November 23, 2024 - 4:06 am
তথ‌্য অ‌ধিদপ্ত‌রের নিবন্ধন নম্বরঃ ৭৭
Homeবিশেষ প্রতিবেদনকর্পোরেট ক্রাইমঅনিয়ম চলছে নিয়মে শ্রীমঙ্গল রেলস্টেশন

অনিয়ম চলছে নিয়মে শ্রীমঙ্গল রেলস্টেশন

spot_img

তিমির বনিক, ষ্টাফ রিপোর্টার: কারও কারও ঘরে জ্বলছে বাতি। আবার কারও ঘরে এলইডি টিভি, ফ্রিজ। তাদের মাসিক বিদ্যুৎবিল মাত্র ১০০ টাকা অথবা ২০০ টাকা। কারও কারওরটা আবার ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা। বিদ্যুৎনির্ভর আরাম-আয়েশে কাটছে তাদের দিন! তবে ওইসব ঘরে বিদ্যুতের কোনো মিটার নেই। মাসিক বিদ্যুৎ ব্যবহার কত ইউনিট হলো তা উপায় নেই জানার। একটা নির্দিষ্ট সংখ্যায় মাসের পর মাস অধিক বিদ্যুৎ ব্যবহার করেও নামমাত্র মূল্য দিয়ে থাকেন এসব অবৈধ বিদ্যুৎ ব্যবহারকারীরা।

দিনের পর দিন এভাবে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ নিয়ে সুবিধা ভোগ করছেন এক শ্রেণির অসাধু মানুষ। এতে করে ক্ষতির মুখে পড়ছে সংশ্লিষ্ট বিভাগ।

সরেজমিন মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে স্টেশনের দক্ষিণ এবং পূর্ব প্রান্তে গিয়ে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগের অসংখ্য প্রমাণ মিলেছে। রেলওয়ে স্টেশনের সীমানাপ্রাচীর টপকে হাতের বাম দিকে যে খাবারের দোকান সেই দোকানের মালিকের নাম মোস্তফা মিয়া। মোস্তফা মিয়ার ভাতের দোকান হিসেবে এ দোকানটি স্থানীয়ভাবে পরিচিত।

মোস্তফা মিয়া জানান, আমাদের এদিকে কমপক্ষে ৩ শতাধিক দোকান এবং ঝোপরি বাড়িতে অবৈধবিদ্যুৎ সংযোগ রয়েছে। দিনের পর দিন তারা এই বিদ্যুৎ ব্যবহার করছে। অথচ দেখেন আমি পল্লী বিদ্যুৎ থেকে অনেক টাকা দিয়ে সংযোগ নিয়েছি। বিলও আসছে অনেক বেশি। আমি যদি ওইরকম অবৈধ সংযোগ নিতাম তাহলে আমার মাসিক মাত্র ১০০ থেকে ২০০ টাকায় হয়ে যেতো।

পূর্বদিকের সীমানাপ্রাচীর ঘিরেই আওয়াল মিয়ার চা-পানের দোকান। এখানেও বিদ্যুৎ ব্যবহৃত হয়, তবে কোনো মিটার নেই। আর এখানের অবৈধ বিদ্যুৎ লাইনটি যুক্ত রয়েছে রেলওয়ের ওভারব্রিজের লোহার একটি অংশ স্পর্শ করে। শটসার্কিটসহ অন্যান্য সমস্যা হলে লোহার এ পুরো ওভারব্রিজটিতে জড়িয়ে পড়বে। বিদ্যুৎপৃষ্ট হয়ে মারাত্মক হতাহতের ঘটনা ঘটে যেতে পারে। প্রাণ হারাতে পারেন ওই ওভারব্রিজ দিয়ে পারাপারকারী সাধারণ কোনও মানুষ।

