নিজস্ব প্রতিবেদক : ২০২৩ শিক্ষাবর্ষে বিভিন্ন স্তরের শিক্ষার্থীদের মাঝে বিনামূল্যে নতুন পাঠ্যপুস্তক বিতরণ কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
শনিবার (৩১ ডিসেম্বর) সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হল থেকে শিক্ষার্থীদের হাতে বই তুলে দিয়ে এই কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।
এসম প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিক্ষা হচ্ছে জাতিকে দারিদ্রমুক্ত করার সবচেয়ে বড় হাতিয়ার। অতীতের কোনো সরকার শিক্ষার জন্য তেমন কিছুই করেনি। আওয়ামী লীগ সরকার বাংলা গড়ার জন্য শিক্ষাকেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে।
শেখ হাসিনা বলেন, করোনা ও ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের মধ্যেও নতুন বই ছাপানোর কথা ভোলেনি সরকার। শিশুদের পৃথিবীর সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার কথাও বলেছেন তিনি।
তিনি বলেন, প্রাথমিক স্কুল থেকে ঝরে পড়ার হার এখন অনেক কমে এসেছে। কারণ আমরা প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষার্থীদের জন্য বিভিন্ন সুবিধা দিয়ে যাচ্ছি। এছাড়া মা বাবা সচেতন হওয়ার কারণ প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষার্থী উপস্থিতির হার ৯৮ শতাংশ।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, নতুন বছর থেকে প্রাক-প্রাথমিক কার্যক্রম এক বছর থেকে বাড়িয়ে দুই বছর করা হয়েছে। প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষার্থীদের কোনো বই দেওয়া হবে না। তারা শুধু স্কুলে যাবে এবং হাতের বিভিন্ন কাজ শিখবে। অঙ্কন করবে। খেলাধুলা করবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ২০২৩ সালের ১ জানুয়ারি ৪ কোটি ৯ লাখ ১৫ হাজার ৩৮১ জন শিক্ষার্থীকে ৩৩ কোটি ৯১ লাখ ১২ হাজার ৩০০ কোটি পাঠ্যবই বিনামূল্যে বিতরণ করা হচ্ছে
এ সময় শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি, শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেনসহ মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আগামীকাল রবিবার (১ জানুয়ারি) শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় আলাদাভাবে কেন্দ্রীয় পাঠ্যবই উৎসব উদযাপন করবে।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে মাধ্যমিক পর্যায়ের বই উৎসব গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার সরকারি পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়ে আয়োজন করা হবে। আর প্রাথমিক পর্যায়ের বইয়ের কেন্দ্রীয় উৎসব হবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলার মাঠে। অনুষ্ঠানে দুই মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী, সচিবসহ বিশিষ্ট ব্যক্তি, কর্মকর্তা, শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা উপস্থিত থাকবেন।
এনসিটিবি জানিয়েছে, ২০২৩ শিক্ষাবর্ষের জন্য প্রায় ৩৫ কোটি পাঠ্যবই ছাপানোর কথা রয়েছে। এর মধ্যে প্রাথমিক পর্যায়ের পাঠ্যবই প্রায় ১০ কোটি। বাকি ২৫ কোটি মাধ্যমিক ও অন্যান্য বিষয়ের বই রয়েছে। বই উৎসবের আগে মাধ্যমিক পর্যায়ের ৮০ শতাংশ বই জেলায় পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হলেও প্রাথমিকের বড় অংশের বই পৌঁছানো কঠিন হয়ে পড়বে। প্রাথমিকের বই দেরি করে ছাপা শুরু হওয়ায় এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।
বর্তমান সরকার ২০১০ শিক্ষাবর্ষ থেকে বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ শুরু করে এবং এ পর্যন্ত মোট ৪৩৪ কোটি ৪৫ লাখ ৮০ হাজার ২১১টি পাঠ্যপুস্তক বিতরণ করেছে।