বিশেষ প্রতিবেদক : দেশে করোনাভাইরাসের প্রকোপ ঠেকাতে সরকার সাধারণ ছুটি ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত করায় পুঁজিবাজারের লেনদেন ও আগামী ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। অপরদিকে ব্যাংকিং কার্যক্রম সীমিত আকারে খোলা রয়েছে। স্টক একচেঞ্জ বন্ধ থাকায় পুঁজি আটকে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের অনেকে।এমতাবস্থায় ব্যাংকের মত সীমিত আকারে পুঁজিবাজার খোলা রাখার দাবী জানিয়েছেন ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা।
সরকারী সাধারণ ছুটিতে ব্যাংক খোলা থাকলেও এর কার্যক্রম হচ্ছে সীমিত সময়ের জন্য, যা পুঁজিবাজারে লেনদেনর সময়ের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়ায় পুঁজিবাজারের লেনদেন চালু রাখা সম্ভব। সরকারের সাধারণ ছুটি ঘোষণার সাথে মিল রেখে ডিএসই’র ট্রেডিং, সেটেলমেন্ট কার্যক্রমসহ সকল দাপ্তরিক কাজ বন্ধ থাকছে। কিন্তু এতে ক্ষতির সম্মুখিন হচ্ছেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা। যেহেতু ব্যাংক খোলা সেহেতু ব্যাংকের সাথে সমন্বয় করে স্টক একচেঞ্জকেও সীমিত আকারে খোলা রাখার ব্যবস্থা করা হলে বিনিয়োগকারীরা উপকৃত হবে। বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে স্টক একচেঞ্জ এর ওয়েবসাইটে তালিকাভুক্ত কোম্পানিসমূহের নিউজ গুলি পাবলিসের ব্যবস্থা করা হলে বিনিয়োগকারীরা সহজেই কোম্পানির প্রাইজসেনসেটিভ ইনফরমেশনসহ তাদের প্রয়োজনীয় তথ্য সম্পর্কে অবহিত হতে পারবেন।
পুঁজিবাজার সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, স্টক একচেঞ্জ এখন পুরোপুরি ডিজিটাল প্লাটফর্ম ব্যবহার করে, আর যেহেতু ব্যাংক খোলা সেহেতু ব্যাংকের সাথে সমন্বয় করে স্টক একচেঞ্জকেও সীমিত আকারে খোলা রাখার ব্যবস্থা করা হলে বিনিয়োগকারীরা উপকৃত হতো, কারন এমন অনেক বিনিয়োগকারী আছেন যাদের সকল বিনিয়োগ শেয়ার বাজারে রয়েছে, আর স্টক একচেঞ্জ বন্ধ থাকায় তারা বর্তমান লকডাউন অবস্থায় মানবেতর জীবন জাপন করছেন এবং সংসার চালাতে চরম বিপাকে পড়েছেন।
গত ২৪ মার্চ কোভিড-১৯ এর ব্যাপকভাবে বিস্তার প্রতিরোধে জনসমাবেশ এড়িয়ে চলতে ও সামাজিক দুরত্ব অনুসরণ করার পাশাপাশি পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পনি গুলোকে ডিজিটাল প্লাট ফর্মে (ভার্চূয়াল) মিটিং করার নির্দেশ দেয় বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এন্ড একচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। একইভাবে পুঁজিবাজারেও জনসমাবেশ এড়িয়ে ও সামাজিক দুরত্ব অনুসরণ করে সীমিত আকারে অন্তত ২/3 ঘন্টার জন্য খোলা রাখলে উপকৃত হবেন সাধারণ বিনিয়োগকারীরা।
পুঁজিবাজার বন্ধ থাকায় একদিকে যেমন বিএসইসির নির্দেশনা মোতাবেক কোম্পানিগুলোর ভার্চূয়াল মিটিংয়ের ফলাফল বা তথ্য বিনিয়োগকারীদের কাছে না পৌছানোয় বঞ্চিত হচ্ছে বিনিয়োগকারীরা। তেমনি তারল্যের এই বাজার থেকে বিনিয়োগকারীদের শেয়ার বিক্রির মাধ্যমে অর্থ উত্তোলনের সুযোগও বন্ধ হয়ে গেছে। তাই বিনিয়োগকারীদের স্বার্থে স্টক একচেঞ্জ এর ওয়েবসাইট আপডেট করার পাশাপাশি সীমিত আকারে পুঁজিবাজার খোলা রাখার ব্যবস্থা করা উচিত বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।
বড় ধরনের দরপতন ও ভাইরাস সংক্রমণ ঠেকাতে দেশের উভয় স্টক এক্সচেঞ্জ বন্ধ রাখায় তারল্যের এই বাজারে বিনিয়োগকারীদের পুঁজি আটকে যাওয়ায় বিপাকে পরেছেন ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা। পাশাপাশি কৌশলগত বিনিয়োগকারীরাও বিদ্যমান পরিস্থিতির সুযোগে কম দরে শেয়ার কেনা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। দেশের দুই স্টক এক্সচেঞ্জের দায়িত্বরত কর্মকর্তারা মনে করেন, সাধারণ ছুটির মধ্যেও ব্যাংকের মতো পুঁজিবাজারে লেনদেন চালুর বিষয়টি ভেবে দেখা দরকার।