সেলিম রেজা, সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি: সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জে দীর্ঘদিন ধরে কোনো অনুমোদন ছাড়াই অস্বাস্থ্যকরভাবে নকল রবো উৎপাদন করে বিক্রি করছে শাহ আলম নামে এক অসাধু ব্যবসায়ী।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার নলকা ইউনিয়নের ফরিদপুর শাহপাড়া অল্পপুঁজিতে বেশি লাভের আশায় অর্থলোভী অসাধু, শাহ আলম এসব নকল ও ভেজাল খাদ্য শিশুদের হাতে তুলে দিচ্ছেন। অভিভাবকরাও জানেন না, তারা শিশুদের কী খাওয়াচ্ছেন, শিশুরা নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। একই সাথে বিভিন্ন প্রকার শিশু খাদ্য উৎপাদনে রাসায়নিক পদার্থ প্রয়োগের ফলে জনস্বাস্থ্যের হুমকি। বিশেষ করে নানা রকম নিম্নমানের ভেজাল শিশুখাদ্য উৎপাদন ও বাজারজাত করে শিশুস্বাস্থ্য উপর পড়ছে চরম ক্ষতিকর প্রভাব।
সাম্প্রতিক সময়ে শিশুখাদ্যে আরো ভয়বহতার রুপ নিয়েছে। রায়গঞ্জ উপজেলার আশপাশ ঘিরে গড়ে উঠেছে অনুমোদনহীন শিশু খাদ্যের ভেজাল কারখানা।
যেখানে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে তৈরি হচ্ছে শিশু খাদ্য। আসল আর নকলের গায়ে একই লেভেল। সেজন্য চেনাও কঠিন। আসল পণ্যের পাশাপাশি নকল এসব ভেজাল খাদ্য ছড়িয়ে পড়ছে বাজারে। এতে দারুণ দুশ্চিন্তায় এবং শিশুদের পছন্দের খাবার কিনতে গিয়ে সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছেন অভিভাবকরা।
ভেজালের কারণে খাদ্য-চিকিৎসার সাথে অন্য সব মৌলিক চাহিদাও কোন না কোন ভাবে প্রভাবান্বিত হচ্ছে। চিকিৎসক ও গবেষকদের ভাষ্যমতে, অনেক সমস্যার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে খাদ্যে ভেজাল যা নৈতিকতার অবক্ষয় থেকে শুরু করে অর্থনৈতিক চাপ পর্যন্ত সুবিস্তৃত।
বিএসটিআই এর অনুমোদনহীন এ সব পণ্য দেশের বিভিন্ন বড়বড় শহর থেকে গ্রাম-গঞ্জের পাইকারি ব্যবসায়ীরা ক্রয় করে গুদামজাত করেন। পরে বিভিন্ন কৌশলে নানান লোভনীয় অফারে জেলা-উপজেলার হাট-বাজারে অতিআল্পমূল্যে বিক্রয় করে থাকে।
জাতিসংঘের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) হিসাব মতে, ভেজাল বা দূষিত খাবার খেয়ে প্রতিবছর প্রায় চার লাখ ২০ হাজার শিশুর মৃত্যু ঘটাচ্ছে। যাদের এক-তৃতীয়াংশেরও বেশি হচ্ছে পাঁচ বছরেরও কম বয়সি।
খাবারে ক্ষতিকারক রঙের ব্যবহার, কীটনাশক ইত্যাদির কারণে শিশুর কিডনি ও লিভারসহ যেসব জায়গায় বেশি রক্ত চলাচল করে সেসব অঙ্গ সরাসরি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। দীর্ঘমেয়াদে ক্যান্সারের সম্ভাবনা থাকে। এর বাইরে পেটের পীড়া, পেটে ঘা, আলসার, চর্মরোগ ইত্যাদি প্রভাব তো খুব বেশি দেখা যাচ্ছে।
ভেজাল শিশুখাদ্য উৎপাদন বিষয় জানতে চাইলে, শাহআলম বলেন আমার কোন অনুমোধন নাই, আমি প্রশাসনকে মেনেজ করেই রবো তৈরি করি আমার এখানে কোন প্রশাসন আসবে না, আপনারা যা পারেন করেন গা।
এবিষয়ে রায়গঞ্জ উপজেলা নির্বাহীকর্মকর্তা তৃপ্তি কণা মন্ডল বলেন, ভেজাল ও নিম্নমানের শিশু খাদ্যে উৎপাদন ও বাজারজাত করার বিষয়টা জেনেছি দ্রুতই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ভেজাল ও নিম্নমানের শিশু খাদ্যে উৎপাদন ও বাজারজাত করণের ক্ষেত্রে শিশু খাদ্য আইনের যথাযথ প্রয়োগ বা মনিটরিংয়ের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন সুশীল সমাজের সচেতন মানুষ।