মার্চ মাস। আমাদের স্বাধীনতার মাস। চেতনা জাগ্রত হওয়ার মাস। অন্যায় জুলুম আর শোষণের বিরুদ্ধে অমীত সাহসী হওয়ার মাস। স্বাধীনতা একটি জাতির শ্রেষ্ঠ অর্জন। স্বাধীনতা সব জাতির পরম আকাঙ্খা। স্বাধীনতা ছাড়া কেউ আত্মমর্যাদাশীল হতে পারে না। স্বাধীনতা ছাড়া জাতিসত্ত্বার বিকাশ হয় না।
একটি শোষণ বৈষম্যহীন ন্যায়ভিত্তিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠাই ছিল স্বাধীনতার স্বপ্ন। মুক্তিযুদ্ধকালীন অস্থায়ী মুজিবনগর সরকারের ঘোষণাপত্রে বাংলাদেশের যে রাষ্ট্রীয় মূলনীতি ঘোষণা করা হয়েছিল, তা ছিল- “সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার প্রতিষ্ঠা”। এই মূলনীতিকে সামনে রেখেই মুক্তিযুদ্ধ হয়েছে। এই আদর্শগুলোই ছিল মুক্তিযুদ্ধের স্বত:স্ফূর্ত ও বাস্তবসম্মত চেতনা।
স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে এদেশের শাসক শ্রেণি মহান মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ বাস্তবায়নে কতটা সচেষ্টা থেকেছে? সে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। এছাড়াও নাগরিক হিসেবে তাঁদের মৌলিক অধিকার কতটা রক্ষা করা হচ্ছে, তা নিয়ে রয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।
সরকারের বিরুদ্ধে বিতর্কিত গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা, রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে বিরোধীদের দমন, বাক-স্বাধীনতা হরণের দাবি করছে এক পক্ষ, অন্যদিকে বিরোধীদের বিরুদ্ধে সরকারের অভিযোগের তালিকায় নেহায়েত কম নয়। ফলে দেশের উন্নতি ও অগ্রগতির ধারা অনেক ক্ষেত্রেই বাধাগ্রস্ত হয়েছে।
জাতি হিসেবে আমাদের রয়েছে গৌরবজ্জ্বল ইতিহাস। স্বাধীনতা পূর্ব এবং পরবর্তী প্রতিটি গণতান্ত্রিক ও ন্যায় সঙ্গত আন্দোলনে রয়েছে চেতনাদ্বীপ্ত ভূমিকা। অথচ বর্তমানে মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধাদের দলীয় বৃত্তের আবরণ দিয়ে জাতির মাঝে বিভাজন তৈরির ফলে হয়তো জনগণ অর্থবহ স্বাধীনতার সুফল ভোগ করতে পারছে না। স্পর্ষকাতর বিষয়টির দিকে দেশ পরিচালনাকারী তথা বিজ্ঞ রাজনীতিবিদদের বিশেষভাবে নজর দেয়া আবশ্যক।