October 9, 2024 - 4:25 am
তথ‌্য অ‌ধিদপ্ত‌রের নিবন্ধন নম্বরঃ ৭৭
Homeসারাদেশ ও রাজনীতিসারাদেশরাবি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষ, আহত অন্তত ৮৯

রাবি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষ, আহত অন্তত ৮৯

spot_img

কর্পোরেট সংবাদ ডেস্ক : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষের ঘটনায় আজও থমথমে রয়েছে ক্যম্পাস ও আশেপাশের এলাকা। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে ক্যাম্পাস ও বিনোদপুরসহ আশেপাশের এলাকায় ব্যাপক পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।

রোববার (১২ মার্চ) সকাল পর্যন্ত এই সংঘর্ষের ঘটনায় ৮৯ জন আহত হয়ে হাসপাতালে গেছেন। এদের মধ্যে ৮৬ জনই রাবি শিক্ষার্থী। অন্য তিনজনের মধ্যে দুজন পুলিশ সদস্য এবং একজন সাধারণ মানুষ। আহতদের মধ্যে সাত জনের অবস্থা গুরুতর। এক শিক্ষার্থীর মাথায় গুলি লাগায় তাকে আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়েছে।

গতকাল শনিবার তৈরি হওয়া এই পরিস্থিতি নিয়ে আজ বৈঠকে বসার কথা রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর। হামলার প্রতিবাদে ক্যাম্পাসে আজ বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।

রোববার সকাল সাড়ে ৯টায় রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে জরুরী বিভাগের চিকিৎসক মাহামুদুল হাসান ফিরোজ তিনি জানান, সংঘর্ষ শুরু হলে শনিবার সন্ধ্যা সাতটা থেকেই আহত রোগীরা হাসপাতালে আসতে থাকেন। সারারাতে মোট ৮৭ জন হাসপাতালে আসেন। এছাড়া রাতে আহত আরো দুজন রোববার সকাল ৮টা থেকে ৯টার মধ্যে হাসপাতালে আসেন।

তিনি আরো জানান, বেশিরভাগ রোগীই এসেছেন মাথায় জখম নিয়ে। মোট ৮৯ রোগীর মধ্যে ৪৫ জন হাসপাতালে ভর্তি আছেন। বাকি ৪৪ জন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে চলে গেছেন। যারা ভর্তি আছেন তাদের মধ্যে একজনের অবস্থা একটু বেশি খারাপ।

জানা গেছে, শনিবার সন্ধ্যায় বগুড়া থেকে ‘মোহাম্মদ’ নামের একটি বাসে রাজশাহী আসছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের এক শিক্ষার্থী। বাসে সিটে বসাকে কেন্দ্র করে গাড়িচালক শরিফুল ও তার সহযোগী রিপনের সঙ্গে তার কথা-কাটাকাটি হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে বিনোদপুর বাজারে বাস থেকে নামার সময় তাদের আবারো কথা কাটাকাটি হয়। বাসের ভেতরেই শিক্ষার্থীরা চালক ও হেলপারকে মারছিলেন। পরে বাস থেকে নামিয়েও মারধর করা হচ্ছিলো।

এ সময় বিনোদপুর বাজারের একজন ব্যবসায়ী বাস চালকের পক্ষ নিয়ে কথা বলেন। তখন শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তার হাতাহাতির ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে সেখানে যান বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়া। এ সময় ব্যবসায়ীরা তার মোটরসাইকেলটি ভাঙচুর করে। ধাওয়া দিয়ে তাকে ক্যাম্পাসের ভেতরে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়। এতেই ঘটনা বড় হয়ে যায়। সাধারণ শিক্ষার্থীরা আবসিক হল থেকে বের হয়ে বিনোদপুর গেটের পাশে অবস্থান নেন। আর ব্যবসায়ীরা অবস্থান নেন রাজশাহী-ঢাকা মহাসড়কে বিনোদপুর বাজারে। একপক্ষ আরেকপক্ষকে লক্ষ্য করে অন্ধকারের ভেতর ইট পাটকেল ছুড়তে থাকেন। শত শত শিক্ষার্থীর ভেতর পড়া ইটে অনেক শিক্ষার্থী আহত হন। ভেতর থেকে তাদের পেট্রল বোমা ছুড়তে দেখা যায়। বিনোদপুর বাজারের বেশ কিছু দোকানপাট জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। এপারে ব্যবসায়ীদের মধ্যেও আহত হন অন্তত ১০ জন।

এদিকে পরিস্থিতি সামাল দিতে সন্ধ্যার পরেই ঘটনাস্থলে বিপুলসংখ্যক পুলিশ সদস্য যান। কিন্তু দাঁড়িয়ে থাকা ছাড়া প্রথমে তারা পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার কোনো চেষ্টায় করেনি। পরে আসে র‍্যাবের ১২০ জন সদস্য। এছাড়া পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সাত প্লাটুন সদস্য মোতায়েন করা হয়। পরে রাবার বুলেট ও টিয়ার সেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা হয়। রাত ২টার দিকে পরিস্থিতি কিছুটা শান্ত হয়। তবে ক্যাম্পাস এবং বিনোদপুর বাজারে এখনো থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। বিনোদপুর বাজারে মোতায়েন রয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য। ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীরা আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছেন।

এ সম্পর্কিত আরও পড়ুন
spot_img

সর্বশেষ সংবাদ