মো. মিজানুর রহমান,এফসিএস ; ২০১০ সালে পুঁজিবাজারে ধসের পর গঠিত তদন্ত কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী ঢেলে সাজানো হয় বাংলাদেশে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন বা বিএসইসিকে। অধ্যাপক হেলাল উদ্দীন নিজামী কমিশনার পদে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পান ২০১১ সালের ৪ মে, এরই ধরাবাহিকতায় ২০১১ সালের ১১ মে বিএসইসি’র চেয়ারম্যান হিসেবে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হয় অধ্যাপক এম খায়রুল হোসেনকে, ২০১১ সালের ২৯ মে কমিশনার পদে নিয়োগ পান মো. আমজাদ হোসেনে ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান আইডিএলসির ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আরিফ খান পরে আরিফ খান স্বেচ্ছায় চলে গেলে অধ্যাপক স্বপন কুমার বালা আরিফ খানের স্থলে কমিশনার পদে অসেন ২০১৬ সালের ১৯ এপ্রিল এবং সর্বশেষ ২০১৭ সালের ১২ অক্টোবর কমিশনার হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন খোন্দকার কামালুজ্জামান। চেয়ারম্যানসহ বিএসইসি’র কমিশনের সদস্য সংখ্যা ৫ জন যাদের কর্মদক্ষতা, সততা ও পুঁজিবাজার সম্পর্কে ভালো ধারনা থাকা আবশ্যক ।
মো. আমজাদ হোসেনের চুক্তিভিত্তিক কমিশনার পদের মেয়াদ শেষ হয় ২০১৮ সালে ৩০ এপ্রিল। এরপর থেকেই কমিশনের ওই পদ খালি রয়েছে, কাউকে নিয়োগ দিতে পারেনি সরকার। ১৮ এপ্রিল, ২০২০ অধ্যাপক স্বপন কুমার বালার কমিশনার পদের চুক্তিভিত্তিক মেয়াদ শেষ হয়েছে। তিনি আগের কর্মস্থল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেম বিভাগে চলে গেছেন। আরেক কমিশনার অধ্যাপক হেলাল উদ্দীন নিজামীর চুক্তিভিত্তিক মেয়াদ শেষে রোববার ৩ মে, ২০২০ তার আগের কর্মস্থল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাউন্টিং অ্যান্ড ইনফরমেশন সিষ্টেমস বিভাগে ফিরে গেছেন। আর বাংলাদেশে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)-এর চেয়ারম্যান অধ্যাপক এম খায়রুল হোসেনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে ১৪ মে, ২০২০।
বাংলাদেশে সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)-এ, ৪ কমিশনারের পদ থাকলেও তাদের মধ্যে মো. আমজাদ হোসেনের মেয়াদ শেষ হয়েছে ২০১৮ সালে ৩০ এপ্রিল। এরপর গত দুেই বছর ধরে কমিশনের ওই পদ খালি রয়েছে, কাউকে নিয়োগ দিতে পারেনি সরকার। আর অন্য ২ জনের মেয়াদ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। বিএসইসি’র চেয়ারম্যান হিসেবে অধ্যাপক এম খায়রুল হোসেনের মেয়াদ শেষ হচ্ছে ১৪ মে, ২০২০। ফলে কার্যত ৪ জনের মধ্যে এখন মাত্র একজন কমিশনার রয়েছেন বিএসইসিতে । কিন্তু চেয়ারম্যানসহ ৪ জনের মেয়াদ শেষ হলেও এখনো কাউকেই নিয়োগ দেয়নি অর্থ মন্ত্রণালয়। একসঙ্গে চার পদ শূন্য হতে যাওয়ার পথে অথচ এখনও মেয়াদোত্তীর্ণ পদগুলোতে সরকার কোন নিয়োগ চুড়ানাত করেনি, ফলে বিএসইসির হাল ধরবেন কে বা কারা তা এখনো জানা যায়নি ?
আর ২০১৭ সালের ১২ অক্টোবর কমিশনার হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন খোন্দকার কামালুজ্জামান। তার মেয়াদ শেষ হবে ২০২১ সালের ১১ অক্টোবর। বর্তমান পরিস্থিতিতে ১৪ মে বর্তমান চেয়ারম্যানের মেয়াদ শেষ হলে বিএসইসিতে থাকবেন শুধু একজন কমিশনার। ফলে চলতি সপ্তাহ থেকে কোরাম সংকটে খাকছে বিএসইস‘র বর্তমান কমিশন। এটা মোটেও দেশের পুঁজিবাজার এর জন্য ভালো না।
বিএসইসি’র মতো এমন একটি গুরুত্বপুর্ণ জায়গায় যদি সরকার সময় মতো পদ পূরনে ব্যার্থ হয় তবে এমতাবস্থায় বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন চলবে কিভাবে ? আর দেশের পুঁজিবাজার ঠিক হবে কি ভাবে? যদি কেউ আসতে না চায় বা কাউকে খুজে পাওয়া না যায় তাহলে আমার/আমাদের মতো অনেক প্রফেশনাল রয়েছেন এখানে কাজ করার জন্য। তাদের ডাকেন, দায়ীত্ব দেন ১০ বছর লাগবেনা ১০ মাসেই সব ঠিক করা সম্ভব হবে। কোন আমলা-কামলা আর দলবাজ বুদ্ধিজিবিদের দিয়ে প্রফেশনাল সেক্টর ঠিক করা যায় না বা এদের দিয়ে কাজ হবেনা।
তাই সরকার প্রধানের কাছে অনেোধ রাখছি বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনে প্রফেশনালদের কাজে লাগাতে পারেন, যারা ওখানে গিয়ে দেশের পুঁজিবাজার সম্পর্কে বুঝবেনা, দায়ীত্ব নেয়ার আগেই পুঁজিবাজার সম্পর্কে সমোকভাবে বুঝে দায়ীত্ব নেবেন। আর এখেত্রে সরকার চাইলে আইসিএসবি’র ফেলোদের মধ্যে যারা পুঁজিবাজার সম্পর্কে ভালো জানেন তাদের সুযোগ দিয়ে দেখতে পারেন। সম্ভব হলে কমিশনে সিএ, সিএমএ ও সিএস প্রত্যেক প্রফেশন থেকে অন্তত একজন করে হলেও কমিশনার নিতে পারেন যারা পুঁজিবাজার সম্পর্কে ভালো জানেন। আর আমরা যারা পুঁজিবাজার নিয়ে কাজ করছি, কর্পোরেট সুশাসন প্রতিষ্ঠার জন্য চেষ্ঠা করছি, চাইলে আমাদেরকেও সুযোগ দিয়ে দেখতে পারেন খারাপ হবেনা বরং আগের চেয়ে ভালো হবে।