ।
ঘটনাটি ঘটেছে সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলা শিয়ালকোল ইউনিয়নের চন্ডীদাসগাঁতীতে। এবিষয়ে সিরাজগঞ্জ সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। তবে এখনো কাউকে গ্রেফতার করেনি পুলিশ।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, আজ থেকে ২৫ বছর পূ্র্বে চন্ডীদাসগাঁতী গ্রামের মৃত আনোয়ার হোসের এর মেয়ে নাছিমা খাতুনের সাথে উল্লাপাড়া উপজেলা বড়হর ইউনিয়নের বেল্লাবাড়ি গ্রামের মোহাম্মদ আলীর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। মোহাম্মদ আলীর ঘরে ৩টি ফুটফুটে কন্যা সন্তান জন্মগ্রহন করে। ৩টি কন্যা সন্তানই কাল হয়ে যায় নাছিনা খাতুনের জীবন। স্বামী মোহাম্মদ আলী নাছিমা খাতুনকে ডিভোর্স দিয়ে দেয়। নাছিমা খাতুন তার ৩টি কন্যা তাদের পিতার কাছে রাখতে চাইলে কন্যাদেরকে রাখেনি মোহাম্মদ আলী। নিরুপায় হয়ে নাছিমা খাতুন তিন শিশু কন্যাদের নিয়ে চলে যান গার্মেন্টেসে। গার্মেন্টেসে চাকুরী করে তিন কন্যাকে মানুষ করে বিবাহ দেন। এখন নাছিমা খাতুন বৃদ্ধ। বৃদ্ধ অবস্থায় নাছিমা খাতুন আর গার্মেন্টেসে আর চাকুরী করতে পারছেন না। তাই নাছিমা খাতুন পৈতৃক জমি নিতে চলে আসেন শিয়ালকোল ইউনিয়নের চন্ডীদাসগাঁতী গ্রামে। এখন নাছিমা খাতুনের বাড়ি গুড়িয়ে দিল আপন সহোদর ভাই।
জানা যায়, মৃত আনোয়ার হোসেন এর চন্ডীদাসগাঁতী মৌজায় ৫৪ শতক জমি রয়েছে। অংশীদার হিসেবে ৪ ছেলে ও ৪ মেয়ে সন্তান এই জমির অংশ পেয়ে থাকেন। পৈতৃক সম্পত্তির অংশীদার হিসেবে মৃত আনোয়ার হোসেন এর মেয়ে নাসিমা খাতুন (৫০) ৪.৫ শতাংশ জমি পেয়ে থাকেন। পৈতৃক সম্পত্তির অংশীদার হিসেবে ৪.৫ শতাংশ জমি নিজ নামে খারিজ করে দুই মেয়ের নামে দান করেন। ৩ মেয়ে স্বামীর বাড়ি থেকে টাকা দিয়ে মা নাছিমা খাতুনকে ৪.৫ শতাংশ জমিতে বাড়ি করে দেন। কিন্তু সেই বাড়ি ১৯মে ২০২৩ বেলা সাড়ে ১২টার দিকে আপন সহোদর ভাই এমদাূুল হক (৫৫) গং দেশীয় অস্ত্রসস্ত্রে সজ্জিত হয়ে বোনের বাড়ি উচ্ছেদ করে। বর্তমানে নাছিমা খাতুন ও তার ৩ কন্যা নিয়ে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে’।
এবিষয়ে নাছিমা খাতুন বড় ভাই এমদাদুল হক বলেন, পৈতৃক সম্পত্তি ৫৪ শতক জমির ৪.৫ শতাংশ জমি অংশীদার। নাছিমা খাতুনের বাড়ি উচ্ছেদ করার বিষয়টি আমাদের ভুল হয়েছে। বাড়িতে যে পরিমান ক্ষতি হয়েছে আমি তা ক্ষতিপুরন দিব।
শিয়ালকোল ইউনিয়নের ইউপি সদস্য রুহুল আমিন স্বজল বলেন, ৪.৫ শতাংশ জমি নাছিমা খাতুন পৈতৃক সম্পত্তির অংশীদার। এমদাদুল হক বাড়ি গুড়িয়ে দিয়েছে। আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। সিরাজগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হুমায়ন কবীর বলেন, ঘটনাস্থল পুলিশ পরিদর্শন করেছে। তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহন করা হচ্ছে।