বেনাপোল প্রতিনিধি : যশোরে অভিনব কায়দায় ইনজেকশনের মাধ্যমে অ্যাসিড পুশ করে স্বামীকে হত্যার অভিযোগে এক নারী ও তার পরকীয়া প্রেমিককে গ্রেফতার করা হয়েছে। স্ত্রীর পরকীয়া নিয়ে বিরোধের জেরে এ হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে।
হত্যাকান্ডের শিকার ওষুধ ব্যবসায়ী জহির হাসান গাজী (৩৮) যশোর শহরের বকচরহুশ তলার মৃত হোসেন আলী গাজীর ছেলে।এছাড়া গ্রেফতার শেফালী বেগম (৩৩) বকচরহুশতলা এলাকার মৃত শেখ ওমর আলীর মেয়ে এবং শেফালির প্রেমিক রবিউল ইসলাম (৪২) শহরের শংকরপুর এলাকার বাসিন্দা। এ ঘটনায় নিহতের ভাই গাজী শাহনেওয়াজ কোতোয়ালি থানায় মামলা করেছেন।
বুধবার (১০ মে) বিকেলে এ ঘটনায় যশোর কোতোয়ালি থানায় ব্রিফিং করেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক-সার্কেল) জুয়েল ইমরান।
তিনি বলেন, মঙ্গলবার রাতে বকচর এলাকার বাসিন্দা জহির হাসানের অস্বাভাবিক মৃত্যুর খবর পেয়ে কোতোয়ালি থানা পুলিশ, ডিবি ও র্যাব ঘটনাস্থলে যায়। জহির আলীর বাম হাতের প্রতিটি শিরায় কালো দাগ পরিলক্ষিত হওয়ায় মৃত্যুর কারণ নিয়ে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করে। এ কারণে থানা ও ডিবি পুলিশ যৌথভাবে তদন্ত শুরু করে।
পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, নিহত জহির হাসান গাজীর স্ত্রী শেফালী বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে তার স্বামী জহির হাসানকে হত্যার দায় স্বীকার করেন। শেফালী জানান, শংকরপুরের রবিউলের সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্কের কারণে পারিবারিক কলহের জেরে স্বামী জহির হাসানকে হত্যার পরিকল্পনা করেন তিনি। অভিনবপদ্ধতিতে প্রথমে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে অচেতন করেন। এরপর আগে থেকে সংগ্রহ করা মোবাইল ফোনের ব্যাটারি ভেঙে পানিতে ভিজিয়ে রেখে দেওয়া অ্যাসিড ইনজেকশনের সিরিঞ্জে নিয়ে ঘুমন্ত স্বামীর বাম হাতের শিরায় পুশ করেন। অ্যাসিড প্রয়োগের অল্পসময়েই জহিরের মৃত্যু হয়।
জুয়েল ইমরান বলেন, পরে জহির হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছেন বলে পরিবারকে জানান শেফালি। তখন জহিরের ছোট ভাই ফেরদৌস রাত দেড়টার দিকে তাকে নিয়ে যশোর জেনারেল হাসপাতালে যান। সেখানে জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। জহিরের মরদেহ যশোর জেনারেল হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। আর শেফালীকে গ্রেফতার করে তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী, হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত আলামত জব্দ করা হয়।
যশোর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সাইফুর রহমান বলেন, নিহতের শরীরে ইনজেকশনের ক্ষত দেখা গেছে। ক্ষত থেকে রক্তপাত হওয়ার চিহ্নও পাওয়া গেছে। তবে কীভাবে তার মৃত্যু হয়েছে তা ময়নাতদন্তের পর জানা যাবে।
এদিকে, জহির হত্যাকান্ডের পর এঘটনায় জড়িত অভিযোগে শেফালীর প্রেমিক রবিউল ইসলামকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। রবিউল খুলনার পাইকগাছা উপজেলা সদরের মৃত আব্দুর সরদারের ছেলে ও যশোর শহরের শংকরপুর এলাকার বাসিন্দা। বুধবার বিকেলে শংকরপুর থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
র্যাব জানিয়েছে, শেফালী এবং রবিউল পরিকল্পনা করে জহিরকে হত্যা করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।