October 9, 2024 - 6:28 am
তথ‌্য অ‌ধিদপ্ত‌রের নিবন্ধন নম্বরঃ ৭৭
Homeসারাদেশ ও রাজনীতিসারাদেশসড়ক দুর্ঘটনায় বাবার মৃত্যু অরুপ ও বিশ্বজিতের পড়ালেখা কি বন্ধ হয়ে যাবে

সড়ক দুর্ঘটনায় বাবার মৃত্যু অরুপ ও বিশ্বজিতের পড়ালেখা কি বন্ধ হয়ে যাবে

spot_img

স্টাফ রিপোর্টারঃ সড়ক দূর্ঘটনায় নিহত অনন্ত হলদারের দুই ছেলের লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। দুস্থ অসহায় পরিবারটি আজ চরম অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে। এদের দেখার কেউ নেই।

সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া পৌরসভার এনায়েতপুর আশ্রয়ন প্রকল্পের বাসিন্দা ছিলেন অনন্ত হলদার। তাড়াশের মহিশলুটি থেকে প্রতিদিন মাছ কিনে উল্লাপাড়া পৌর বাজারে এনে বিক্রি করে কোনোমতে দিনপাত করতেন তিনি। তার দুই ছেলে। বড় ছেলে অরুপ এখন উল্লাপাড়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র। ছোট ছেলে বিশ^জিৎ গুচ্ছগ্রাম প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ে। তাদের বাবার অল্প রোজগারেও কোনভাবে লেখাপড়া করতো এই দুই ছেলে। গত ১৬ জানুয়ারি মহিশলুটি থেকে মাছ কিনে বাড়ি ফেরার পথে সড়ক দূর্ঘটনায় মারা যান অনন্ত হলদার। সংসারের একমাত্র উপার্জনকারী অনন্তের মৃত্যুর পর চরম দুর্দশা নেমে আসে তার পরিবারে। স্ত্রী লিপি হলদার পিতৃহারা দুই শিশু সন্তান নিয়ে এখন চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছেন। অর্থাভাবে ছেলেদের পড়ালেখা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে।

লিপি হলদার জানান, তার স্বামীর রোজগারে তাদের সংসার চলতো। তার বাবার পরিবার বা স্বামীর গোষ্ঠীর সবাই দুস্থ। স্বামী বেঁচে থাকতে সরকারের ভূমিহীনদের জন্য দেওয়া একটি বাড়ি পান তারা। এখানেই মাথা গোঁজার ঠাঁই হয়েছে। নিজেদের আর কোনো সহায় সম্পদ নেই। স্বামীর মৃত্যুর পর চরম দুঃখ-দুর্দশা নেমে আসে তাদের পরিবারে। নিরুপায় হয়ে অন্যের বাড়িতে কাজ শুরু করেছিলেন তিনি। কিন্তু বর্তমানে তার বয়স কম (৩১) হওয়ায় নিরাপত্তা বা আত্মসম্মান রক্ষার জন্য শেষ পর্যন্ত সে কাজ করা আর সম্ভব হয়নি। এখন তার গরীব বৃদ্ধ বাবা মাঝে মাঝে ২/৩ শত টাকা করে তাকে দিয়ে থাকেন। এদিয়ে দুই ছেলেকে নিয়ে খেয়ে না খেয়ে দিন কাটাচ্ছেন তিনি। কিন্তু সমস্যা দেখা দিয়েছে দুই ছেলের পড়ালেখা নিয়ে। স্কুলের বেতন, পরীক্ষার ফি, বই খাতা পত্র এগুলোর জন্য অনেক টাকার প্রয়োজন।

লিপি হলদার আরো জানান, আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোজদার হোসেন ও সহকারী শিক্ষক বাঞ্ছারাম সরকার তার ছেলে অরুপকে কিছুটা সহযোগিতা করে থাকেন। কিন্তু তার পরেও পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়ার জন্য অর্থের প্রয়োজন। ছোট ছেলের জন্য খাতা কলম, পোশাক কিনতে টাকার দরকার। কিন্তু এই অর্থের সংস্থান না হওয়ায় এখন দুই ছেলের লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। অরুপকে লেখাপড়া বন্ধ করে ভ্যান চালানোর কথা ভাবছেন তিনি। কিন্তু এত কম বয়সে ওর জন্য খুবই কষ্ট হবে। চোখে এখন অন্ধকার দেখছেন তিনি। তাকে সহযোগিতা করার কোনো লোক নেই। শেষ পর্যন্ত কি লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যাবে তার ছেলেদের এমন কথা বললেন লিপি।

উল্লাপাড়া আদর্শ স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোজদার হোসেন জানান, নিহত অনন্ত হলদারের ছেলে অরুপ ভাল ছাত্র। খুবই ভদ্র ও বিনয়ী। ওকে আমরা সাধ্যমত সাহায্য করছি। তার পরেও তার লেখাপড়া চালিয়ে যেতে অর্থের প্রয়োজন। অরুপের বিধবা মা এখন দুই সন্তানের লেখাপড়া নিয়ে চরম অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়েছেন। ওদের আজ বড় দুুর্দিন।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন
spot_img

সর্বশেষ সংবাদ