আহসান আলম, চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি: জমির নাম খারিজ করে দেয়ার নামে ভুক্তভোগীদের লক্ষাধিক টাকা হাতিয়ে নেয়ার অভিযোগ উঠেছে জাহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে। আলমডাঙ্গা উপজেলার ঘোলদাড়ি ভুমি অফিসের অফিস সহায়ক হিসেবে কর্মরত থাকা অবস্থায় তিনি ওই এলাকার বহু ব্যাক্তির কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়। অভিযুক্ত জাহিদুল ইসলাম বর্তমানে চুয়াডাঙ্গা পৌর ভুমি অফিসের অফিস সহায়ক হিসেবে দ্বায়িত্ব পালন করছেন। চুয়াডাঙ্গায় বদলি হওয়ায় জাহিদুল ইসলামকে না পেয়ে বিপাকে পড়েছেন ভুক্তভোগীরা। দীর্ঘদিন ধরে জমির নাম খারিজ করতে না পেরে টাকা ফেরত চাইলে ভুক্তভোগীরা জাহিদুল ইসলামের চুয়াডাঙ্গা পৌর ভুমি অফিস ও বাড়িতে গেলে তাদেরকে বিভিন্ন ভাবে হুমকি-ধামকি দেয়া হচ্ছে বলে ভুক্তভোগীদের দাবি। বিষয়টি জানাজানি হলে ভুক্তভোগীদের টাকা ফেরৎ দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন অভিযুক্ত জাহিদুল ইসলাম। জাহিদুল ইসলামের এ ধরনের ঘুষ বানিজ্য দীর্ঘদিনের দাবি করে তাকে নিয়ে বিপাকে পড়েছে চুয়াডাঙ্গা পৌর ভুমি অফিসের অনেকেই।
আলমডাঙ্গা উপজেলার আইলহাস গ্রামের বাজার পাড়ার শেখ কামাল উদ্দিনের অভিযোগ, জমির নামজারি করতে ২০২২ সালের ২০ সেপ্টেম্বর তিনি ঘোলদাড়ি ভুমি অফিসে যান। সেখানে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দেয়ার পর সেখানকার অফিস সহায়ক জাহিদুল ইসলাম তার কাছ থেকে ৫ কিস্তিতে ১৫ হাজার ৫শ’ টাকা নেয়। এখনও পর্যন্ত জাহিদুল ইসলাম তার কাজ করে দেয়নি। টাকা ফেরত চাইলে বিভিন্ন টালবাহানা করে থাকে।
আলমডাঙ্গা উপজেলার নাগদহ গ্রামের দক্ষিণ পাড়ার আহসান মল্লিক নামের এক ব্যাক্তির অভিযোগ, জমির নামজারি করিয়ে দেয়ার কথা বলে ৬ মাস আগে জাহিদুল ইসলাম তার কাছ থেকে ৩ হাজার ৫শ’ টাকা নেয়। এখনও তার কাজ হয়নি। টাকাও ফেরত দিচ্ছেন না।
আলমডাঙ্গা উপজেলার ভেদামাড়ি গ্রামের আল্লাদি খাতুনের অভিযোগ, জমির নাম খারিজ করে দেয়ার নামে এক বছর আগে জাহিদুল ইসলাম তার কাছ থেকে ৮ হাজার টাকা নেয়। এখনও পর্যন্ত কাজও করে দেয়নি টাকাও ফেরত দেয়নি। বেশকিছুদিন আগে আমি জাহিদুল ইসলামের বাড়িতে টাকা ফেরত চাইতে গেলে আমাকে বিভিন্ন ভাবে হুমকি ধামকি দেয়া হয়।
এদিকে, খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, অফিস সহায়ক জাহিদুল ইসলাম ঘোলদাড়ি ভুমি অফিসে থাকা অবস্থায় জমির নাম খারিজ করে দেয়ার নামে ওই এলাকার প্রায় ৪০ জনের বেশি ব্যাক্তির কাছ থেকে বহু লক্ষাধীক টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত জাহিদুল ইসলামের সাথে কথা বলতে চুয়াডাঙ্গা পৌর ভুমি অফিসে গেলে তিনি বারবার বলেন, আমার এক ভাই চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে চাকরী করে। যদি কথা বলতে হয় আপনারা তার সাথে আগে কথা বলেন।
তবে, জমির নাম খারিজ করে দেয়ার নামে বিভিন্ন মানুষের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেয়ার বিষয়টি শিকার করেন জাহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, আগামী ১০ দিনের মধ্যে আমি তাদের টাকা ফেরত দিয়ে দিবো।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) মাজহারুল ইসলাম বলেন, আমার অফিসে দুর্নিতীবাজ কোন ব্যাক্তির জায়গা নেই। অভিযোগ প্রমানিত হলে জাহিদুল ইমলামের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার শামীম ভুইয়া বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। জাহিদুল ইসলামের বিরুদ্ধে দ্রুতই পদক্ষেপ নেয়া হবে।
চুয়াডাঙ্গার জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আমিনুল ইসলাম খান বলেন, দুর্নিতীবাজ ব্যাক্তিকে কোন প্রকার ছাড় দেয়া হবে না। আমার কাছে লিখিত অভিযোগ করলে তদন্ত করে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।