পূর্বদিকের ঝোপরিঘরের বাসিন্দা শফিক মিয়া এবং অপর একটি ঘরের বাসিন্দা রোমেলা বেগম বলেন, আমিনি নামক এক নারী তাদের ঘরে বিদ্যুৎ ব্যবহারের সুযোগ দিয়েছেন। তিনি এসে মাসে মাসে টাকা নিয়ে যান।

২০ বছর ধরে রেলের জায়গায় বাস করছেন বাবুল প্রধান নামক জনৈক বৃদ্ধ। তার বাড়ির একটি মিটার দিয়ে ৩টি ঘরে সংযোগ দেওয়া হয়েছে। তার মিটারের বিদ্যুৎ বিলটি পরীক্ষা করে দেখা গেল মিটারটি ইদ্রিস আলীর নামে। এ বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, তার ডাক নাম ইদ্রিস মিয়া।

ঝোপরিঘরের অপর বাসিন্দা জাহাঙ্গীর মিয়া অকপটে স্বীকার করে বলেন, আমাদের এখানে (রেলের জমিতে) ৬টি ঘরে ৬টি পরিবার থাকে। এগুলোর সব দেখাশোনা করে বাবলি হিজরা। প্রতি মাসে সে এসে প্রতি ঘর থেকে ২ হাজার টাকা করে ভাড়া তুলে নিয়ে যায়। আমাদের এখানে কোনো ঘরে বিদ্যুৎ মিটার নেই। তবে লাইট জ্বলে, ফ্যান-টিভি চলে।

অনুসন্ধানে নেমে জানা গেছে, প্রায় ৪ থেকে ৫ শতাধিক ভাসমান দোকান, ছোট টংদোকান এবং ঝুপরিঘরে এসব অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ রয়েছে। এসব অবৈধ বৈদ্যুতিক সংযোগের সঙ্গে লাইনম্যান লোকমান মিয়া এবং খালাসি হায়দার আলী জড়িত রয়েছেন। তারা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সুযোগসুবিধার ভিত্তিতে এসব অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে আসছেন।

লাইনম্যান লোকমান ও কবির মিয়ার সঙ্গে এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে তিনি ‘আমি এগুলোর সাথে জড়িত না’ মোবাইল সংযোগটি তৎক্ষণিক কেটে দেন। খুঁজে বের করি লোকমান মিয়াকে, তার তথ্য মতে ওই বিদ্যুৎলাইনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি অকোপটে স্বীকার করে বলেন, আমি খুব বেশি দিন ধরে জরিত নই অবৈধভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে টাকা নেওয়ার খুব বেশি ধরে নেইনি। তবে আমি একা এই টাকা নিয়ে খাচ্ছি না, আরও লোক আছে। তবে নির্দিষ্ট করে না বললেও বড় ষ্টাফরা জরিত আছেন বলে জানান।

শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে স্টেশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত স্টেশনমাস্টার মো. সাখাওয়াত বলেন, আমি শ্রীমঙ্গল রেলওয়ে স্টেশনের দায়িত্বে এসেছি প্রায় দুই বছর হলো। শুনেছি স্টেশনের আশেপাশে কিছু অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ রয়েছে। এগুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া আসলে আমার কাজের মধ্যে পড়ে না। আমিও চাই এই অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করা হোক। কিন্তু এই সাখাওয়াত মাষ্টারকে যখনি বলা হয় এইসব সংক্রান্ত বিষয়ে একি কথা বলে যাচ্ছেন তিনি। বিগত ছয় মাসের আগে ও যা বলেন তিনি ছয় মাস পরেও একই বক্তব্য দিয়ে থাকেন। নাম না বলা শর্তে এক রেলওয়ে কর্মচারী জানান, তিনি বড় স্যার আমার অসুবিধা হবে বলে বলেন, তিনি যতদিন এই রেলস্টেশনে চাকুরী করছেন অডেল টাকার মালিক বনে গেছেন। অনিয়ম দুর্নীতি যেন এক রকম প্রকাশ্যে দিবালোকে দিনের মত পরিস্কার, কিন্তু তার পর ও উনার কিছুই হবে না! লেবার থেকে শুরু করে ঝাড়ুদার পর্যন্ত সব জায়গায় সাখাওয়াত মাষ্টারের হাত আছে। রেলষ্টেশন এর জমিতে নতুন ঘর তৈরি করে অবৈধ ভাবে ভাড়া নেওয়া সব কিছুই অকোপটে মাষ্টার এর জরিত ছাড়া কিভাবে হয়!

অনুসন্ধানে নেমে বেড়িয়ে আসে এসব এর সত্যতা তবে সরাসরি মাষ্টার এর না বললেও বিভিন্ন কর্মচারী দিয়ে ঘর ভাড়া অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি টাকা। রেলষ্টেশণে গড়ে উঠা বিভিন্ন দোকান কোঠার কাগজপত্র না থাকলেও নির্দিষ্ট লোক দ্বারা দিব্যি ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে এই সাখাওয়াত মাষ্টার। মাষ্টার সাহেব সিন্ডিকেট তৈরি করে রমারমা বানিজ্য চালিয়ে যাচ্ছে এমন অভিযোগ ষ্টেশন এলাকায় বসবাস ও বিভিন্ন দোকানীর থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী।

চলমান প্রতিবেদন….২য় অনুচ্ছেদে বিস্তারিত ।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন
spot_img

সর্বশেষ সংবাদ

২ কোম্পানির বোর্ড সভার তারিখ ঘোষণা

নিজস্ব প্রতিবেদক : পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ২ কোম্পানির বোর্ড সভার তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। কোম্পানি ২টি হলো-গ্লোবাল...

জেড ক্যাটাগরিতে গ্লোবাল হেভি কেমিক্যালস

নিজস্ব প্রতিবেদক : পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি গ্লোবাল হেভি কেমিক্যালস লিমিটেডের ক্যাটাগরি পরিবর্তন করা হয়েছে। কোম্পানিটিকে ‘বি’ ক্যাটাগরি থেকে ‘জেড’ ক্যাটাগরিতে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। ঢাকা স্টক...

পুঁজিবাজারের ২ কোম্পানির এজিএমের তারিখ পরিবর্তন

নিজস্ব প্রতিবেদক : পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি নাহি অ্যালুমিনিয়াম কম্পোজিট প্যানেল লিমিটেড ও বিবিএস কেবলস পিএলসির বার্ষিক সাধারণ সভার (এজিএম) তারিখ পরিবর্তন করেছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ...

শরীয়াহ পরিপালনে ইউনিয়ন ব্যাংক বদ্ধপরিকর

কর্পোরেট ডেস্ক : ইসলামী ব্যাংকিং এমন এক ব্যাংক ব্যবস্থা যেখানে সকল লেনদেনে সুদ নিষিদ্ধ।ব্যাংকিং সংক্রান্ত সকল কার্যক্রম ইসলামী শরীয়ার আলোকে পরিচালিত হয়। ইউনিয়ন ব্যাংক পিএলসি....

সাউথইস্ট ব্যাংক, টাইনি টটস ও সামার ফিল্ড স্কুলের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর

কর্পোরেট ডেস্ক : সাউথইস্ট ব্যাংক পিএলসি. টিউশন ফি কালেকশন সার্ভিস, পে-রোল ব্যাংকিং এবং অন্যান্য ব্যাংকিং পরিষেবা প্রদানের জন্য ব্যাংকের হেড অফিসে টাইনি টটস ও...

বরগুনায় প্রান্তিক মানুষের মাঝে এনআরবিসি ব্যাংকের ঋণ বিতরণ

কর্পোরেট ডেস্ক : বরগুনা জেলার বিভিন্ন শ্রেণি পেশার নিন্ম আয়ের প্রান্তিক মানুষদের মাঝে প্রকাশ্যে ঋণ বিতরণ করা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পুন:অর্থায়ন তহবিল কর্মসূচির আওতায়...